• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০১:৪৫    ঢাকা সময়: ১১:৪৫

অগণিত মানুষের শ্রদ্ধায় সিক্ত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

দেশকন্ঠ প্রতিবেদক : আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। এ উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে নানা সংগঠনসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। রোববার সকাল সাড়ে ৬টার পর সর্বসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধ এলাকা উন্মুক্ত করে দেয়ার পরেই এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন নানান শ্রেণি-পেশা ও বয়সের  মানুষ। এর আগে সকাল ৫টা ৫৬ মিনিটে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এক মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে নীরবতা পালন করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। পাশে বেজে ওঠে বিউগলের করুণ সুর। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অফ অনার দেয় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল। এ সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান ও ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা উপস্থিত ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় তার পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খানসহ আরও অনেকে।এদিকে ভিআইপি যাতায়াতের কারণে ভোর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সকাল সোয়া ৬টায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধ ত্যাগ করার পর মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়া হয় এবং সকলের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে প্রবেশ করেন স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে। রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, সমাজকর্মী, সরকারি-বেসরকারি চাকুরে, শিল্পী-বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, সর্বোপরি সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধার পুষ্পাঞ্জলিতে ঢেকে যায় সৌধের শহিদ বেদি।

দিনটি উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ চত্তর নানা সাজে সাজানো হয়েছে। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রতিটি ইট ঘষে-মেজে ব্যবহার করা হয়েছে খয়েরি ও সাদা রং। আর আলোকসজ্জা করা হয়েছে সৌধ চত্বর এলাকায়। পানি পাল্টিয়ে নতুন করে পানি দিয়ে ভরে ফেলা হয়েছে কৃত্রিম হৃদটি। এলাকার আকর্ষণ বাড়াতে প্রস্তুত রাখা হয় পানির ফোয়ারাটিও।ভোর থেকে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ জুড়ে দেশাত্ববোধক গানের সুর বাজতে থাকে।

শরিফ হোসেন নামে এক বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা এসেছেন তার প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে সন্তান আফনানকে নিয়ে। তিনি বলেন, ছেলেকে নিয়ে এই প্রথমবার স্মৃতিসৌধে এসেছি মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে। প্রথমবার স্মৃতিসৌধে এসে আমার ছেলের মনে অনেক প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি এবং তাকে ঘুরে ঘুরে পুরো স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ দেখাচ্ছি।

শ্রদ্ধা জানাতে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধা সফের আলী বলেন, আমি স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি। আমাদের যে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে তা সর্বোচ্চ। আমরা আত্মমর্যাদাশীল যেই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম আজ সেটি অনেকাংশেই পূর্ণ। আজ আমার শহীদ ভাইদের যেভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হচ্ছে তা দেখে আমার মন আনন্দে ভরে গেছে। আমি বেঁচে আছি তাই উপলব্ধি করতে পারছি।

তিনি আরও বলেন, যারা জীবন দিয়েছেন তাদের হয়ে আমি জাতির কাছে যেন সর্বোচ্চটা পেয়েছি। এই শ্রদ্ধা, এই মর্যাদায় আবেগে আপ্লুত। আমি চাই শহীদদের আজকের দিনের মত যেন প্রতিদিন জাতি স্মরণ করে। আমরা স্বাধীনতা উপহার দিয়েছি এই স্বাধীনতা রক্ষা করা জাতি তথা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তারা যেন স্বাধীনতা রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ করেন। সমস্ত শহীদ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে আমার এটাই চাওয়া।

রফিক ও শাহেল নামে দুই কলেজছাত্র ফুল নিয়ে এসেছেন শহীদ বেদিতে অর্পণ করতে। এসময় তারা বলেন, পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর এতো অত্যাচারের ফলেও আমরা একটি স্বাধীন দেশ অর্জন করেছি। আর আজ হচ্ছে আমাদের সেই স্বাধীনতা দিবস। এ দিনটি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। জাতীয় স্মৃতিসৌধের গণপূর্ত বিভাগের ইনচার্জ উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ দেশি-বিদেশি কূটনীতিকদের শ্রদ্ধা নিবেদনে স্মৃতিসৌধ মাসজুড়ে প্রস্তুত করেছি। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তাদের শ্রদ্ধা নিবেদনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বস্তরের মানুষের জন্য উম্মুক্ত করা হয়েছে। জনতার শ্রদ্ধার ফুলে ভরে যাচ্ছে শহীদ বেদী।
দেশকন্ঠ/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।