দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় শ্রেণি কক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে ব্র্যাকের নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলা সদরের কাছারীপাড়া সুফলা সতীশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, এনজিও ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচির শিক্ষক নিয়োগের জন্য উপজেলা সদরের কাছারীপাড়া সুফলা সতীশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সোহাগী বেগমকে ম্যানেজ করে এ পরীক্ষার আয়োজন করে ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচি। শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও ব্র্যাকের বিরুদ্ধে বিস্তার অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের। চাকরিপ্রত্যাশীরা আবেদন করেও অনেককেই প্রথম দিকে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়নি ব্র্যাকের কর্মীরা। যাদের কাছে ঘুষ পেয়েছেন শুধুমাত্র তাদের পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দেন বলে পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ। এতে বাকিরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে পুরো বিদ্যালয়ের পড়ালেখার পরিবেশ নষ্ট হয়।
বিক্ষোভের মুখে সকলের পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয় ব্র্যাক। ফলে পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমনে এক ঘণ্টা বিলম্ব হয় তাদের। বুধবার সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয়েছে ১১টায় আর শেষ করে ১২টায়। পরীক্ষা চলাকালীন বিদ্যালয়টির শিশু শ্রেণি ও প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে নেওয়া হয় ব্র্যাকের নিয়োগ পরীক্ষা। এতে শিক্ষার্থীদের মনোবল নষ্টের পাশাপাশি পাঠদান থেকে বঞ্চিত হয় শিশুরা। অভিভাবকদের অভিযোগে সরেজমিনে গেলে সাংবাদিক দেখে তড়িঘড়ি করে পরীক্ষার খাতা নিয়ে দ্রুত বিদ্যালয় থেকে সরে পড়েন ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির (ব্রিজ) উপজেলা ব্যবস্থাপক রাজেকা বেগম। তবে শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের কাছে অনুমতি নিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি নন বলে দ্রুত পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ছটকে পড়েন ব্র্যাকের কর্মীরা।
কাছারীপাড়া সুফলা সতীশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সোহাগী বেগম বলেন, ব্র্যাক একটি রুম এক ঘণ্টার জন্য ব্যবহার করতে চেয়েছিল। কিন্তু পরে তাদের হট্টগোলের কারণে দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। পরে তারা আমাকে না জানিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে বের করে দিয়ে আরও একটি রুম জোর করে ব্যবহার করেছেন। শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে এনজিও'র নিয়োগ পরীক্ষার সুযোগ দিতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেও স্বীকার করেন তিনি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনএম শরীফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় অভিভাবকদের খবরে সেখানে দুইজন সহকারী শিক্ষা অফিসার পাঠিয়ে সত্যতা পেয়েছি। পাঠদান বাদ দিয়ে এনজিও'র নিয়োগ পরীক্ষা বিদ্যালয়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিধিমত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি আর সারোয়ার বলেন, বিনা অনুমতিতে পাঠদান বন্ধ করে এনজিও'র নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ব্র্যাকের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টিও আমাদের জানানো হয়নি। তাৎক্ষণিক তদন্তে সত্যতা মিলেছে বিধিমত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশকন্ঠ/অআ