দেশকন্ঠ অনলাইন : গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের পাঁচটি কারখানার ৩ হাজার ৬২০ জন শ্রমিক এবং ১২০ জন স্টাফ নির্ধারিত সময়ের আগেই বকেয়া এক মাসের বকেয়া বেতন পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেয়া হয়।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মোগরখাল এলাকায় ৫টি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডে শ্রমিকের সংখ্যা ২ হাজার ৮০০ জন, বেসিক ক্লথিং লিমিটেডে ৪২০ জন, অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডে ৪০০ জন শ্রমিক রয়েছে। এছাড়া এক্সপো কার্টুনে ৪০ জন এবং এমএনএস ইয়ার্ন ডায়িংয়ে ৮০ জন স্টাফ রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম তিনটিতে শ্রমিকদের অক্টোবর ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতন বকেয়া ছিল। আর শেষের দুটিতে স্টাফদের বেতন ও সার্ভিস বেনিফিট বকেয়া ছিল। গত ৯ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানার প্রায় ২ হাজার শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মালেকের বাড়ি মোঘরখাল এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলন চলে টানা তিন দিন।
পরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান ঘোষণা দেন, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের দায়িত্ব সরকারের। সরকার শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করবে। পরে মন্ত্রণালয়ে শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার ও মালিকপক্ষের বৈঠক হয়। গত সোমবার রাতে শ্রম ভবনে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের ৩১ জন শ্রমিক প্রতিনিধি, বিজিএমইএর নেতারা এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সর্বসম্মতিক্রমে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সমঝোতায় বলা হয়, ১৭ নভেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের এবং ৩০ নভেম্বর ও অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। কারখানাগুলো কর্তৃপক্ষ দ্রুত খুলে দেবে। এ ছাড়া ৩০ নভেম্বরের আগে কেউ যদি আবার সড়ক অবরোধ করেন তাহলে টাকা পরিশোধ করা হবে না। পরে শ্রমিকেরা অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলে সোমবার রাত ১০টার পর থেকে ওই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক বলেন, আমরা সরকারের সহায়তায় প্রথম দফায় নির্ধারিত সময়ের আগেই বৃহস্পতিবার ৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেছি। এ টাকা শ্রমিকেরা কোনো কাজ না করেই পেয়েছেন। আগামী কিস্তিতে যে টাকা দেব সেটিও তারা কোনো কাজ না করেই পাবেন।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছি। ব্যাংকে সুদ বাবদ সোয়াশ কোটি টাকার বেশি পরিশোধ করেছি। আমরা কোনো খেলাপি প্রতিষ্ঠান নই। রপ্তানির টাকা সমন্বয় হতে দেরি হওয়ায় আমাদের ওভারডিউ হয়েছে। এ কারণে ব্যাংক থেকে ৮ কোটি টাকার একটি লোন অনুমোদন করানো হয়, যাতে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া যায়। কিন্তু ব্যাংক আমাদের সে টাকাটা দেয়নি। এ কারণে আমরা ঝামেলায় পড়ে গেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, শনিবার থেকে কারখানাগুলো পুনরায় চালু হবে। এদিন শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন এবং কারখানার উৎপাদনে অংশ নিয়ে মালিকপক্ষের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহযোগিতা করবেন বলে আশা করছি।
দেশকন্ঠ/এআর