• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১৮:৩৪    ঢাকা সময়: ০৪:৩৪

পদ্মা সেতু আমাদের অহংকারের প্রতীক : শেখ হাসিনা

দেশকন্ঠ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ দেখিয়ে দিতে পেরেছে যে, আমরাও পারি। এটা আমাদের গর্ব, সক্ষমতা ও অহংকারের প্রতীক। ০৫ এপ্রিল বুধবার গণভবনে পদ্মা সেতুর সরকারি ঋণ পরিশোধের প্রথম চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর অনেক দেশের সঙ্গেই কথা বলেছিলাম; কিন্তু সবাই সরে দাঁড়িয়েছিল। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রবল বাধা অতিক্রম করে এ সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। পদ্মা সেতু নিয়ে এমন একটা চক্রান্ত শুরু হয়েছিল যেটা খুবই দুঃখজনক। একটা অবাঞ্ছিত ঘটনা জন্ম দিয়ে এ সেতু নির্মাণে কেবল বাধা দেয়াই হয়নি; আমাদের ওপর একটা বদনামও দিতে চেয়েছিল। আমরা সেটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। একদিকে যখন বিশ্বব্যাংক টাকা দেয়া বন্ধ করে দিল, তখন সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য সংস্থাও সরে দাঁড়াল। তখনই বলেছিলাম নিজস্ব অর্থায়নে করব। বিশ্বের সবচেয়ে খরস্রোতা আমাজান নদীর পরই আসে পদ্মা নদীর নাম; কাজেই সেখানে একটা সেতু নির্মাণ করা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, সেটা আমরা করতে পেরেছি। তিনি বলেন, ‘আরেকটা কথা এখানে বলতে চাই, সরকার গঠনের পর থেকে লক্ষ করেছি, সবার মধ্যে একটা ধারণা ছিল কোনো না কোনোভাবে বা কারও কাছ থেকে সাহায্য না পেলে এক কদমও এগুতে পারব না। এ ধরনের ধারণা নিয়েই কিন্তু সবাই চলত। এ জিনিসটা কিন্তু খুব খারাপ লাগতো আমার কাছে। কারণ আমি বিশ্বাস করি, আমরা যখন স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছি; মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি; একটি বিজয়ী জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে আত্মমর্যাদার বোধ থাকার কথা, সেখানেই বড় একটা ঘাটতি লক্ষ করতাম। সে কারণে আমি একটা সিদ্ধান্ত নিলাম যে, পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে যেদিন করতে পারব, সেদিন করব, তাছাড়া নয়। এভাবে কেউ (একটা সংস্থা) আমাদের অপমান করবে আর আমরা সেটা সহে নেব, এটা কখনও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ দেখিয়ে দিতে পেরেছে যে, আমরাও পারি। এটা আমাদের গর্ব, সক্ষমতা ও অহংকারের প্রতীক হয়ে থাকবে।’
 
পদ্মার দুই পাড়ের সাধারণ মানুষ জমির দলিল আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাদের প্রতি  কৃতজ্ঞতা জনিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ সঙ্গে থাকলে যে কোনো বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব, সেটি প্রমাণ হয়েছে সফলভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্যদিয়ে। বাংলাদেশ তার সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে বহির্বিশ্বে। প্রসঙ্গত: পদ্মা সেতু বা পদ্মা বহুমুখী সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হয়েছে। সেতুটি ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়। এদিন শেখ হাসিনা নিজে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল দিয়ে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুতে আরোহণ করেন এবং এর মাধ্যমে সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। দুই স্তর বিশিষ্ট ইস্পাত ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এ সেতুর ওপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় তৈরি সেতুটি ৪১টি স্প্যান নিয়ে গঠিত, যার প্রতিটি লম্বায় ১৫০.১২ মিটার (৪৯২.৫ ফুট) এবং চওড়ায় ২২.৫ মিটার (৭৪ ফুট)। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি (৩.৮২ মাইল)। এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু, স্প্যান সংখ্যা ও মোট দৈর্ঘ্য উভয়ের দিক থেকে পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত দীর্ঘতম সেতু এবং ১২০ মিটার (৩৯০ ফুট) গভীরতাযুক্ত বিশ্বের গভীরতম পাইলের সেতু।পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট খরচ হয় ৩০ হাজার ১৯৩.৩৯ কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি। বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয় সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।
দেশকন্ঠ/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।