দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : চোখের দুই পাতার মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসছে কাচের টুকরো। কান্নার সময়ও পানির পরিবর্তে দেখা মিলছে কাচের টুকরোর। এক কথায় চোখের পানি বদলে গেছে যেন কাচের দানা বা স্ফটিকে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই এক আশ্চর্যজনক ঘটনা। খবরে বলা হয়, আর্মেনিয়ার ছোট্ট গ্রাম স্প্যান্ডারিয়ানের বাসিন্দা স্যাটেনিক কাজারিয়ান নামের এক তরুণী। ওই তরুণীর দাবি, তিনি স্ফটিককান্নার অধিকারী। কাঁদলেই তাঁর চোখ থেকে স্ফটিকস্বচ্ছ কাচের টুকরো ঝরে পড়ে। কয়েক বছর আগে স্ফটিককান্নার ছবি এবং ভিডিও দেখিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন আর্মেনিয়ান এই তরুণী। সেখানে দেখা গিয়েছিল, তিনি এক বার করে চোখের পাতা ফেলছেন, আর চোখের নীচের অংশ থেকে একটি করে কাচের টুকরো বেরিয়ে আসছে। এই কাচের টুকরোর উৎস কী, তা ভেবে পাচ্ছিলেন না চিকিৎসকেরা।
তরুণীর দাবি ছিল, দিনে প্রায় ৫০টি করে কাচের টুকরো তার চোখ থেকে বেরিয়ে আসে। এই স্ফটিককান্নার প্রক্রিয়া অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তাই তা থেকে মুক্তির আশায় চিকিৎসকদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেরিয়েছেন। তবে সমস্যার সুরাহা হয়নি। চিকিৎসকদের কাছে তরুণী জানান, তার পাঁচ বছরের ছেলে এক দিন খেলতে খেলতে ঘরে রাখা কাচের ফুলদানি ভেঙে ফেলেছিল। তখন তার চোখে কিছু কাচের টুকরো ঢুকে গিয়েছিল। তারপর থেকেই নাকি কাঁদলে তরুণীর চোখ থেকে কাচ বেরিয়ে আসে। তবে চিকিৎসকদের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে চোখে কাচ ঢুকিয়ে এই রোগের নাটক করেন তরুণী। মুন্চৌসেন সিন্ড্রোমের আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত নিজের শরীরে আঘাত করে ভুয়া রোগের অভিনয় করে পরিজনদের বিব্রত করে থাকেন। এভাবে রোগী মূলত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান।
তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে সিসটিনোসিস নামের এক রোগের উল্লেখ আছে, স্বীকার করে নিয়েছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ। সেই বিরল জিনগত রোগের লক্ষণ অনুযায়ী, চোখের ভিতর স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়ায় স্ফটিক তৈরি সম্ভব। তবে সেই স্ফটিকের আকার হয় অনেক ছোট এবং তা বেরিয়ে আসার সময় চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ইভান স্কোয়াবের মতে, কখনও কখনও শরীরে উপযুক্ত পুষ্টিগুণের অভাবে চোখের জল স্ফটিকের আকার নিতে পারে। তবে আর্মেনিয়ান তরুণীর ক্ষেত্রে তেমন কিছু হয়নি বলে এক প্রকার নিশ্চিত তিনি। রাশিয়ার চক্ষু বিশারদ তাতিয়ানা শিলোভা জানিয়েছেন, চোখে অত্যধিক লবণের সমারোহে প্রথমে হৃদ্পিণ্ড এবং পরে মস্তিষ্কের সমস্যা দেখা দেওয়ার কথা। কিন্তু তরুণীর ক্ষেত্রে তা হয়নি।
দেশকন্ঠ/অআ