• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১৪:০৩    ঢাকা সময়: ০০:০৩

আইপিএলে এক ম্যাচ খেলে কি শিখলেন লিটন

দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন : বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আইপিএল ভাগ্য যেন সুপ্রসন্ন হচ্ছেইনা। কখনোই যোগ্যতার মাপকাঠি বিবেচনায় খেলার সুযোগ পায়নি তারা। সে কারণে ক্রিকেটপাড়ায় কান পাতলেই হতাশা আর ক্ষোভের কথা শোনা যায়। এবারও যেমনটি তৈরি হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমান ও লিটন দাসকে নিয়ে। তাদের মধ্যে দ্য ফিজ ভারতে থেকে গেলেও পারিবারিক কারণে ফিরে এসেছেন লিটন। এর আগে মাত্র একটি ম্যাচেই খেলার সুযোগ পেয়েছেন। সেই ম্যাচ থেকে কি শিখলেন তারই চুলচেরা বিশ্লেষন করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। প্রথমবারের মতো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) ডাক পান এই ডানহাতি উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। তবে ষোড়শ আসরে টাইগার ব্যাটারের যাত্রাটা সুখকর হয়নি। ছন্দহীন পারফরম্যান্সে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে একটি ম্যাচের বেশি খেলার সুযোগ হয়নি লিটনের। আইপিএল চলাকালেই এবার দেশে ফিরলেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে কার্যত এবারের আইপিএল অধ্যায় শেষ হয়ে গেল এই টাইগারের। লিটনের দেশে ফেরার খবরটি জানিয়েছে তার দল কলকাতা নাইট রাইডার্স। কারণ তার দেশে ফেরার খবর অন্য কোনভাবে জানার সুযোগ ছিলনা।
 
ফ্র্যাঞ্চাইজিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারত থেকে পারিবারিক কারণে জরুরিভিত্তিতে বাংলাদেশে ফিরে গেছেন লিটন দাস। কেকেআরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পারিবারিক চিকিৎসাজনিত কারণে লিটন দাসকে বাংলাদেশে ফিরতে হয়েছে। এই কঠিন সময়ে তার এবং তার পরিবারের প্রতি আমাদের শুভ কামনা রইলো।’ আইপিএলের চলতি আসরের নিলাম থেকে দুই বাংলাদেশি, সাকিব আল হাসান এবং লিটন দাসকে দলে ভেড়ায় কলকাতা নাইট রাইডার্স। ব্যক্তিগত কারণে ষোড়শ আসরে অংশই নেননি সাকিব। এবার লিটনও আসর শেষ না করেই ফিরলেন দেশে। গত ৩১শে মার্চ শুরু হয় আইপিএলের চলতি আসর। জাতীয় দলের ব্যস্ততার কারণে কলকাতার প্রথম তিন ম্যাচে স্কোয়াডে ছিলেন না লিটন দাস। গত ৯ মার্চ আইপিএল খেলতে ভারতে যান তিনি। গত ২০শে এপ্রিল দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে কলকাতার ম্যাচে সুযোগ হয় উইকেটরক্ষক ব্যাটার লিটনের। তবে ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি তিনি। মাত্র ৪ রানে ফেরেন সাজঘরে।
 
সেই ম্যাচটি কলকাতাও হেরে যায় ৪ উইকেটে। এরপর আরও দুই ম্যাচ খেলে কেকেআর, একটিতেও সুযোগ হয়নি লিটনের। এর আগ দলের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য লিটনকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলেও শোনা গেছে। পেস বোলার নিয়ে সমস্যায় আছে কেকেআর। লুকি ফার্গুসন এবং টিম সাউদি দু’জনই ব্যর্থ। সেই সঙ্গে আন্দ্রে রাসেলও ছন্দে নেই। তাই পেস বোলার এবং ফিনিশার হিসেবে সর্বশেষ ম্যাচে ডেভিড ওয়াইজিকে নেওয়া হয়। তবে লিটনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এই ধরনের পরিস্থিতি এবারই নতুন নয়। জাতীয় দলের হয়েও তিনি মুখোমুখি হয়েছেন বাজে দুঃস্বপ্নের। সে সময় কত তীর্যক মন্তব্য ও সমালোচনা সামলে লিটন নিজের জাত চিনিয়েছেন। ফলে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটারদের একজন হয়ে ওঠেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ৮ ম্যাচে ৩ জয় ও ৫ হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে আইপিএল টেবিলের সপ্তম স্থানে কলকাতা নাইট রাইডার্স। শীর্ষে থাকা রাজস্থান রয়্যালসের পয়েন্ট ১০। আইপিএল ভ্রমণের ১৯ দিনে লিটনের প্রাপ্তি কী তাই এখন আলোচনার বিষয়বস্তু। ‘ওরা কি সুযোগ পাবে?’ প্রশ্নটা করেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
 
বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার মোস্তাফিজ ও লিটনকে বিসিবি অনাপত্তিপত্র দেবে কিনা, এমন প্রশ্নে কথাটা বলেছিলেন পাপন। না, আইপিএলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন তারা। ভারতীয় প্রতিযোগিতায় মোস্তাফিজের আগে খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও এবারই প্রথম জমকালো টি-টোয়েন্টি লিগে খেললেন লিটন। তো লিটনের অভিজ্ঞতা কেমন হলো? জাতীয় দলের ব্যস্ততা থাকায় আইপিএলের মাঝপথেই ফেরার কথা ছিল এই উইকেটকিপারের। তবে লিটন ফিরলেন আরও আগে। জরুরি পারিবারিক কারণে আগেভাগেই দেশে ফিরতে হয়েছে তাকে। শুক্রবার কলকাতা নাইট রাইডার্স ক্যাম্প ছেড়ে ধরতে হয়েছে দেশে ফেরার বিমান। সময়ের হিসাব বলছে, এবারের আইপিএলে ১৯ দিন কাটিয়ে আসলেন লিটন। নতুন এই মিশনে প্রাপ্তির খাতায় কী যোগ করতে পেরেছেন তিনি? ২০২৩ সালের আইপিএল নিলামে ভিত্তিমূল্যের ৫০ লাখ রুপিতে কলকাতা কিনে নেয় লিটনকে। সাকিব আল হাসানের পর আরও এক বাংলাদেশি ক্রিকেটারের ‘ঘর’ হলো কলকাতা।
 
এরপর সেই থেকে আইপিএলের অপেক্ষা, কবে কেকেআরের জার্সিতে দেখা যাবে লিটনকে! কিন্তু জাতীয় দলের ব্যস্ততায় অপেক্ষার সময় কেবল দীর্ঘই হচ্ছিল। অবশেষে বিসিবি থেকে অনাপত্তিপত্র নিয়ে কলকাতা ক্যাম্পে যোগ দিলেও মাঠে নামার সুযোগ হচ্ছিল না লিটনের। কলকাতার ম্যাচ এলেই বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে আশা জাগে, এই বুঝি আইপিএলে অভিষেক হয়ে যাচ্ছে লিটনের। কিন্তু ম্যাচের পর ম্যাচ যায়, লিটনের সুযোগ হয় না। অবশেষে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। দিল্লির বিপক্ষে ম্যাচে একটি বাউন্ডারি যদিও মেরেছেন, তবে যেভাবে আউট হয়েছেন, লিটন নিজেই হয়তো হতাশ! মুকেশ কুমারের শর্ট বল মারতে গিয়েও কেন জানি মারলেন না। বৃত্তের ঠিক বাইরে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন মাত্র ৪ রানে। আইপিএল অভিযানে ১৯ দিনের ভ্রমণে লিটন পেয়েছেন ওই একটি ম্যাচই। যেখানে ব্যাট হাতে ৪ বলে ৪ রানের পর উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে নড়বড়ে পারফরম্যান্স। মাঠের খেলায় প্রাপ্তির হিসাব কষলে তেমন কিছুই নেই লিটনের জন্য। না ব্যাটিংয়ে, না কিপিংয়ে। সেকারণেই হয়তো কেকেআরের জার্সিতে আর সুযোগ আসেনি তার।
 
মাঝে কয়েক ম্যাচ বেঞ্চ গরম করার পর হয়তো আরেকটি সুযোগ আসতো লিটনের। শনিবার গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলবে কলকাতা। ইডেন গার্ডেনসের ম্যাচটিতে খেলার সম্ভাবনা ছিল লিটনের। এ কারণেই কিনা নেটে ঘাম ঝরাতে দেখা গেছে তাকে। কিন্তু ওই অনুশীলনের মাঝেই খবর আসে, পরিবারের এক সদস্যের অসুস্থতার। এক ম্যাচ দিয়ে পৃথিবীর কোনও ক্রীড়াবিদকেই মূল্যায়ন করা যায় না। তাই আইপিএলে লিটন ব্যর্থ নাকি সফল, সেই আলোচনার সুযোগ নেই। তবে প্রাপ্তির কথা আসলে ১৯ দিনের ভ্রমণে অনেক কিছুই সঙ্গী হয়েছে লিটনের। নামিদামি সব খেলোয়াড়ের সঙ্গে ড্রেসিং রুম শেয়ার করার ব্যাপার তো আছেই, একই সঙ্গে আইপিএলের উত্তাপ গায়ে মেখে অভিজ্ঞতার ভান্ডার আরও সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। তাছাড়া ভারতীয়দের কাছে ‘বিশ্বকাপ’ হিসেবে বিবেচিত আইপিএল মঞ্চে দাঁড়ানোর সুখস্মৃতিও তো কম প্রাপ্তি নয়!
 
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, লিটন কি আইপিএলে আবার ফিরবেন? দেশে ফিরে আসায় তিনি কলকাতার পরের ম্যাচ নিশ্চিত মিস করছেন। এরপর কেকেআরের পরের ম্যাচ ৪ মে। এদিকে ৫ মে ইংল্যান্ডে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা বাংলাদেশ দলের। ওই ম্যাচের আগেই সেখানে যাওয়ার কথা লিটনের। অর্থাৎ, আপাতত কলকাতার ক্যাম্পে ফেরার সম্ভাবনা নেই তার। ইংল্যান্ডে হতে যাওয়া আয়ারল্যান্ড সিরিজ শেষেই কেবল আইপিএলে ফেরা সম্ভব লিটনের। সেটার কতটা প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সময়ই বলে দেবে। তবে তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ আশরাফুল ও আব্দুর রাজ্জাক রাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজার মতোই ভাগ্যবরণ করতে হয়েচে লিটনকে।
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।