দেশকন্ঠ অনলাইন : বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকাই সিনেমার নায়ক ফারুকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার (১৫ মে)। ২০২৩ সালের আজকের এই দিনে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
তাকে স্মরণ করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয় বলে জানান শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য রত্না কবির।
নায়িকা রত্না বলেন, নায়ক ফারুক ভাইয়ের মৃত্যু বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আজ তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। তাকে স্মরণ করে শিল্পী সমিতিতে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়।
বাংলা চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেতা ছিলেন ফারুক। খুব অল্প সময়েই গ্রামীণ, সামাজিক ও রোমান্টিক সিনেমায় অভিনয় করে দর্শক-হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। স্কুলজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন ফারুক। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে যোগ দেন এবং সে সময়ে তার নামে প্রায় ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ছাত্রজীবনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাড়া-মহল্লায় নাটকে অভিনয় করতেন তিনি।
অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচিত ফারুক। চলচ্চিত্রের মানুষের কাছে তিনি সবার প্রিয় ‘মিঞা ভাই’। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক। ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ দুটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। এরপর ১৯৭৫ সালে গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ দুটি ব্যবসাসফল ও আলোচিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং সে বছর ‘লাঠিয়াল’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে ‘মিয়া ভাই’ সিনেমার সাফল্যের পর তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে মিয়া ভাই হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন তিনি।
‘সুজন সখী’, ‘নয়নমণি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সাহেব’, ‘আলোর মিছিল’, ‘দিন যায় কথা থাকে’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন নায়ক ফারুক। চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ২০১৬ সালে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ অনুষ্ঠানে তাকে আজীবন সম্মাননার পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশকন্ঠ//