দেশকন্ঠ অনলাইন : পিরোজপুরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের স্মার্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে নিয়ে আসা হচ্ছে। ঘরে বসেই তারা হাসপাতালের বর্হিবিভাগের সেবা নিতে পারবেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) অধিদপ্তরের পিরোজপুরের সহকারী প্রোগ্রামার এর কার্যালয় এই উদ্ভাবনী ধারনা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
পিরোজপুরের জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান এর অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা এবং দিক নির্দেশনায় জেলা আইসিটি কার্যালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার মোহাম্মদ আবুল হোসেন এই প্রকল্পটির কাজ শুরু করেন। ‘পিরোজপুর সরকারি হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামের এই প্রকল্পটি চলতি বছরের জুনের মধ্যেই বাস্তবায়িত হবে। এ লক্ষ্যে পুরোদমে আনুষাঙ্গিক সকল কাজ সম্পন্ন করে সরকারি ওয়েব সাইটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হচ্ছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সকল রোগীদের সকল তথ্য একীভূত করা।
তিনি জানান, একজন রোগী হাসপাতালে এসে অনলাইনের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবে এবং তার একটি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর থাকবে। পরবর্তীতে তিনি এই আইডেন্টিফিকেশন নম্বরটি ব্যবহার করে যতবার প্রয়োজন ততবারই সেবা নিতে পারবেন। প্রত্যেক রোগীর আলাদা-আলাদা তথ্য ভান্ডারে কখন তার কি অসুখ হয়েছিল, কোন চিকিৎসক তাকে ঔষধ গ্রহণের ব্যবস্থাপত্র দিয়েছিল, কি কি ঔষধ সেই ব্যবস্থাপত্রে লেখা ছিল এসকল তথ্য ডাটাবেইজে সংরক্ষিত থাকবে। এর বাইরেও আইডেন্টিফিকেশনের রোগী হাসপাতালের বাইরে অথবা বিদেশের কোন চিকিৎসকের চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করে থাকলে অসুখের নাম, ঔষধের নাম, তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সকল তথ্য এই ডাটাবেইজে সংরক্ষণ করা হবে।
এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের হাতে লেখা ব্যবস্থাপত্রে রোগের নাম এবং ঔষধের নাম সু-ষ্পষ্টভাবে লেখা না থাকায় ফার্মেসীর ঔষধ বিক্রেতাসহ রোগী এবং তার নিকটজনের অসুখ এবং ঔষধ এর বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারনাও থাকে না। সেক্ষেত্রে কম্পিউটার প্রিন্ট ব্যবস্থাপত্র রোগী হাতে পেলে চিকিৎসাজনিত অনেক সমস্যারই সমানধান হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যকোন কারণে রোগী হাসপাতালে পৌঁছাতে সক্ষম না হলেও হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বর্হিবিভাগে চিকিৎসকের সাথে অনলাইনে যোগাযোগ করে সহজেই চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসক তার ডাটাবেইজে রোগের সকল হিষ্টোরী ও অন্যান্য চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র চোখের সামনে দেখে খুব সহজেই ব্যবস্থাপত্র দিতে পারবেন। ব্যবস্থাপত্র হারিয়ে গেলেও বা কোন কারণে বিনষ্ট হলেও ডাটাবেইজে তার সকল তথ্য থাকায় চিকিৎসা সেবা নিতে বিন্দুমাত্র সমস্যা হবে না। এই ডাটা বেইজে সরকার অনুমোদিত দেশের সকল ঔষধের নামও সংরক্ষিত থাকবে।
হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর উদ্ভাবনী ধারনাটি পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের। তিনি বলেন, এই প্রকল্পটি পাইলটিং পর্যায়ে রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, দেশের সকল হাসপাতালেই এক সময় এই প্রকল্প চালু হবে। বিদেশে বসেও যেকোন রোগী তার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অ্যাপস এর মাধ্যমে অনলাইনে তার সকল তথ্য জানতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানে এই স্মার্ট স্বাস্থ্য সেবা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হবে।
পিরোজপুরের আইসিটি কার্যালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের অনুপ্রেরনায় এবং সার্বিক দিক নির্দেশনায় এই প্রকল্পটি আসন্ন জুন মাসেই পুরোদমে চালু করা সম্ভব হবে। সাবেক জেলা সিভিল সার্জন ও পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের সাবেক আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরএমও ডা. রফিকুল ইসলাম দীপু বলেন এই স্মার্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু হলে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থায় এক আমূল পরিবর্তন সাধিত হবে এবং রোগীরা বিভিন্নভাবে উপকৃত হবে।
দেশকন্ঠ//