• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১৭:০২    ঢাকা সময়: ০৩:০২

৯৯৯-এ কল করে সহায়তা চেয়ে উল্টো গ্রেপ্তার

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে সহায়তা চেয়েছিল এক পরিবার। তবে সহায়তা না করে উল্টো ওই পরিবারের সদস্যদের আটকের অভিযোগ উঠেছে গোপালগঞ্জের গোপীনাথপুর তদন্ত কেন্দ্রের দুই পুলিশের বিরুদ্ধে। আটকের কয়েক ঘণ্টা পর সদর থানায় প্রতিপক্ষের করা নারী নির্যাতন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাদের। পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী। যদিও পুলিশ বলছে, পুলিশের সামনে মামলার বাদীকে মারধর করার অপরাধে তাদের আটক করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় ও প্রতক্ষ্যদর্শীরা বলছেন ঘটনার সময় ওই নারীকে কোনো মারধর করা হয়নি। প্রতিপক্ষের করা মিথ্যা মামলায় বৃদ্ধ বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে ও পুলিশের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আকুতি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের দুবাই প্রবাসী ছেলে। গত ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ সদরের সুকতাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্য হলেন, গোপীনাথপুর তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হাসান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ওহিদুজ্জামান। ভুক্তভোগীরা হলেন, সদর উপজেলার শুকতাইল গ্রামের হিরু মোল্লা, তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম ও তাদের ছেলে বাইজিদ মোল্লা। 
 
প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী হিরু মোল্লার সঙ্গে তার আপন ভাই বিজিবি সদস্য ইয়াহিয়া মোল্লার জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত বৃহস্পতিবার ইয়াহিয়া মোল্লার স্ত্রী চামেলি বেগম হিরু মোল্লার জমিতে জোর করে সেপটিক ট্যাংক নির্মাণ করতে যান। এসময় হিরু মোল্লার বউ ফাতেমা বেগম বাধা দেন। এতে ইয়াহিয়া মোল্লার বউ চামেলি বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে তার বাবার বাড়ি থেকে লোকজন ডেকে এনে ফাতেমা বেগম ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হুমকি ধামকি দিয়ে পুনরায় কাজ শুরু করেন। পরে ফাতেমা বেগম বাধ্য হয়ে পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দেন। এসময় গোপিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আবু হাসান ও এএসআই ওহেদুজ্জামান ঘটনাস্থলে পৌঁছে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন। পরে ইয়াহিয়া মোল্লার বউয়ের সঙ্গে ঘরের ভেতর গিয়ে কথা বলার পর আচরণ পরিবর্তন হয়ে যায় ওই পুলিশ সদস্যদের। এরপর ভুক্তভোগী ওই পরিবারকে মিমাংসার কথা বলে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আটক করা হয়। এরপর আটকের কয়েক ঘণ্টা পর চামেলি বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোর্টে প্রেরণ করা হয়। 
 
এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী হিরু মোল্লার ছেলে দুবাই প্রবাসী হেলাল মোল্লা ৭ এপ্রিল শুক্রবার ফেসবুকে পুলিশের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ ও বৃদ্ধ বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে আকুতি জানিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। এ বিষয়ে একাধিক প্রতক্ষ্যদর্শী বলেন, হিরু মোল্লার বউ ফাতিমা বেগম ৯৯৯-এ কল দেওয়ার পর পুলিশ আসে। প্রথমে পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছিল। হঠাৎ ওই পুলিশের ফোনে একটা ফোন আসে এরপর তাদের চামেলি বেগমের ঘরে গিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। ঘর থেকে বের হয়ে তারা হিরু মোল্লাসহ, তার স্ত্রী ও ছেলেকে মীমাংসার কথা বলে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। পরে আমরা জানতে পারি কয়েকঘণ্টা পর তাদের চামেলি বেগমের করা নারী নির্যাতন মামলায় আটক করা হয়েছে। পুলিশের সামনে ওই নারীকে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, পুলিশের সামনে কেউ মারামারি করেনি। তারা শুধু ঝগড়া করছে। এর বেশি কিছু না। এ বিষয়ে মামলার বাদী চামেলী বেগম বলেন, আমার স্বামীর জায়গায় মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করছিলাম। হিরু মোল্লার পরিবার শত্রুতা করে বাধা দিয়েছে, আমি আইনের আশ্রয় নিয়ে তাদের নামে মামলা করেছি।
 
ভুক্তভোগী ফাতেমা বেগম বলেন, চামেলি বেগম একজন মামলাবাজ মহিলা। সে আমাদের পরিবারের সদস্য ও এলাকার সাধারণ মানুষের নামে একাধিক মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করেছে। আমরা ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার জন্য ৯৯৯ এ কল করেছিলাম, পুলিশ আমাদের আস্থা ভেঙে দিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন ও ঘুষের বিনিময়ে আমাদের পরিবারের ওপর অন্যায় করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশের উপর আমরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। আপনাদের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাসুদ বলেন, তাদের নারী নির্যাতন মামলা গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তারা পুলিশের সামনে মামলার বাদীকে মারধর করেছে। গোপীনাথপুর তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আবু হাসানের ফোনে একাধিকবার ফোন করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এএসআই ওহেদুজ্জামান বলেন, আমি কিছুই বলতে পারব না। এসআই আবু হাসান স্যার ও ইনচার্জ যেটা বলবে সেটাই রাইট। তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোশাররফ হোসেন বলেন, পুলিশের সামনে মামলার বাদীর উপর হামলা করায় তাদের আটক করা হয়েছিল এবং আমরা যেটা বলেছি সেটাই সঠিক। জেলা পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, আমি যেমনটি শুনেছি তা হলো ওই নারী (ফাতেমা বেগম) ৯৯৯ এ কল করে সহায়তা চেয়েছিলেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশের সামনে মামলার বাদীকে মারধর করে। পরে তাদের আটক করা হয়। এ বিষয়ে আমি আরও কিছু জেনে আপনাদের জানাতে পারব। 
দেশকন্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।