দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে উষ্ণতা। ফলে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মতো ইউরোপেও গ্রীষ্মকাল ক্রমশ দীর্ঘতর হচ্ছে এবং বাড়ছে ঝড়-বৃষ্টি বন্যা। এ ধরনের আবহাওয়া প্রাণঘাতী রোগবাহী পতঙ্গ মশার একাধিক বিপজ্জনক প্রজাতির বংশ বিস্তারে সহায়ক এবং অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ডেঙ্গু, পীতজ্বর, চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব ব্যাপক হারে বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (ইসিডিসি)। ইসিডিসির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দীর্ঘ ও প্রলম্বিত গ্রীষ্মকাল এবং ঝড়-বৃষ্টি-বন্যা কারণে এডিস অ্যালবোপিকটাস, এডিস এজিপ্টি প্রজাতির মশার বিস্তারের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। যদি আবহাওয়ার এই অবস্থা সামনের দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকে সেক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, পীতজ্বর, চিকুনগুনিয়ার মতো রোগের বিস্তার বাড়বে। কারণ এই দু’টি প্রজাতিই জিকা, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসসহ অন্যান্য রোগের ভাইরাসের সরাসরি বাহক।’
২০১৩ সালে ইউরোপের আটটি দেশে ১১৪টি অঞ্চলে প্রথম এডিস মশার এই দু’টি প্রজাতি শনাক্ত হয়। চলতি বছর ১৩টি দেশের ৩৩৭টি এলাকায় দু’টি প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইসিডিসির প্রতিবেদনে। ইসিডিসির পরিচালক আন্দ্রেয়া অ্যামন মার্কিন বার্তাসংস্থা এপিকে বলেন, ‘যদি এডিস মশার এই দুই প্রজাহির বিস্তার অব্যাহত থাকে, সেক্ষেত্রে সামনের দিনগুলোতে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও পীতজ্বরে আক্রান্ত রোগী এবং এসব রোগে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়বে। আমাদের এখন উচিত মশার বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। আন্দ্রেয়া অ্যমন বলেন—পানি জমতে না দেওয়া, পরিবেশবান্ধব কীটনাশক ব্যবহার, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, ঘুমানোর সময় মশারির ব্যবহার, শরীরের অধিকাংশ অংশ ঢেকে রাখে— এমন পোশাক পরিধান ও মশা নিরোধক ওষধি মলম/ক্রিম/ লোশন ব্যবহারের মাধ্যমে এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। এক সময় ম্যালেরিয়াকে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও প্রাণঘাতী মশাবাহিত রোগ বলে বিবেচনা করা হতো। তবে বর্তমানে সবচেয়ে বিপজ্জক মশাবাহিত রোগের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ডেঙ্গু। এই রোগে আক্রান্তদের ৮০ শতাংশই মৃদু উপসর্গে ভোগেন, তবে বাকি ২০ শতাংশের জীবন সংশয় দেখা দেয় এবং এই রোগের কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ বা টিকা নেই।
দেশকন্ঠ/অআ