দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : জ্বালানি তেলভিত্তিক মোটর সাইকেল ও সিএনজিভিত্তিক অটোরিকশার পরিবর্তে বিদ্যুৎচালিত বাইক ও অটোরিকশা ক্রয়ে জনগণকে উৎসাহিত করতে দীর্ঘমেয়াদে সুদমুক্ত ঋণ দেবে পাকিস্তানের সরকার। সোমবার পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন অর্থনৈতিক সমন্বয় পরিষদের (ইকোনোমিক কোঅর্ডিনেশন কমিটি- ইসিসি) সভায় এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন পেয়েছে। ইসিসির সোমবারের সভায় উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে তিনিই এই প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পরিচালিত যুব ও কৃষিঋণ প্রকল্পের আওতায় দেওয়া হবে এই ঋণসুবিধা। এই সুবিধার আওতায় যারা বিদ্যুৎচালিত বাইক ও অটোরিকশা কেনার জন্য ঋণের আবেদন করবেন, তাদের সর্বোচ্চ ৫০ হাজার পাকিস্তানি রুপি ঋণ দেওয়া হবে। ঋণ পরিশোধের জন্য গ্রহীতাকে ৩ বছর সময় দেওয়া হবে এবং এই ঋণে কোনো সুদ কাটা হবে না। পাকিস্তানে অর্থবছর শুরু হয় ১ জুলাই, শেষ হয় ৩০ জুন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১৫ হাজার ই-বাইক এবং ই-অটোরিকশার ওপর এই ঋণসুবিধা প্রযোজ্য হবে। তবে সামনের অর্থবছরগুলোতে এই সুবিধার আওতা আরও বাড়ানো হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬০ হাজার এবং ২০২৩ সালের ১ লাখ ই-বাইক ও ই-অটোরিকশার ওপর প্রযোজ্য হবে এই সুবিধা।
পাকিস্তানের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে বর্তমানে চলাচল করছে ২ কোটি ৬৩ লাখেরও বেশি মোটর সাইকেল। এর ফলে প্রতি বছর ব্যয় হচ্ছে ৩০০ কোটি ডলার সমমূল্যের জ্বালানি তেল। প্রাকৃতিক গ্যাস বা সিএনজি চালিত অটোরিকশাগুলোর জন্য প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ খরচ হচ্ছে পাকিস্তানের সরকারের। তাই অর্থনৈতিক সংকটে টালমাটাল পাকিস্তানে বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয়ে ই-বাইক এবং ই-অটোরিকশা অনেকটা আশীর্বাদের মতো। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে পাকিস্তানের সড়ক-মহাসড়কে চলা বাইক ও অটোরিকশাগুলোর ৫০ শতাংশই হবে ই-বাইক ও ই-অটোরিকশা। ই-বাইক ও ই-অটোরিকশা ক্রয়ে উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি এসব যানবাহন অভ্যন্তরীণভাবে তৈরিতেও মনযোগ দিয়েছে পাকিস্তানের সরকার। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে পাকিস্তানে অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি করা হয়েছিল ৭ হাজার ৩৭৭টি ই-বাইক। এই সংখ্যা আরও বাড়াতে চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ২২টি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানকে ই-বাইক ও ই-অটোরিকশা প্রস্তুতের লাইসেন্স দিয়েছে সরকার।
দেশকন্ঠ/অআ