• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০৩:৫৪    ঢাকা সময়: ১৩:৫৪
টেস্টে ৮৯ বছর পর বড় জয়ের ঘটনা

৫৪৬ রানে জিতল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ : ৩৮২ এবং ৪২৫/৪ [ডিক্লিয়ার]
আফগানিস্তান : ১৪৬ এবং ১১৫
ফল : বাংলাদেশ ৫৪৬ রানে জয়ী
 
আরিফ সোহেল : জয়টা দ্বিতীয় দিনই সুবাস ছড়াচ্ছিল মিরপুরে। তৃতীয় দিন তা মৌ মৌ ঘ্রাণে ছড়িয়ে পড়ছিল চারিদিক। চতুর্থ দিন বাকি ছিল আরেকটি ম্যাজিক শো। তা সম্পন্ন করেই তাসকিন রের্কড জয়ের ল্যান্ডমার্ক স্পর্শ করেছেন। সঙ্গে পেয়েছেন তার বোলিং ওপেনিং পার্টনার সফিউলকে। তাদের ৪ ও ৩; ৭-এর সঙ্গে মেহেদী তাইজুলের একে একে সবাই ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে। আগ্রাসী মেজাজেই বোলিং করছিলেন তাসকিন। ৩৩তম ওভারের শেষ বলটি আফগান জহির খানের কনুইয়ে লেগেছিল। তখন ৯ উইকেট নেই। এই অবস্থায় শেষ ব্যাটার হিসেবে জহির আহত হয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরে গেলে ম্যাঠে তখন রাজ্যের উচ্ছ্বাস। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সোয়া তিন দিনে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। রান বিবেচনার এই জয় ৮৯ বছরের রের্কড ছাড়িয়ে গেছে।
 
বাংলাদেশ শান্তর অশান্ত ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে ৩৮২ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে মমিনুলের ফিরে আসা ম্যাচে ৪২৫/৪ করে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথম ইনিংসের ১৪৬ রানের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সফরকারীরা; অলআউট হয়েছে ১১৫ রানে। তাসকিন-সফিউল আগুনে বোলিং করে বাংলাদেশের ৫৪৬ রানের জয় নিশ্চিত করেছে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে রানের বিচারে এটি তৃতীয় বড় জয়। গত ৮৯ বছরে এত বড় ব্যবধানে আর কোনও দল টেস্ট জিততে পারেনি। এটি বাংলাদেশের সবথেকে বড় ব্যবধানে টেস্ট জেতার রেকর্ড।
 
টেস্ট ক্রিকেটে আফগানিস্তান তেমন শক্তিশালী দল হিসাবে পরিচিত নয়। তাদের সেরা অস্ত্র রশিদ খান খেলেননি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। তাতে অবশ্য লিটনদের কৃতিত্ব কমছে না। বাংলাদেশ দু’ইনিংসে করেছে যথাক্রমে ৩৮২ রান এবং ৪ উইকেটে ৪২৫ রান। জবাবে আফগানিস্তানের দু’ইনিংসে রান ১৪৬ এবং ১১৫। মিরপুরের ২২ গজে আফগানদের মোট রানের থেকে একাই ৯ রান বেশি করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত! তিনি প্রথম ইনিংসে করেন ১৪৬ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১২৪ রান।
 
টেস্ট ক্রিকেটে সব থেকে বেশি রানের ব্যবধানে জয়ের নজির রয়েছে ইংল্যান্ডের। ১৯২৮ সালে তারা অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল ৬৭৫ রানে। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তারা ১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল ৫৬২ রানে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ৫৪৬ রানে জয় থাকছে এই তালিকার তৃতীয় স্থানে। এর আগে বাংলাদেশের রানের নিরিখে সব থেকে বড় টেস্ট জয় ছিল জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে ২২৬ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ।
 
পাঁচ দিনের ম্যাচ সোয়া তিন দিনে জিতেছেন লিটনরা। রান তুলেছেন এক দিনের ক্রিকেটের মেজাজে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটাররা ওভার প্রতি ৪.৪৪ রান তুলেছেন। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তুলেছেন ওভার প্রতি ৫.৩১ রান! সাদা বলের ক্রিকেটের মেজাজে টেস্টে ব্যাট করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। অন্য দিকে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বেন স্টোকসরা প্রথম ইনিংসে ওভার প্রতি ৫.০৩ রান তুলেছেন।
 
জয়ের জন্য ৬৬২ রানের লক্ষ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিলেন আফগানরা। অতি বড় আফগান সমর্থকও এই ম্যাচ জেতার কথা ভাবেননি। হাসমতুল্লাহ শাহিদির দল জেতেওনি। চাপের মুখে কার্যত তাসের ঘরের মতোই ভেঙে পড়েছে তাঁদের দ্বিতীয় ইনিংস। প্রথম ইনিংসে মিডল অর্ডারের তিন ব্যাটার কিছুটা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে তাও হয়নি। তিন নম্বরে নামা রহমত শাহ ৩০ রান দলের পক্ষে সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করিম জানাতের ১৮। তৃতীয় সর্বোচ্চ বাংলাদেশের দেওয়া অতিরিক্ত ১৬। বল হাতে দাপট দেখালেন শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদরা। শরিফুল ২৮ রানে ৩ উইকেট এবং তাসকিন ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ এবং এবাদত হোসেন। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচ হারলেও আফগান ব্যাটাররাও দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। প্রথম ইনিংসে ওভার প্রতি ৩.৭৪ রান এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ওভার প্রতি ৩.৪৮ রান তুলেছেন তাঁরা। পাল্টা আক্রমণের কৌশল ফলপ্রসু না হলেও নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করার চেষ্টা করেছেন তাঁরাও। 
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।