দেশকন্ঠ অনলাইন : সহসাই কমছে না তাপদাহ। সারাদেশে বয়ে যাওয়া তীব্র গরম আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তাপদাহ চলতি মাসের পাশাপাশি মে মাসেও থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টিপাত না হলে তাপমাত্রা কমবে না। সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করতে পারে।
এ বছর এপ্রিলের শুরু থেকেই তাপমাত্রা বাড়তির দিকে। তীব্র গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জনজীবন। গরমের কারণে নানা অসুখে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে বাড়ছে রোগীদের ভিড়। গরম থেকে রেহাই পেতে বাইরে চলাফেরা সীমিত করার পাশাপাশি ও প্রচুর তরল পানের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
আগামী অন্তত পাঁচদিন আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এইসব তথ্য জানানো হয়েছে।
তাপপ্রবাহের তীব্রতা আরও বাড়ার আশঙ্কায় শুক্রবার সারাদেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার বার্তা দিয়েছে তারা।
শনিবার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
গত ১৬ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গায়, ১৭ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গা এবং সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে। তবে পরিবেশগত কারণে অনুভূত তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রির বেশি বলে জানাচ্ছে আবহাওয়ার সংক্রান্ত অ্যাপ আকুওয়েদার।
তীব্র রোদ-গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি ও তীব্র তাপদাহ। যার প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যে। জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। ডাক্তারের চেম্বারে ও হাসপাতালে দীর্ঘ হচ্ছে রোগীর সিরিয়াল। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বারান্দায় তিল পরিমাণ ঠাঁই নাই।
কাঠফাটা রোদ ও তীব্র গরমে বিপর্যস্ত খুলনার জনজীবন। সূর্য ওঠার পর থেকেই বাড়তে থাকে তাপমাত্রার পারদ। অসহনীয় তাপদাহে কষ্ট বাড়ছে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে এ অঞ্চলের দিনমজুর, রিকশাওয়ালা, শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ ও কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশের সব স্কুল-কলেজ সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ঈদের ছুটি শেষে রোববার খোলার কথা থাকলেও এখন তা খুলবে ২৮ এপ্রিল। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর ক্লাসও।
এরইমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবীদের কালো গাউন পরার আবশ্যকতা শিথিল করা হয়েছে।
প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ার কারণে জরুরি স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। হাসপাতালে হিট স্ট্রোকের রোগীও বাড়তে পারে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দেশকন্ঠ //