• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১৪:৪৩    ঢাকা সময়: ০০:৪৩

মাঠের বাইরের সাকিব

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল : মাঠ ও মাঠের বাইরের সাকিব আল হাসানের মধ্যে বিস্তর তফাৎ। মাঠের বাইরে যত বিতর্কিত ঘটনাই ঘটান না কেন মাঠে তার বিন্দুমাত্র প্রভাব নেই। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের জনকল্যানমূলক কাজেও নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। ২৪ মার্চ ৩৬তম জন্মদিনে ক্যান্সার ফাউন্ডেশন গঠন করার মতো মহতী কাজের ঘোষনা দিয়েছেন।  অনেকটা নীরবে-নিভৃতে ভালো কাজ করে যান মিস্টার সেভেনটি ফাইভ। বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার মানবিক কর্মকান্ডগুলোকে খুব একটা সামনে আনেন না। স্বল্প আয়ের মানুষের সুস্বাস্থ্য, সুবিধাবঞ্চিতদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও শিক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২০২০ সালে করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন’। যার মাধ্যমে অনেক মানুষ সেবা পেয়েছেন। এবার সাকিব আল হাসানের তার জন্মদিনে আরও বড় পরিসরে দেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত হতে যাচ্ছেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে শুক্রবার তিনি উদ্বোধন করেছেন ‘সাকিব আল হাসান ক্যানসার ফাউন্ডেশন’। দেশের সুবিধাবঞ্চিত ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করতেই সাকিব আল হাসান ক্যান্সার ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা বলে জানান উদ্যোক্তারা। যা মহতী কাজ হিসেবে সর্বমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
 
সাকিবের এই মহতী উদ্যোগের সঙ্গে রয়েছেন বিকেএসপির সাবেক কয়েকজন ক্রিকেটার ও দু’জন কোচ। অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক কাফি খানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ৯ জনের একটি গ্রুপ মিলে ফাউন্ডেশনটি গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এক বছর আগে সাকিব আল হাসান ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের নিবন্ধনও করা হয়েছে বলে জানান গ্রুপের অন্যতম সদস্য জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার নাঈম ইসলাম। অন্য সদস্যরা হলেন, জাতীয় দলের সাবেক বাঁহাতি স্পিনার ও বর্তমান নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক রাজ, জাতীয় দলের সাবেক বাঁহাতি স্পিনার সোহরাওয়ার্দী শুভ, ক্রিকেটার মো. নাসিরুল ইসলাম ও প্রয়াত মোশাররফ হোসেন রুবেল, যিনি মস্তিষ্কের ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে গত বছর ১৯ এপ্রিল মারা গেছেন। বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও জাতীয় দলের সাবেক কোচ সারওয়ার ইমরান এই ফাউন্ডেশনের দু’জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। এদিকে কিছুদিন আগেই মাস্তুল ফাউন্ডেশনকে একটি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছেন সাকিব।
 
বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার মাগুরায় ১৯৮৭ সালের ২৪ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৬ সালে বিকেএসপিতে হাতেখড়ির পর মাত্র ১৯ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু সাকিবের। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই সেরা অলরাউন্ডার হয়েছেন তিনি। রেকর্ডের পর রেকর্ড ভেঙেছেন, গড়েছেনও। ২০১১ বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বর্তমানেও অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ডের ভার রয়েছে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। এদিকে, সাকিবের জন্মদিনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষ থেকে ছবি পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কলকাতার জার্সি পরে একটি চেয়ারে বসে রয়েছেন সাকিব এবং তার পায়ের কাছে একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। সেই সঙ্গে লেখা, ‘শুভ জন্মদিন সাকিব। দিনটা খুব ভালো কাটুক।’ অনুষ্ঠানে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও উপস্থিত ছিলেন। নিজের বক্তব্যে সাকিব বলেন, ‘রোজার শুরু, জুম্মার দিন, আজ আর আমার জন্মদিন। এক দিনে সব মিলে গেছে তাই দিনটি আমার জন্য আলাদা। আলাদা আরও একটি কারণে, সেটা আমাদের এই নতুন উদ্যোগ। আমি অনেক সময় অনেক কিছুর সঙ্গে জড়িয়েছি’।
 
সাকিব আরও বলেন, ’চেষ্টা করেছি মানুষের পাশে থাকার। এবার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কিছু করতে চাই। এই ক্যান্সার ফাউন্ডেশন করার পেছনে সত্যিকার অর্থে সেটিই কারণ। একটা ডায়াগনসিস সেন্টার করতে চাই। তারও আগে চাই মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে। আমার কাছে মনে হয় এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার আরও বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, অনেক আর্লি স্টেজে যদি এটা ধরা পড়ে, কিংবা শুরুতেই ডায়াগনসিস করা যায়, তাহলে আমার মনে হয় এখন অনেক ভালো চিকিৎসা আছে। যার মাধ্যমে মানুষ অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারবে। ক্যান্সারকে সবাই মরণব্যাধি বলে। তবে এর ভয়ে পিছিয়ে থাকলে তো চলবে না। আমাদেরকে এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে, মানুষকে সাহস দিতে হবে, দেখাতে হবে আশা। আমরা সবাই মিলে সেই কাজটি করতে চাই। যত ক্ষুদ্র পর্যায়ে থেকেই হোক না কেন।’ নিজেদের কার্যক্রম নিয়ে বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ’সাকিব আল হাসান ক্যান্সার ফাউন্ডেশন এইসব মানুষের জন্য কাজ করতে চায়, যাদের সামর্থ্য নেই ক্যান্সার মতো ব্যয়বহুল চিকিৎসাকে এগিয়ে নেওয়ার, যাদের সামর্থ্য নেই ক্যান্সার ডায়াগনসিস করার। আমরা যদি একজন, একশ জন বা এক হাজার জন মানুষকেও সাহায্য করতে পারি, সেটিই আমাদের জন্য বড় অর্জন হবে আমি মনে করি। আমাদের স্বপ্নটা বড়, একটা ক্যান্সার হাসপাতাল করার’। সাকিবের এই উদ্যোগে অনেকের থাকা অসহায় মানুষের পাশে থাকার মতোই।
দেশকণ্ঠ/আসো 
 

  মন্তব্য করুন
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।