দেশকন্ঠ অনলাইন : যখন লিভারের কার্যকারিতা হ্রাস পায়, তখন আমাদের শরীরে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। লিভার মানব শরীরের একটি নিরব অঙ্গ। লিভার আমাদের শরীরের হজম, পুষ্টি সংশ্লেষণ এবং বিপাকীয় ফাংশনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। পেটের উপরের ডান চতুর্ভুজ অংশে অবস্থিত, লিভার আপনার শরীরের বাকি অংশে ফিউজ করার আগে পরিপাকতন্ত্র থেকে আসা রক্তকে ফিল্টার করে। এর আরেকটি কাজ হলো রাসায়নিক পদার্থকে ডিটক্সিফাই করা এবং ওষুধকে বিপাক করা।
যখন লিভারের কার্যকারিতা হ্রাস পায়, তখন আমাদের শরীরে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। তবে আমরা অনেকেই এসব লক্ষণ সম্পর্কে না জানার কারণে বুঝতে ব্যর্থ হয়। তাই চলুন জেনে নিই লিভারের সমস্যায় ভুগছেন বুঝবেন যে ৯ উপায়ে-
১. চোখ এবং ত্বকের বিবর্ণতা: লিভারের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে চোখে বিবর্ণতা দেখা যায়। এ ছাড়া ত্বক বা চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া জন্ডিসের লক্ষণ। যখন লোহিত রক্তকণিকা থেকে বিলিরুবিন নামক একটি হলুদ পদার্থের অত্যধিক পরিমাণ তৈরি হয়, তখন এ সমস্যা দেখা দেয়। লিভার সঠিকভাবে কাজ করতে না পারলে বিলিরুবিন পরিষ্কার করতে পারে না। ফলে শরীরে বিলিরুবিনের প্রভাব বাড়তে থাকে।
২. বমি বমি ভাব: অতিরিক্ত পেট খারাপের সমস্যা হলেও সাধান হতে হবে। লিভারের রোগের কারণে শরীরে টক্সিনের মাত্রা বেড়ে গেলে পেট খারাপ ও বমি বমি ভাব ও বমি হতে পারে। লিভার ফেইলিওরের ক্ষেত্রে বমি বা মলের সঙ্গেও রক্ত পড়তে পারে।
৩. পেট ফোলা এবং ব্যথা: লিভারের সমস্যা প্রায়ই শরীরের রক্ত প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটায়। এটি অন্ত্র এবং অন্যান্য অংশে চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে পেটের অঞ্চলে ব্যথা এবং ফুলে যায়। আপনি যদি হঠাৎ পেট ফুলে যাওয়া লক্ষ্য করেন এবং এটি যদি নিজে থেকে ঠিক না হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
৪. গাঢ় রঙের প্রস্রাব: প্রস্রাবের রঙ আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক কিছু জানান দেয়। গাঢ় প্রস্রাব ডিহাইড্রেশন নির্দেশ করে তবে শরীরে ক্ষতিকারক পদার্থের উপস্থিতিও বোঝায় যা লিভারের সমস্যা নির্দেশ করতে পারে।
৫. ফ্যাকাশে (কাদামাটি রঙের) মল: যখন লিভার পর্যাপ্ত পরিমাণে পিত্ত উৎপাদন করে না বা যদি এর প্রবাহ কোনোভাবে অবরুদ্ধ হয়, আপনার মল মাটির রঙের হয়ে যেতে পারে।
৬. পা ফোলা: লিভারের সমস্যা হলে অনেকেরই পা ও গোড়ালি ফুলে যায়। কম লবণ খাওয়া ও ওষুধের সাহায্যে এ সমস্যা কমানো যায়।
৭. ত্বকে চুলকানি: দীর্ঘস্থায়ী লিভারের সমস্যায় ভুগলে ত্বকে চুলকানি অনুভব করতে পারেন। ত্বকে ফুসকুড়ি না থাকলেও এমনটি ঘটে। এর ফলে ঘুমেও প্রভাব পড়তে পারে। ওষুধের সাহায্যে এই চুলকানিভাব কমানো যায়। তার আগে লিভারের রোগ শনাক্ত করা জরুরি।
৮. ক্ষুধা বা ওজন হ্রাস: লিভারের সমস্যার সময়, শরীর তার পুষ্টির ভাঙ্গা এবং হজম করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং আপনি স্বাভাবিকের মতো ক্ষুধার্ত বোধ করতে পারেন না। ক্ষুধা কমে যাওয়া আপনাকে সারাদিন অলস বোধ করাবে।
৯. ক্লান্তি: লিভার রোগের সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো আপনি সারাদিন ক্লান্তি অনুভব করবেন। শরীরে টক্সিন তৈরি হওয়ার কারণে এটি ঘটে। শরীর ও রক্ত প্রবাহে বিষাক্ত পদার্থ বেড়ে গেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাতেও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। ফলে হঠাৎ করেই বিভিন্ন বিষয় ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।
দেশকন্ঠ//