দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : তুরস্কের জনগণ দেশটির আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। এখন চলছে ভোট গণনা। নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান স্পষ্ট ব্যবধানেই এগিয়ে রয়েছেন। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম হওয়ায় খুব সম্ভবত রান-অফ নির্বাচনের দিকেই যাচ্ছে তুরস্ক। অর্থাৎ দেশটিতে দ্বিতীয় দফায় আবারও ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (১৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার তুরস্কের নাগরিকরা দেশটির আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। আর এই নির্বাচনেই নির্ধারিত হতে চলেছে দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের ভবিষ্যৎ।
তুরস্কের অন্যতম প্রধান সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, রোববার উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটদান শেষ হওয়ার পর গণনা শুরু হয়। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৮ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট গণণা সম্পন্ন হয়েছে। এতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান স্পষ্ট ব্যবধানেই এগিয়ে রয়েছেন। নির্বাচনে এখন পর্যন্ত তার প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। অন্যদিকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কেলিকদারোগলোর প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। অন্যদিকে সিনান ওগান নামে তৃতীয় অপর প্রার্থী এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ ভোট। এর আগে বুথফেরত জনমত জরিপে, এবারের নির্বাচনে দেশটির ছয়-দলীয় জোটের নেতা ও এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কেলিকদারোগলোকে এগিয়ে রাখ হয়েছিল। গত শুক্রবারের দু’টি জনমত জরিপে সরাসরি জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশের বেশি ভোট তিনি পেতে যাচ্ছেন বলে দাবি করা হয়েছিল।
তবে নির্বাচনের সকল আগাম জরিপের পরিসংখ্যান উল্টে দিয়ে ভোটে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। অবশ্য নির্বাচনে এগিয়ে থাকলেও কোনও প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে বিজয়ী হতে পারবেন না। মূলত রোববারের এই নির্বাচনে যদি কেউই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না জিততে পারেন তাহলে দুই সপ্তাহ পর অর্থাৎ আগামী ২৮ মে আবারও নির্বাচন (রান অফ) অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে দ্বিতীয় দফার ভোট অনুষ্ঠিত হলে তাতে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কেলিকদারোগলো। তিনি বলেছেন, তিনি প্রাথমিক ফলাফলের বিরোধিতা করছেন না, তবে কোনও পরিসংখ্যান তিনি হাজির করেননি এবং ভোটের দৌড়ে নিজেকে এগিয়ে রাখার দাবিও করেননি। এর পরিবর্তে তিনি বলেন: ‘আমরা এই নির্বাচনে দ্বিতীয় রাউন্ডে জিতব’। খুব সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় কেলিকদারোগলো আরও বলেন, এরদোয়ান এবং তার একে পার্টি তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল পায়নি। তার দাবি, ‘প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান জনগণের কাছ থেকে আস্থার ভোট পাননি। সমাজে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ৫০ শতাংশের বেশি।’
এদিকে নির্বাচনে এগিয়ে থাকলেও প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলছেন, আমরা জানি না প্রথম দফায় নির্বাচন শেষ হতে চলেছে কিনা। তিনি বলেন, ‘প্রথম রাউন্ডে নির্বাচন শেষ হতে চলেছে কিনা আমরা জানি না। আমাদের ভোটাররা যদি দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমরা সেটাকেও সম্মান করব। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা এই রাউন্ডেই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে (নির্বাচনী কর্মকাণ্ড) শেষ করব। এখনও ভোট গণনা বাকি আছে।’ তুরস্কের পার্লামেন্টে তার জোট পিপলস অ্যালায়েন্সকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়ার জন্য এরদোয়ান তার ভোটারদের ধন্যবাদ জানান। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের জোটে তার একে পার্টি, অতি-জাতীয়তাবাদী দল এমএইচপি-সহ জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামি দলগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দেশকন্ঠ/অআ