দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : চালের বাজার বর্তমানে স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাই তো পৌষের তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে প্রতিদিনই গোপালগঞ্জে দারিদ্র, অসহায় ও নিম্নবিত্ত মানুষেরা সরকারের ভর্তুকি মূল্যে ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) এর চাল এবং আটা নিতে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও তাদের ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত ডিলার না থাকায় সরকারের ওএমএস এর চাল, আটা না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয় অনেকেই। সরকারের এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেক দারিদ্র অসহায় পরিবার। ডিলাররা বলছে, চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ ও প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক ডিলার না থাকায় খালি হাতে ফিরে যেতে হয়। জানা গেছে, গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের আটান্ন হাজার ভোটারের জন্য সরকারের ভর্তুকি মূল্যে ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) ডিলারের দোকান রয়েছে ১২টি।প্রতিটি ডিলার প্রতিদিন ৫০০ কেজি চাল ও আটা সুবিধাভোগীর মাঝে মাথাপিছু সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও ২৪ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি করে থাকেন। স্বল্পমূল্যে ওএমএস এর চাল-আটা কিনতে ভোর থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রায় দেড়শ থেকে দুইশ জন। কিন্তু এ চাল ও আটা পান মাত্র একশ জন। প্রায় অর্ধেকেরও বেশি মানুষকে ফিরতে হয় খালি হাতে। অপেক্ষা করতে হয় পরেরদিনের। পৌরসভার ১২, ১৩, ১৪, ১৫ নং ওয়ার্ডে একটি মাত্র ডিলার থাকায় এই সুবিধা থেকে বেশি বঞ্চিত হচ্ছে চারটি ওয়ার্ডের স্বল্প আয়ের মানুষেরা। প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক ডিলার নিয়োগসহ সঠিকভাবে তদারকির মাধ্যমে ওএমএস এর চাল ও আটা বিক্রির দাবি জানিয়েছে খেটে খাওয়া স্বল্প আয়ের মানুষেরা।
রোববার ভোরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে কম দামে ওএমএস এর আটা, চাল কিনতে ডিলারদের দোকানের সামনে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন। নানা বয়সী নারী-পুরুষ কম দামে ওএমএস এর চাল ও আটা কিনতে এসেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অনেক বৃদ্ধা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। অনেকে আশা ছেড়ে দিয়ে খালি হাতেই বাড়ি ফিরছেন। চাল কিনতে আসা রহিমা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত চারদিন ধরে লাইনে দাঁড়ায়ে একদিনও চাল পেলাম না। বাসায় ছোট বাচ্চাকে রেখে আসি। খালি হাতেই ফিরতে হয় বাসায়। কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের একটাই দাবি সবাই যাতে চাল, আটা পাই। আটা কিনতে আসা রহিম শেখ বলেন, মাসে দুবার দেয় তাও কোনো মাসে পাই কোনো মাসে পাই না। কারণ লাইন অনেক বড় ফজরের নামাজ শেষে এলেও দেখা যায় অনেক বড় লাইন হয়ে গেছে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি পৌরসভার সব কয়টি ওয়ার্ডে যেন একাধিক ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহাবুবুল আলম বলেন, ওয়ার্ড সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগণের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার জনগনকে নানান সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে এটা তারই একটা অংশ। চাহিদা অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে আরও ডিলারের প্রয়োজন আছে কিনা তা আমরা ক্ষতিয়ে দেখে খাদ্য মন্ত্রনালয়ে নতুন ডিলারের জন্য সুপারিশ করব। বর্তমানে জনগণের যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে সে পরিমাণ চাহিদা মেটাতে না পারায় খালি হাতে মানুষকে ফিরে যেতে হচ্ছে। কেউ যাতে খালি হাতে ফিরে না যায় সেটা আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।
দেশকন্ঠ/অআ