দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্য ছত্তিশগড়ে পুলিশের একটি গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে মাওবাদীরা। এতে নিহত হয়েছেন ওই গাড়ির চালক এবং ১০ জন পুলিশ সদস্য। বুধবার দুপুরের দিকে রাজ্যের বাস্তার জেলার দান্তেওয়াদা এলাকায় ঘটেছে এ ঘটনা। বিভিন্ন জনজাতি অধ্যুষিত রাজ্য ছত্তিশগড়ে মাওবাদীরা বেশ প্রভাবশালী। এই রাজ্যটি মাওবাদীদের অন্যতম ঘাঁটি বলেও পরিচিত। মাওপন্থীদের রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা ঠেকাতে ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি) নামে একটি বিশেষ পুলিশ বাহিনী গঠন করেছে ছত্তিশগড় রাজ্য সরকার। বুধবার নিহত পুলিশ সদস্যরা সবাই ডিআরজি বাহিনীর ছিলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
গত কয়েক বছরে ছত্তিশগড়ের বিভিন্ন এলাকায় ডিআরজির সঙ্গে বেশ কিছু সংঘাত ঘটেছে মাওবাদীদের। সেসব সংঘাতে ডিআরজির সাফল্যও আছে। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে, বুধবার ভোরের দিকে বাস্তার জেলার দান্তেওয়াদার একটি প্রত্যন্ত এলাকায় মাওপন্থী দমন ‘অপারেশনে’ গিয়েছিল ডিআরজির একটি ইউনিট। সেখান থেকে ফেরার পথে ঘটে এই বোমা হামলা। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হামলায় ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) ধরনের বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল এক টুইটবার্তায় নিহতদের উদ্দেশে গভীর শোক জানিয়ে বলেন, দান্তেওয়েদার আরানপুর এলকায় মাওবাদীদের গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে নকশালবিরোধী অপারেশনে গিয়েছিলেন ডিআরজি জওয়ানরা।
‘এই ঘটনা হৃদয় বিদারক। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি,’ টুইটবার্তায় বলেন মন্ত্রী। ১৯৬৭ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নকশালবাড়ি আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ভারতে মাওবাদীদের উত্থান ঘটে। নকশালবাড়ি আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ থাকার কারণে ভারতের মাওপন্থীরা ‘নকশাল’ নামেও পরিচিত। উত্থানের পর কয়েক বছর গ্রাম ও শহরে প্রায় খোলামেলাভাবে রাজনৈতিক তৎপরতা চালাতেন নকশালরা, কিন্তু রাষ্ট্রের ব্যাপক প্রতিকূল মনোভাব আইনশৃঙ্খলাবাহীনর কঠোর অভিযানের জেরে শত শত কর্মীর মৃত্যুর পর গত শতকের আশির দশক থেকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের অরণ্যে নিজেদের ‘হেড কোয়ার্টার’ গড়ে তোলেন নকশালরা। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে মাওপন্থীরা খানিকটা দুর্বল হলেও ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপূর্ব ভারতের কয়েকটি রাজ্যে তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা বেশ শক্তিশালী।
দেশকন্ঠ/অআ