• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১২:২২    ঢাকা সময়: ২২:২২

১৯ বছরে শিশুদের প্রিয় সিসিমপুর

  • বিনোদন       
  • ১২ এপ্রিল, ২০২৩       
  • ৭৫
  •       
  • ২৩:৫৯:৪১

দেশকন্ঠ  ডেস্ক : প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের শেখাকে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করার লক্ষ্য নিয়ে ‘সিসিমপুর’ নামে যে কার্যক্রমটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৫ সালে, তা ১৮ পেরিয়ে পা রাখছে ১৯তম বছরে। টেলিভিশনে সিসিমপুরের প্রথম প্রচারের দিন হিসেবে প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল তারিখটিকে ‘সিসিমপুর দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়।

সিসিমপুর তার টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও মুদ্রিত বিভিন্ন উপকরণের মাধ্যমে শিশুকে বর্ণ চেনা, শব্দ থেকে বর্ণ চিহ্নিত করা, বর্ণ দিয়ে শব্দ মেলানো, শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি করতে সাহায্য করে। চারপাশের পরিবেশ থেকে উপকরণ খুঁজে নিয়ে সেগুলোর মাধ্যমে বর্ণ ও শব্দ চিনতে সাহায্য করে। যেমন: বল, ঘর, কলা, আম, টেবিল, ঘড়ি, গরু, গাছ, পাতা, কলম, বই ইত্যাদি শিশুর পরিচিতি বিভিন্ন শব্দ কোন বর্ণ দিয়ে শুরু হয়, তা বিনোদন ও খেলার ছলে শেখানো হয়। সিসিমপুরের চরিত্রগুলোর মাধ্যমে পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান থেকে বিভিন্ন আকার-আকৃতির নাম, রঙের নাম, গাণিতিক ধারণা, ইত্যাদি শেখানো হয়।

বাংলা ভাষার শুদ্ধ উচ্চারণের বিষয়টিকে সিসিমপুর সব সময়ই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে। আর তাই সিসিমপুরের সব ধরনের পর্বে চরিত্র অনুযায়ী প্রত্যেকের শুদ্ধ উচ্চারণকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়, যাতে শিশুরা এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রমিত বাংলা শোনার ও চর্চা করার সুযোগ পায়। আবার একই সাথে বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষা, ঐতিহ্য আর জীবনযাপনকেও তুলে ধরা হয়। যাতে করে শিশুরা সমানভাবে আঞ্চলিক ভাষা-সংস্কৃতি এবং ভিন্ন ভাষা-সংস্কৃতির মানুষের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল হয়।

বর্তমানে টেলিভিশনে সিসিমপুরের ১৫তম সিজনের প্রচার চলছে। এই সিজন থেকে সিসিমপুরে যুক্ত হয়েছে ‘জুলিয়া’ নামে একটি নতুন চরিত্র। জুলিয়া অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু। বাংলাদেশের অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুদের প্রতিনিধিত্ব করছে জুলিয়া। জনপ্রিয় এই অনুষ্ঠানটি দুরন্ত, মাছরাঙা এবং বিটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে। তবে শুরু থেকেই বাংলাদেশ টেলিভিশনে ১৮ বছর ধরে বিরতিহীনভাবে সিসিমপুর সম্প্রচার একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। যা বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং সিসিমপুরের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফল। তিনটি টেলিভিশনের মাধ্যমে দেশের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ দর্শক নিয়মিতভাবে সিসিমপুর উপভোগ করেন।

বর্তমানে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের জেলার ৫টি উপজেলার ২৫০টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাজ করছে সিসিমপুর। ইউএসএআইডি/বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতায় এসব স্কুলের শিশুদের বিশেষ করে প্রান্তিক শিশুদের শেখার দক্ষতা বৃদ্ধি ও স্কুলে বৈষম্যহীন শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছে। এজন্য স্কুলগুলোর শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, স্কুলগুলোতে শিক্ষা উপকরণ প্রদান ও সিসিমপুর পাঠাগার তৈরি, অভিভাবক ও কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে অভিভাবক সমাবেশসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে সিসিমপুর।

প্রতিবছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শিশুদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের বিষয়ে পরিণত হয়েছে সিসিমপুর। মেলায় প্রতি শুক্র-শনি আর ছুটির দিনগুলোতে ইকরি, হালুম, টুকটুকি আর শিকুর সঙ্গে মজার সময় কাটাতে শিশুদের ঢল নামে। যা ইতোমধ্যেই অমর একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে।

এ বছর প্রথমবারের মতো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ব্রেইলে লেখা দশটি গল্পের বই প্রকাশ করেছে সিসিমপুর। এছাড়া অচিরেই সিসিমপুরের কিছু পর্বে যুক্ত করা হবে ইশারা ভাষা। দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে সিসিমপুরের সঙ্গে যুক্ত করতেই এই উদ্যোগ।

সিসিমপুরের ১৯ বছরে পা দেওয়া উপলক্ষ্যে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘১৮ বছর ধরে শিশুতোষ এই অনুষ্ঠানটি নির্মিত হচ্ছে তিন থেকে আট বছর বয়সী শিশুর প্রারম্ভিক শিক্ষার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে। সেই সঙ্গে সিসিমপুরের লক্ষ্য শিশুর পিতা-মাতা, যত্নকারী এবং শিক্ষকরাও। আনন্দ আর খেলার ছলে সিসিমপুর ভূমিকা রেখে চলেছে শিশুর সামগ্রিক বিকাশে। ভাষা-বর্ণ, গণিত, পরিবেশ, সুষম ও পুষ্টিকর খাবার, স্বাস্থ্যসুরক্ষার মতো মৌলিক বিষয়গুলো ছাড়াও সিসিমপুর জেন্ডার সমতা, সামাজিক মূল্যবোধ, নিরাপদে খেলাধুলা করা, দুর্যোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্যকর অভ্যাসচর্চা, ভূমিকম্প, রাস্তা পারাপার ও পানি ডুবি-বিষয়ক নিরাপত্তা বিভিন্ন আঘাত প্রতিরোধে সচেতনতা, সঞ্চয় ও পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা এবং বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ইত্যাদি নানা বিষয় শিশুদের শিখতে সাহায্য করেছে সিসিমপুর। পাশাপাশি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মমত্ববোধ, অভিন্নত্ব ও বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাসহ দেশের সকল মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার বিষয়েও গুরুত্ব দিচ্ছে সিসিমপুর।’

সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের সব কার্যক্রমই সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় পরিচালিত হয়। গত ১৮ বছরে সিসিমপুর বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে এবং করছে। এছাড়া সিসিমপুরের পথচলায় পাশে আছে ইউএসএআইডি/বাংলাদেশসহ আরও কিছু দাতা সংস্থা। নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক সিসেমি স্ট্রিট নামক শিক্ষামূলক টেলিভিশন-
দেশকন্ঠ/এআর
 

 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।