• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০৬:৪৯    ঢাকা সময়: ১৬:৪৯

বিবেচনায় থাকলেও নিশ্চিন্ত নন সৌম্য-আফিফ

বিশেষ প্রতিবেদন : বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পাইপ লাইনে মানসম্পন্ন খেলোয়াড় না থাকলেও যারা একবার দলেল বাইরে চলে যান তাদের পক্ষে দলে ফেরা কঠিন হয়ে পড়ে। তেমনি একজন সৌম্য সরকার। এই স্টাইলিষ্ট বাহাতি ওপেনারকে অনেক ম্যাচে সুযোগ দেওয়া হলেও সেটি কাজে লাগাতে পারেননি। আর প্রিমিয়ার লিগ থেকে শুরু করে ঘরোয়া বিভিন্ন আসরে এখন অনেকটাই ম্রিয়মান তার পারফরম্যান্স। যদিও জাতীয় দলের অন্যতম নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন বলেছেন, তাদের বিবেচনায় এখনো রয়েছেন সৌম্য। অন্যদিকে পর্যাপ্ত সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে না পারা আরেকজন হচ্ছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। একরকম ঘোষনা দিয়ে তাকে দল থেকে বাদ দিয়েছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তবে জাতীয় দলের জন্য বিবেচনায় থাকলেও নিশ্চিন্ত নন সৌম্য-আফিফের কেউই। অথচ নজরকাড়া পারফরম্যান্সেই বাংলাদেশ জাতীয় দলে এসেছিলেন সৌম্য সরকার। একের পর এক ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সে নিজেকে তৈরি করেছিলেন জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে। কিন্তু সেসবই এখন অতীত। নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু ফিরতে পারছেন না চেনা ছন্দে। তার এমন পরিস্থিতিতে হতাশ জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন।
 
তবে এখনো সৌম্যকে জাতীয় দলের বিবেচনায় রাখছেন এ নির্বাচক। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষে হঠাৎ করেই স্কোয়াড থেকে আলাদা হয়ে যেতে দেখা যায় আফিফ হোসেনকে। পরবর্তীতে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও দেখা যায়নি বাঁহাতি এই ব্যাটারকে। এমনকি আগামী মাসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হতে যাওয়া ওয়ানডে সিরিজের দলেও নেই আফিফ। জাতীয় দল থেকে অনেকটা নীরবেই বাদ পড়লেও ঘরোয়া ক্রিকেটে ঠিকই ধারবাহিকভাবে রান পাচ্ছেন এই ব্যাটার। আফিফও নজরে আছে বলে জানালেন বাশার। ডিপিএলে মোহামেডানের হয়ে খেলছেন সৌম্য। এখন পর্যন্ত ৯টি ম্যাচে ২০.১৩ গড়ে করেছেন মাত্র ১৬১ রান। ফিফটি একটি। ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলতে নেমে করেছেন মাত্র ৯ রান। সবমিলিয়ে আরো একটি বাজে মৌসুমই কাটছে তার। অথচ দুই মৌসুম আগে এই প্রিমিয়ার লিগেই দেশের হয়ে প্রথম লিস্ট ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। সেখানে এবার রানখরায় ভুগছেন। সৌম্যর এমন বর্ণহীন পারফরম্যান্সে হতাশ হাবিবুল বাশার, ‘সৌম্যর কাছে প্রত্যাশা অনুযায়ী রেজাল্ট পাচ্ছি না। কিছু দিন আগেও জাতীয় দলে ছিল। বাংলাদেশের পক্ষে তার অনেক ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স আছে। এখন প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফরম্যান্স পাচ্ছি না’।
 
সুমন আরও বলেন, ’তারপরও সে এখনো আমাদের চিন্তাভাবনার মধ্যে আছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করলে আমাদের পুল আরো বড় হয়। আমরা বিশ্বাস করি, ওর সামর্থ্য নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ভীষণ প্রতিভাধর খেলোয়াড় হওয়ায় নির্বাচকদের অনেক সমর্থনই পেয়েছেন সৌম্য। কিন্তু সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। এখন নিজের এই বাজে পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার উপায় সৌম্যকেই বের করতে হবে বলে মনে করেন হাবিবুল, ‘ওর সাথে সবাই কথা বলছে। মানসিক সমর্থনটা সবসময় দেয়া হয়। মাঝে মধ্যে ক্রিকেটারদের নিজেকেই নিজে বাঁচাতে হয়। ও কিন্তু অনেক দিন ধরে খেলছে, মোটেও নতুন ক্রিকেটার না। যথেষ্ট অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। নিজেকেই ঠিক করতে হবে, কিভাবে খেলতে হবে।’ তিনি যোগ করেন, সব ব্যাটারের একটা ব্যাটিং প্ল্যান থাকে, একটা নিজস্ব প্ল্যান নিয়ে মাঠে নামে। সেটা হতে পারে কোন বোলারকে মারবে, কোন বোলারকে মারবে না, কোন দিক ছোট, কোন দিকে বাতাস আছে। এমন সব ব্যাটারেরই কিছু বেসিক প্ল্যান থাকে। সৌম্যকে নিজের ব্যাটিং প্ল্যান ঠিক করতে হবে, কিভাবে ও ব্যাটিং করতে চায়। সৌম্য যথেষ্ট ম্যাচিউরড। নিজের ব্যাটিং বোঝাটা গুরুত্বপূর্ণ। ওকে বোঝানোর কিন্তু কিছু নেই। ওর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সাফল্য আছে।
 
তার বড় বড় দলের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ইনিংস আছে। ওকে কিছু বোঝানোর নেই। ওকে নিজেই বুঝতে হবে। যোগ করেন এ নির্বাচক। চলমান ডিপিএলে আবাহনীর হয়ে খেলছেন আফিফ। এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ফিফটি হাঁকিয়েছেন তিনটি। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮০। জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়ার পরও ঘরোয়া ক্রিকেটে আফিফের এমন পারফরম্যান্সে খুশি বিসিবির নির্বাচক সুমন। হ্যাঁ, ওকে যে কাজটা দেয়া হয়েছে সে সেটা করছে। দেখা যাক সামনে কি হয়। যে প্রত্যাশা ছিল সেটা মোটামুটি পূরণ করছে। একজন খেলোয়াড় যখন দলের বাইরে যায় তখন তার কাছে প্রত্যাশা থাকে সে যেন ঘরোয়া ক্রিকেটে যথেষ্ট রান করে। যখন তাকে নিয়ে আসা হবে (জাতীয় দলে) তখন যেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফিরে আসতে পারে। আমাদের সামনে অনেক খেলা আছে। দলের বাইরে যেসব খেলোয়াড় আছেন তাদের এই ফর্মটা খুব দরকার হবে। সে আমাদের নজরে আছে। জাতীয় দলে যখন আফিফ ফিরবে তখন তার ব্যাটিং অর্ডার কী হবে, জবাবে বাশার জানালেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো রান করছে। জাতীয় দলে যখন আসবে তখন জাতীয় দলের যে ব্যাটিং প্ল্যানটা কিংবা কারা ব্যাটিং করছে সে জায়গাটা দেখতে হবে। যারা জাতীয় দলে রান করছে তাদের জায়গা তো নিতে পারবেন না। দলে থাকলে দলের কম্বিনেশন অনুযায়ী অনেক কিছু পরিবর্তন হয়। আফিফ যে ধরনের ব্যাটসম্যান যদি উপরের দিকে সুযোগ পায়, টপ অর্ডারে সবসময় বড় রান করে আসছে। আমি মনে করি সামনে ওর অনেক লম্বা সময় পড়ে আছে। আমার বিশ্বাস ভবিষ্যতে সে বাংলাদেশের জন্য অনেক ভালো কিছু করবে। যোগ করেন সুমন।
 
পর পর দুই বলে ব্রাদার্স ইউনিয়নের পেসার মোহর শেখকে দুটি বাউন্ডারি হাঁকালেন সৌম্য সরকার। যেন ছন্দে ফেরা আভাসটা মিলেছে তার ব্যাটে। কিন্তু পরের বলে ফাইন লেগে থাকা তানজিদ হাসান তামিমের তালুবন্দি সৌম্য। ৯ রানে সাজঘরে ফিরে গেলেন তিনি। মাঠে বসে সৌম্যর এমন ব্যাটিং ব্যর্থতা দেখে কিছুটা হতাশ হয়েছেন জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। বাঁ হাতি এ ব্যাটার যে নির্বাচকদের প্রত্যাশার বিন্দুমাত্রই পূরণ করতে পারছে না! তবুও সৌম্যকে নিয়ে এখনো আশাবাদী নির্বাচকেরা। এখন সুযোগ পেলে কতটা কাজে লাগাতে পারেন সেটাই দেখার বিষয়। কারণ সৌম্য-আফিফের প্রতিভা নিয়ে কারোরই কোন সন্দেহ নেই।
দেশকণ্ঠ/রাসু

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।