• বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১২:২৬    ঢাকা সময়: ২২:২৬
মাজার ভাঙার প্রতিবাদ

চট্টগ্রামে ঈদে মিলাদুন্নবী’র জনস্রোত

দেশকণ্ঠ অনলাইন : পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুছ বা ধর্মীয় শোভাযাত্রায় জনস্রোতরাত নেমেছে। লাখো মানুষের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণভাবে শোভাযাত্রা নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর, নারায়ে রেসালত, ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা.) সহ নানা স্লোগানে প্রকম্পিত হয় আকাশ-বাতাস। অংশগ্রহণকারী সবার মুখে মুখে উচ্চারিত হয়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে কামেল পীর-বুজুর্গ ও আউলিয়াদের পবিত্র মাজার ভাঙার তীব্র প্রতিবাদ। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানান তারা।
 
আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় এবারের শোভাযাত্রার ৫২তম আয়োজন। সংগঠনটির দাবি, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়োজন এই শোভাযাত্রা বা জশনে জুলছ। এতে নেতৃত্ব দেন পীর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবের শাহ্। অতিথি ছিলেন শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্।
 
১৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর আলমগীর খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রাটি। হামদ, নাত, দরুদ পড়তে পড়তে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এরপর শোভাযাত্রা দুপুরে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা সংলগ্ন মাঠে গিয়ে জমায়েত হয়। সকাল থেকে সেখানে আলেমরা বক্তব্য দেন। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নিয়ে আলোচনা শেষে মাঠেই জোহরের নামাজ আদায় করা হয়। এরপর মিলাদ ও দোয়া করা হয়। সবশেষে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবের শাহ। মোনাজাতে তিনি দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
 
এর আগে ফজরের নামাজের পর বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক, জিপে করে আসা শুরু করেন ভক্তরা। সুন্নিয়া মাদরাসা, বিবিরহাট, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড় এলাকা লোকে লোকারণ্যে পরিণত হয়। চট্টগ্রামে জশনে জুলুছ ৫০ বছর আগে ১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জশনে জুলুছ মিডিয়া কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার।
 
তিনি বলেন, ‘দরবারে কাদেরিয়া আলিয়া সিরিকোট শরীফের (পাকিস্তান) তৎকালীন সাজ্জাদানশীন, আধ্যাত্মিক সাধক, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) এ জশনে জুলুছের প্রবর্তন করেন।' এবারের জুলুছে অর্ধকোটি মানুষ অংশ নিয়েছেন উল্লেখ করে আইনজীবী বখতিয়ার বলেন, ‘জুলুছের মধ্য দিয়ে সবার কাছে শান্তির বার্তা বয়ে দেওয়া হয়। আমরা জঙ্গিবাদবিরোধী, আমরা শান্তি-সমৃদ্ধির পক্ষের মানুষ। আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষ।’ আয়োজক সংগঠন আনজুমানের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘চট্টগ্রামের এই জুলুছ বিশ্বের সবচেয়ে বড় শোভাযাত্রা। আমরা বিশ্বাস করি এটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করবে। আমাদের স্বীকৃতি দিতেই হবে।’
 
এদিকে সম্প্রতি হঠাৎ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে কামেল পীর-বুজুর্গ ও আউলিয়াদের মাজার ভাঙার অপসংস্কৃতি শুরু হয়েছে উল্লেখ করে জুলুছে আগত ভক্তরা বলেন, ঘোষণা দিয়ে মাজার ভাঙার অপচেষ্টা চলছে। আমরা আশাকরি সরকার তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। নইলে এদেশের কোটি কেটি সুন্নি জনতা দুর্বৃত্তদের রেহাই দেবে না। জানা গেছে, আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের (এএসএফ) ৩০০ প্রশিক্ষিত সদস্য এবার শোভাযাত্রার নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেন। এর বাইরে গাউসিয়া কমিটির কর্মী ও জামেয়ার হাজার হাজার ছাত্র স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, শোভাযাত্রায় এক হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও সক্রিয় সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছেন।
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।