দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : পশ্চিম বলকান অঞ্চলের দেশ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার জঙ্গল দিয়ে ইউরোপযাত্রার চেষ্টায় দেশটিতে আটকে পড়া অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশিরাও। এসব বাংলাদেশিকে ফেরাতে ঢাকার সহযোগিতা চেয়েছে দেশটি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশী এসব বাংলাদেশিদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল দেশটিতে সফরে যাচ্ছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কূটনৈতিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ উইংয়ের মহাপরিচালক সিকদার বদিরুজ্জামানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাতে দেশটিতে সফরে যাচ্ছেন। চারদিনের সফরে তারা দেশটিতে থাকা অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশিদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করবেন। বাংলাদেশিদের শনাক্ত করার পর তাদের দেশে ফিরতে উৎসাহিত করবেন প্রতিনিধিদল।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ২০২০ সালে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার জঙ্গল দিয়ে বাংলাদেশিদের ইউরোপযাত্রার খবর আলোচনায় আসে। এরপরও দেশটি হয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টার খবর এসেছে গণমাধ্যমে। দেশটি হয়ে ইউরোপযাত্রায় ব্যর্থ হয়ে কিছু বাংলাদেশি সেখানে আটকা পড়ে যায়। এদের দেশে ফিরেয়ে আনতে ঢাকার সঙ্গে অব্যাহতভাবে যোগাযোগ করে যাচ্ছে দেশটি। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম ২০২১ সালের অক্টোবরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বসনিয়া সফর করে। ইউরোপযাত্রায় বসনিয়ায় আটকা পড়া বাংলাদেশিদের ফেরাতে গত বছরের (২০২২) নভেম্বরে বসনিয়ার নিরাপত্তামন্ত্রী সেলমো সিকোটিচ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি বিষয়টি সমাধানে ঢাকাকে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফায় দেশটিতে অবৈধভাবে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করতে একটি প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের পর যারা বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চাইবে তাদের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম)-এর সহযোগিতা নিয়ে দেশে ফেরত আনা হবে। বসনিয়া পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশটিতে পাঁচশ’র বেশি বাংলাদেশি অবৈধভাবে অবস্থান করছে। তবে এ সংখ্যাটা আরও কম হবে বলে ধারণা করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বাংলাদেশিদের ফেরত আনাটা বেশ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন এক কূটনীতিক। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে তিনি বলেন, আমরা নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন চাই। অবৈধ অভিবাসীদের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের শ্রমবাজার নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতে হয়। এর আগেও বসনিয়া থেকে কিছু বাংলাদেশিকে শনাক্ত করা হয়। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও করা হয়েছে। কিন্তু এদের অনেকে পালিয়ে যায়, যার কারণে ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
দেশকন্ঠ/অআ