দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন : আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স এখন সবার মুখে মুখে। অষ্ট্রেলিয়া, পাকিস্তানের মতো দেশকে পেছনে ফেলে তৃতীয় হয়ে শেষ করেছে তামিম ইকবালের দল। সামনে বিশ্বকাপ তার আগে অবশ্য এশিয়া কাপের আসর রয়েছে। তবে এশিয়া সেরা আসরটির ভেন্যু এখনো নির্ধারিত হয়নি। বাংলাদেশকে স্বাগতিক দেশ হওয়ার প্রস্তাব করা হলেও সেটি গ্রহণ করা হয়নি। শোনা যাচ্ছে শ্রীলংকার নাম। তবে বাংলাদেশ দল কিন্তু এশিয়া কাপে চোঁখ রেখেছে বিশ্বকাপে। এবার এককাঠি এগিয়ে সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখছে লাল সবুজ প্রতনিধিরা। সেখানে কেমন হতে পারে বাংলাদেশ দল, সেটা নিয়েই আলোচনা চলছে। এখন খোদ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কথা বলেছেন কারা কারা থাকবে পারেন বাংলাদেশ দলে। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়ে প্রতিটি দল এখনই পরিকল্পনা শুরু করেছে। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। ইতোমধ্যে টাইগাররা বিশ্বকাপ সুপার লিগে নিজেদের শেষ সিরিজও খেলছে। যেখানে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেন তামিম-লিটনরা। বৃষ্টির কারণে প্রথম ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। বিশ্বকাপ সুপার লিগে বর্তমানে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয়স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
২৪ ম্যাচে ১৫ জয়ে ১৫৫ পয়েন্ট দলটির। শীর্ষে নিউজিল্যান্ড ও দ্বিতীয়স্থানে ইংল্যান্ড। এদিকে সদ্য আইরিশ সিরিজ খেলে এখন ছুটিতে রয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশের পরের সিরিজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে। তার আগেই অবশ্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের একাদশের কেমন হতে পার তার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন। সংবাদমাধ্যমকে পাপন জানান, বিশ্বকাপ একাদশে তামিম ইকবাল, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও তাওহীদ হৃদয়ের জায়গা পাকা। তবে ৭ নম্বর ব্যাটিং অর্ডারের বিবেচনায় রয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি ও মেহেদী হাসান মিরাজ। গণমাধ্যমকে পাপন বলেন, ‘অলরাউন্ডার চাইলে আফিফ আছে, মোসাদ্দেক আছে ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও আছে। সেও বল করে দিতে পারব। রিয়াদ ভালো বল করে, আমি দেখেছি, ঘরোয়া ক্রিকেটেও ও ভালো। পার্থক্যটা হচ্ছে শুধু ফিল্ডিংয়ে। ভালো ফিল্ডিং চাইলে এই তিনজনের মধ্যে আফিফ সবার উপরে’।
মোসাদ্দেকও রিয়াদের চেয়ে ভালো হতে পারে বলেও মনে করছেন বিসিবি বস। ফিল্ডিংয়ের বেলায় আফিফ-মোসাদ্দেককে এগিয়ে থাকলেও অভিজ্ঞতায় এগিয়ে রিয়াদ। এ সম্পর্কে পাপন বলেন, ‘অভিজ্ঞতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখন আমরা যাদের সঙ্গে খেলছি আর বিশ্বকাপে যাদের সঙ্গে খেলব, দুটোর পরিস্থিতি কিন্তু এক না। তাই ব্যাপারটা (খেলোয়াড় বাছাই) কঠিন।’ ৫০ ওভারের এই টুর্নামেন্টের ১৩তম সংস্করণটি আগামী অক্টোবরে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। যা ৫ অক্টোবর শুরু হয়ে ১৯ নভেম্বর শেষ হতে পারে। বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) অন্তত ১২টি স্টেডিয়ামের সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছে। যেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। মোট ৪৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ৪৬ দিনের এই টুর্নামেন্টে। এছাড়া ভেন্যু হিসেবে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামসহ ব্যাঙ্গালুরু, চেন্নাই, দিল্লি, ধর্মশালা, গুয়াহাটি, হায়দ্রাবাদ, কলকাতা, লক্ষ্মৌ, ইন্দোর, রাজকোট ও মুম্বাই রয়েছে সংক্ষিপ্ত তালিকায়। যদিও ফাইনাল ছাড়া আর কোনো ম্যাচের ভেন্যু এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের এখনও বাকি প্রায় পাঁচ মাস। চলতি বছরের অক্টোবরে ভারতে বসবে ক্রিকেটের এই মেগা আসর। এই টুর্নামেন্টের স্কোয়াডে কারা থাকবেন, এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। বিশেষত কয়েকটি পজিশন নিয়ে বেশ জোর আলোচনা রয়েছে কয়েকজনের ব্যাপারে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড টুর্নামেন্টের ফাইনালে প্রধান অতিথি হিসেবে এসে বিশ্বকাপ দল নিয়ে একটা পরিষ্কার ধারণা দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। শেষ দুই সিরিজে সুযোগ না পেলেও পাপনের বিবেচনায় এখনো আছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পাপন বলেন, ’আমি বিশ্বাস করি, ব্যাটিং পজিশনে ১ থেকে ৬ নম্বর পর্যন্ত ঠিক হয়ে গেছে। পেস এবং স্পিন বিভাগও থিতু হয়ে গেছে। ধারাবাহিক পারফর্ম করলে ওপেনিংয়ে ফিরতে পারেন নাঈম শেখ, এনামুল হক বিজয়রা। একমাত্র ৭ নম্বর জায়গাটা আমাদের মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। মাহমুদউল্লাহসহ অনেকই্ এই পজিশনের জন্য রয়েছেন’। তিনি আরও বলেন, ’বর্তমানে এই পজিশনে ইয়াসির রাব্বিকে খেলিয়েছি। তবে আফিফ, মাহমুদউল্লাহ এমনকি মোসাদ্দেককেও এই পজিশনের জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে। আমি নিশ্চিত না, এসব আমার অনুমান। ১৫ সদস্যের চূড়ান্ত দল নির্ধারণ করবেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু এবং ম্যাচের জন্য চূড়ান্ত একাদশ ঠিক করবেন অধিনায়ক’।
পেসারদের নিয়ে পাপনের ব্যাখ্যা, ’দলে এখন পেসারের সংখ্যা আগের যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি। আমার ধারণা তিনটা পেসার খেলবে নিশ্চিত। সাকিব যদি খেলে একটা স্পিনার খেলবে। পাঁচটা বোলার ছাড়া তো বিশ্বকাপ খেলবেন না। হাসান আছে, তাসকিন, শরীফুল, এবাদত, মোস্তাফিজ আছে, যে কেউ খেলতে পারে। চারজন পেসারও খেলতে পারে। যদি তিনজন স্পিনার নিয়ে খেলে তাহলে ছয়টা বোলার নিয়ে খেলতে গেলে বাড়তি স্পিনার লাগবে। বাড়তি থাকে একটা জায়গা সেখানে আছে মেহেদী হাসান মিরাজ। আমার মনে হয় না কেউ বলবে মিরাজকে বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়া উচিত’। এছাড়া সাংবাদিকদের একটা দল তৈরি করে দেওয়ারও কথা বলছেন তিনি। তবে খুব বেশি চমক যে থাকছেনা এটা বলাই যায়।
দেশকণ্ঠ/আসো