দেশকন্ঠ ডেস্ক : সম্প্রতি বাগদান পর্ব সারলেন ভারতের অন্যতম ধনী মুকেশ আম্বানীর পুত্র অনন্ত আম্বানী। রাধিকা মার্চেন্টের সঙ্গে অনন্তের বিয়ের তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। কিন্তু ভাইয়ের বাগদান পর্বের রেশ কাটতে না কাটতেই আলোচনায় মুকেশ কন্যা ঈশা। ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর, বাল্যবন্ধু-ব্যবসায়ী আনন্দ পিরামলের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন ঈশা। তার বিয়ের সাজে ছিল একের পর এক চমক। ঈশা তার বিয়ে উপলক্ষে যে লেহেঙ্গাটি পরেছিলেন, তার মূল্য ৯০ কোটি ভারতীয় রুপি।
পোশাকশিল্পী আবু জানি ও সন্দীপ খোসলা ঘিয়ে রঙের লেহেঙ্গাটি বিশেষভাবে বানিয়েছিলেন। দাম শোনার পর অনেকেই বিস্মিত হয়ে পড়েছিলেন। কেউ কেউ মজা করে বলেছিলেন, ‘এই লেহেঙ্গাটি হীরা আর প্ল্যাটিনাম দিয়ে বানানো নাকি?’ কিন্তু লেহেঙ্গাটির বিশেষত্ব জানার জন্য মুখিয়ে ছিলেন অনেকেই।
জারদৌসি পাড়ের কারুকাজ করা ওই লেহেঙ্গাটির ওপর ছিল মুকাইশ ও নকশির ঐতিহ্য। সঙ্গে ছিল দু’রকম দোপাট্টা। সিকুইনের কাজ করা একটি ঘন, গাঢ় লাল রঙের ও অন্যটি লেহেঙ্গার সঙ্গে মানানসই ঘিয়ে রঙের। তবে লেহেঙ্গার বিশেষ আকর্ষণ ছিল তার ওড়নায়।
ঈশার মা নীতা আম্বানি তার বিয়ের সময় যে শাড়িটি পরেছিলেন, তা দিয়েই বানানো হয়েছিল লেহেঙ্গার ওড়নাটি। ৩৫ বছরের পুরনো ওই ওড়নায় জড়িয়েছিল মুকেশ-নীতার প্রেমকাহিনী। এই লেহেঙ্গা পরে বলিপাড়ার তাবড় তাবড় তারকাদেরকেও তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন ঈশা।
তবে বলিউডের কোনো অভিনেত্রী এখন পর্যন্ত কোটি টাকা মূল্যের লেহেঙ্গা পরে বিয়ের পিঁড়িতে না বসলেও তাদের বিয়ের পোশাক কম নজরকাড়া ছিল না। ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন থেকে বিপাশা বসু, দিয়া মির্জার মতো নায়িকারা বিয়ের পোশাক হিসাবে কখনো শাড়ি আবার কখনো লেহেঙ্গাকে বেছে নিয়েছেন।
হেমা মালিনীর কন্যা এষা দেওল ২০১২ সালে বিয়ে করেছিলেন। তার পরনে ছিল লালরঙা কাঞ্জিভরম শাড়ি। হীরা ও সোনার গয়নায় তাকে মানিয়েছিল বেশ। এষা বিয়ে উপলক্ষে যে শাড়িটি পরেছিলেন, তার দাম ছিল ৩ লাখ ভারতীয় রুপি। পোশাকশিল্পী নীতা লুল্লা এই শাড়িটি বানিয়েছিলেন।
বলি অভিনেত্রী দিয়া মির্জা অবশ্য তার বিয়ে উপলক্ষে লেহেঙ্গা বা শাড়ি বেছে নেননি। তার পরনে ছিল সবুজ ও সোনালি বেইজ রঙের কুর্তি আর ফারসি পাজামা। এই পোশাকে এমব্রয়ডারির মাধ্যমে হায়দরাবাদি ঐতিহ্যও ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। দিয়ার বিয়ের পোশাকের মূল্য ছিল ৩ লাখ ভারতীয় রুপি। পোশাকশিল্পী রীতু কুমার এটি তৈরির দায়িত্বে ছিলেন।
২০১৬ সালে করণ সিং গ্রোভারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন বিপাশা বসু। বিয়ের দিন অভিনেত্রীর পরনে ছিল লাল ও সোনালি রঙের শাড়ি। বিপাশার বিয়ের পোশাকের দায়িত্বে ছিলেন পোশাকশিল্পী সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। শাড়িটির দাম ৪ লাখ ভারতীয় রুপি। শাড়ির সঙ্গে মানানসই কুন্দনের গয়না পরতেও দেখা গিয়েছিল বিপাশাকে।
ঊর্মিলা মাতণ্ডকর তার বিয়ে উপলক্ষে একটি লালরঙা শাড়ি-লেহেঙ্গা পরেছিলেন। পোশাকশিল্পী মণীশ মালহোত্রা এ লেহেঙ্গা বানিয়েছিলেন। সাড়ে ৪ লাখ ভারতীয় রুপি দিয়ে ঊর্মিলা বিয়ের শাড়ি-লেহেঙ্গাটি কিনেছিলেন। অভিনেত্রীর হাতে ছিল সবুজরঙা কাচের চুড়ি। কুন্দনের সোনার গয়না যেন ঊর্মিলার সৌন্দর্য আরও বেশি ফুটিয়ে তুলেছিল।বলিপাড়ার তারকা জুটিদের মধ্যে জনপ্রিয় রীতেশ দেশমুখ ও জেনেলিয়া ডি সুজা। ২০১২ সালে বিয়ে করেন তারা। খ্রিস্টান ও মহারাষ্ট্রীয় প্রথা মেনে দু’বার বিয়ে করেন রীতেশ-জেনেলিয়া।
মহারাষ্ট্রীয় মতে যে দিন বিয়ে হয়, সে দিন পোশাক হিসাবে শাড়িকেই বেছে নিয়েছিলেন জেনেলিয়া। লালরঙা শাড়ির জমিতে সোনালি কুন্দনের কাজ করা ছিল। পোশাকশিল্পী নীতা লুল্লা এই শাড়িটি বানিয়েছিলেন। ১৭ লাখ ভারতীয় রুপি খরচ করে তার বিয়ের পোশাকটি কিনেছিলেন জেনেলিয়া।
ইতালিতে পরিবার, ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-পরিজন ও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন বিরাট কোহলী ও আনুশকা শর্মা। হালকা গোলাপি রঙের লেহেঙ্গার সঙ্গে গলায় একটি চোকার পরেছিলেন অনুষ্কা। আনুশকার বিয়ের পোশাকশিল্পী ছিলেন সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। লেহেঙ্গা থেকে শুরু করে গলার চোকারটি পর্যন্ত সব্যসাচীর নির্বাচন। এই লেহেঙ্গাটি কিনতে ৩০ লাখ ভারতীয় রুপি খরচ হয়েছিল।
বলিউড তারকা ও পতৌদি রাজপ্রাসাদের নবাব সাইফ আলি খানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন কারিনা কাপুর। কারিনার হবু শাশুড়ি শর্মিলা ঠাকুর তার বিয়ের সময় যে লেহেঙ্গাটি পরেছিলেন, সেই লেহেঙ্গা অনুসরণেই করিনার বিয়ের পোশাক তৈরি করেছিলেন পোশাকশিল্পী রীতু কুমার।
রিসেপশনের রাতে বার্গন্ডি রঙের একটি লেহেঙ্গা পরতে দেখা গিয়েছিল কারিনাকে। লেহেঙ্গার সঙ্গে মেরুন রঙের দোপাট্টাও নিয়েছিলেন তিনি। পোশাকশিল্পী মণীশ মালহোত্রা এই লেহেঙ্গাটি বানিয়েছিলেন। ৫০ লাখ ভারতীয় রুপি খরচ করে লেহেঙ্গাটি কিনেছিলেন কারিনা।
বিয়ের পোশাক হিসাবে লেহেঙ্গার পরিবর্তে শাড়ি বেছে নিয়েছিলেন শিল্পা শেট্টি। ২০০৯ সালে রাজ কুন্দ্রাকে বিয়ে করেছিলেন অভিনেত্রী। বিয়ে উপলক্ষে একটি লালরঙা শাড়ি পরেছিলেন তিনি। শাড়ির সঙ্গে হীরা-পান্নার কাজ করা কুন্দনের গয়না পরেছিলেন শিল্পা। পোশাকশিল্পী তরুণ তাহিলিয়ানি বিয়ের শাড়িটি বানিয়েছিলেন। ৫০ লাখ ভারতীয় রুপি খরচ করে এই শাড়িটি কিনেছিলেন।
২০০৭ সালের ২০ এপ্রিল অমিতাভ বচ্চনের পুত্র অভিষেক ও ঐশ্বরিয়া রাই গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন। বিয়ে উপলক্ষে একটি হলুদ ও সোনালি রঙের কাঞ্জিভরম শাড়ি বেছে নিয়েছিলেন ঐশ্বর্যা। সোনালি সুতোয় কাজ করা শাড়িতে ঐশ্বরিয়াকে বেশ মানিয়েছিল সে দিন। শাড়ির সঙ্গে ২২ ক্যারাট সোনার গয়নায় নিজেকে সাজিয়েছিলেন অভিনেত্রী। চুলে ছিল ফুলের সাজও। ঐশ্বরিয়া বিয়ে উপলক্ষে যে কাঞ্জিভরম শাড়িটি পরেছিলেন, তার মূল্য ছিল ৫০ লাখ ভারতীয় রুপি। পোশাকশিল্পী নীতা লুল্লা এই শাড়িটি বানিয়েছিলেন।
দেশকন্ঠ/এআর