দেশকণ্ঠ অনলাইন : আইপিএলে খেলা সব ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে। সাকিব আল হাসান সে স্বপ্ন অনেক আগেই পূরণ করেছেন। দুইবার কলকাতা নাইট রাইটার্সকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছেন। কিন্তু চলমান আসরে কোন দলেই খেলার সুযোগ পায়নি। বলা যায় কোন দলই তাকে নেয়নি। ভারতের দুঃখ এবার মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রে ঘোচাবেন নাম্বার ওয়ান এই অলরাউন্ডার। বলিউড কিংবদন্তী শাহরুখ খানের সঙ্গে আবারও জুটি বাঁধতে যাচ্ছে সাকিব। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষেই যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হবে মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি)। ৪ জুলাই শুরু হতে যাওয়া টুর্নামেন্টটির দ্বিতীয় আসরে এবার খেলবেন সাকিব আল হাসান। লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্সের হয়ে টুর্নামেন্ট মাতাবেন সাকিব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশি অলরাউন্ডারের খেলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে শাহরুখ খানের মালিকানাধীন ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। দলটি লিখেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ মেজর লিগ ক্রিকেটের টুর্নামেন্টে লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্সে যোগ দিচ্ছেন। শিগগির দেখা হচ্ছে সাকিব।’
সরাসরি সাইনিংয়ে সাকিবকে দলে নিয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস। প্রথমবারের মতো সুযোগ পাওয়া এই টুর্নামেন্টে দলে সতীর্থ হিসেবে পাবেন গত আসরে খেলা আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, জেসন রয়দের। ফ্র্যাঞ্চাইজিটিতে যোগ দেওয়ায় অনেকটা পুরোনো ডেরায় ফিরেছেন তিনি। কেননা আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়েই ২০১২ ও ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। ২০১১ থেকে শুরু করে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আইপিএলে কলকাতার হয়ে খেলেছেন সাকিব। পরে অবশ্য ২০১৭-১৮ পর্যন্ত সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়েও খেলেছেন তিনি। ২০২১ সালে অবশ্য পুনরায় কলকাতায় যোগ দেন তিনি। তবে সবশেষ তিন আসরে কোনো দলের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। আইপিএলের হয়ে সাকিবের খেলার স্মৃতিই নিজেদের বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরেছে লস অ্যাঞ্জেলেস। পুরনো সম্পর্কের সুত্র ধরেই তাকে দলে নেওয়া হয়েছে।
ফ্রাঞ্চাইজিটি লিখেছে, ‘সাকিব, অবশ্যই নাইট রাইডার্সের পরিবারের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। ২০১২ ও ২০১৪ সালের শিরোপা জয়সহ বিভিন্ন সময় কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এই জুলাইয়ে লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্সের জার্সিতে তাঁকে দেখার অপেক্ষা আর সইছে না।’ বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশ দল এখন যুক্তরাষ্ট্রে। এরই মধ্যে এলো নতুন খবর। আমেরিকার ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট মেজর ক্রিকেট লিগের (এমএলসি) দ্বিতীয় মৌসুমের জন্য লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্সের হয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্স, আইপিএলের কলকাতা নাইট রাইডার্স, সিপিএলে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স এবং আইএলটি-২০-এর আবুধাবি নাইট রাইডার্স একই ফ্র্যাঞ্চাইজির অধীনে। নাইট রাইডার্স গ্রুপের এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এমএলসির প্রথম মৌসুমে একদমই ভালো করতে পারেনি লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্স। তারা ছিল সবার শেষে। গতবারের দল থেকে নাইটরা এবার ধরে রেখেছে সুনিল নারি, আন্দ্রে রাসেল, জেসন রয়, স্পেন্সার জনসন, উম্মুক্ত চাঁদ, আলি খানসহ কয়েকজনকে। এমএলএসের প্লেয়ার্স ড্রাফট চলতি বছরের ২১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। ছয় দলের স্কোয়াড পূরণ করার জন্য বাড়তি একটি ড্রাফট অনুষ্ঠিত হবে ১৬ জুন। তার আগেই সাকিবকে দলে ভেড়ালো লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্স। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসর মাঠে গড়িয়ে ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ২৯ জুলাই। এদিকে বিশ্বকাপের একটি তালিকায় সাকিব এখনো সবার ওপরে অবস্থান করছেন। ৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ৯টিতেই খেলছেন সাকিব আল হাসান। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে বিশ্বকাপে অনেক রেকর্ড গড়েছেন তিনি। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় শীর্ষস্থানটা এখনো তাঁর দখলেই আছে। এশিয়ানদের দাপট টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উইকেট শিকারির তালিকায় বেশি।
প্রথম ১০ বোলারের ৮ জনই এশিয়ার প্রতিনিধি। ৪৭ উইকেট নিয়ে এই তালিকায় সবার ওপরে সাকিব। বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার খেলেছেন ৩৬ ম্যাচ এবং বোলিং করেছেন ৬.৭৮ ইকোনমিতে। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় ২, ৩ ও ৪ নম্বরে রয়েছেন শহীদ আফ্রিদি, লাসিথ মালিঙ্গা ও সাঈদ আজমল। ৩৯, ৩৮ ও ৩৬ উইকেট নিয়েছেন আফ্রিদি, মালিঙ্গা ও আজমল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উইকেট শিকারির তালিকায় ৫ থেকে ৮ নম্বরে অবস্থান করছেন অজন্তা মেন্ডিস, উমর গুল, রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তাঁদের মধ্যে মেন্ডিস ও গুল দুজনেই নেন ৩৫টি করে উইকেট। ৯ ও ১০ নম্বরে আছেন ডেল স্টেইন ও স্টুয়ার্ট ব্রড। দুজনে ৩০টি করে উইকেট নিলেও ইকোনমি রেটের কারণে এগিয়ে স্টেইন। সেরা দশে থাকা প্রত্যেকেই রান আটকেছেন প্রতিপক্ষ দলের। বোলিং করেছেন ৮-এর কম ইকোনমিতে। বিশ্বকাপে সাকিবের উইকেটের রেকর্ড খুব শিগগিরই যে ভাঙছে না, সেটা হলফ করেই বলা যায়।
দেশকণ্ঠ//