দেশকন্ঠ ডেস্ক : টানা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ এই আগ্রাসনের কারণে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বিমান ও ড্রোন হামলাও সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এখন হামলাকারী ড্রোন এবার পৌঁছে গেছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতেও। আর এই বিষয়টি সামনে এনে ইউক্রেন রাশিয়ান নাগরিকদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মস্কোতে ড্রোন হামলার ঘটনার পর পুতিন একথা বলেন। বুধবার (৩১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার রাজধানী মস্কোতে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং ইউক্রেন রাশিয়ানদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। তবে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সন্তোষজনকভাবে সেই হুমকি মোকাবিলা করেছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অন্তত আটটি ড্রোন সামান্য ক্ষতি করেছে। কিন্তু এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে কিয়েভ। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এই প্রথম রাশিয়ার রাজধানী শহরটি একাধিক ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তু হলো। মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন বলেছেন, কেউ গুরুতর আহত হয়নি। বেশ কয়েকটি ড্রোন মস্কোর অভিজাতপূর্ণ পশ্চিম শহরতলীতে পড়ে। এখানে সাধারণত সিনিয়র রুশ কর্মকর্তারা বসবাস করেন।
রাশিয়ান টিভিতে বক্তৃতাকালে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সদর দপ্তরে রাশিয়ার আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় এই হামলাটি চালানো হয়েছে। অবশ্য আসলেই এ ধরনের কোনও হামলা হয়েছে কিনা বিবিসি স্বাধীনভাবে তা যাচাই করতে পারেনি। পুতিন বলেন, ‘(ওই হামলার) প্রতিক্রিয়ায়, কিয়েভ সরকার এক ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছে। আর সেটি হচ্ছে রাশিয়াকে ভয় দেখানোর চেষ্টার পথ, রাশিয়ার নাগরিকদের ভয় দেখানো এবং আবাসিক ভবনগুলোর বিরুদ্ধে বিমান হামলার পথ।’ রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটি স্পষ্টতই সন্ত্রাসী কার্যকলাপের লক্ষণ। তারা আমাদেরকে উস্কানি দিচ্ছে।’
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কিয়েভের প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন ‘ইউক্রেনের নেতৃত্বকে সন্ত্রাসবাদসহ আরও বেপরোয়া অপরাধমূলক কাজের দিকে ঠেলে দিচ্ছে’। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ওয়াশিংটনের অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করে বলেছে, তারা রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলাকে সমর্থন করে না। যুক্তরাষ্ট্র এখনও মস্কোতে হওয়া ড্রোন হামলার তথ্য সংগ্রহ করছে বলেও জানানো হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, মস্কোতে হামলার লক্ষ্যে ধেয়ে আসা আটটি ড্রোনের সবগুলোকেই বাধা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘এই আটটির মধ্যে তিনটি ড্রোনকে ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়ার দিয়ে পরাভূত করা হয়েছে। পরে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং যে লক্ষ্যবস্তুর দিকে তারা ধেয়ে যাচ্ছিল তা থেকে বিচ্যুত হয়।’ এছাড়া মস্কো অঞ্চলে প্যান্টসির-এস সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম দিয়ে আরও পাঁচটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয় বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
দেশকন্ঠ/আসো