দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : আম আদমি পার্টি (আপ) এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কাউন্সিলরদের তাণ্ডবে ভেস্তে গেল দিল্লি পৌরসভার মেয়র নির্বাচন। এখন এ নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) ভারতের দিল্লি পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরে এ ঘটনাটি ঘটে। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। দিল্লির সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে জানা গেছে, ভোটাভুটির আগেই হাতাহাতি-মারপিটে জড়িয়ে পড়েন নবনিযুক্ত আপ এবং বিজেপি কাউন্সিলাররা। তার জেরেই কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নয়াদিল্লির ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সিভিক সেন্টার (এমসিডি সিভিক সেন্টার)। এছাড়াও প্রিসাইডিং অফিসারের টেবিলে উঠে নাচ, মাইক্রোফোন ভেঙে ফেলাসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে একে অপরকে আক্রমণের মতো গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর থেকেই একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছে আপ এবং বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনাকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
দিল্লি পৌরসভায় বিজেপির ১৫ বছরের দাপট ভেঙেছে কেজরিওয়ালের দল। বিজেপির প্রার্থী করা হয় দলের শালিমার বাগের কাউন্সিলার রেখা গুপ্তাকে। এদিকে আপের পক্ষ থেকে মেয়র পদে প্রার্থী করা হয়েছিল ইস্ট প্যাটেল নগর থেকে দলের প্রথমবারের কাউন্সিলার শেলি ওবেরয়কে। কথা ছিল, এদিন এমসিডি সিভিক সেন্টারে প্রথমে দুই দলের নবনির্বাচিত কাউন্সিলাররা শপথ নেবেন। কিন্তু তার আগেই শুরু হয়ে যায় গণ্ডগোল। নিয়ম অনুযায়ী, দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ১০ জনকে পৌরসভার ‘অ্যালডারম্যান’ হিসেবে মনোনীত করতে পারেন। তারা পৌরসভার অংশ, কিন্তু ভোটাধিকার নেই। সেই মনোনীত সদস্যদের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মাসখানেক ধরে সংঘাতের আবহ তৈরি হচ্ছিল। লেফটেন্যান্ট গভর্নরের বিবাদে জড়িয়েছিল আপ। সামগ্রিকভাবে তা নিয়ে এদিন প্রবল উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এমসিডি সিভিক সেন্টারে।
মেয়র নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার সত্য শর্মা হাতজোড় করে দুই পক্ষকেই শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। বিক্ষোভরত কাউন্সিলর এবং দলীয় কর্মীদের উত্তেজনা চলে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। পরে প্রিসাইডিং অফিসার জানান, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সময়মতোই শপথগ্রহণ এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া করানো যেত। কিন্তু বিক্ষোভরতরা ডেস্কের ওপর উঠে হট্টগোল করতে থাকায় আর তা সম্ভব হয়নি।’ এদিকে, ঘটনার জেরে সংবাদ সম্মেলন করে বিজেপি। দলের এমপি মীনাক্ষি লেখি, মনোজ তিওয়ারি, প্রবেশ ভার্মারা ‘আহত’ কাউন্সিলারদের হাজির করিয়ে দাবি করেন, ‘আপের পৌর প্রতিনিধিরা সিভিক সেন্টারের মধ্যেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করেছে।’ অন্যদিকে, নিজের ব্যান্ডেজ বাঁধা হাত দেখিয়ে আপ বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, ‘দিল্লি পৌরসভায় আপ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। নিয়ম মতো মেয়র, ডেপুটি মেয়র এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানের পদ আমাদেরই পাওয়ার কথা। বিজেপি সেটা মানতে পারছে না। তাই হামলা চালিয়েছে।’ এ অবস্থায় দিল্লির উপ-রাজ্যপালই স্থির করবেন, পৌরসভার পরবর্তী মেয়র নির্বাচন ঠিক কবে হবে।
দেশকন্ঠ/অআ