• রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২  নিউইয়র্ক সময়: ০৫:৫০    ঢাকা সময়: ১৫:৫০

নতুন বিপ্লবের নাম ‘তুফান’

  • বিনোদন       
  • ০৪ জুলাই, ২০২৪       
  • ১২০
  •       
  • --

দেশকন্ঠ অনলাইন : কোরবানি ঈদে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে নির্মাতা রায়হান রাফীর ‘তুফান’ সিনেমার তোড়ে অসংখ্য দর্শকের চোখের ঘুম উড়ছে। এখন পর্যন্ত সিনেমা হলে টিকিটের লম্বা লাইন, অগণিত মানুষের উচ্ছ্বাসে রীতিমতো বিস্ময় তৈরি করছে ‘তুফান’।

গত শুক্রবার ছুটির দিন দেখে এলাম সিনেমাটি। এতদিন অপেক্ষার পর ‘তুফান’ দেখে আমার মনে হয়েছে শুধু মুগ্ধতা নয়, এরকম প্রিমিয়াম লুক অ্যান্ড ফিলের সিনেমা এর আগে বাংলাদেশের মানুষের কাছে সত্যিই অকল্পনীয় ছিল। তবে এটা বলতেই হবে ‘তুফান’ এর মাধ্যমে দেশের সিনেমায় এক বিপ্লব শুরু হলো হয়তো। সিনেমাটি দেখার পর দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, ‘তুফান’ মুক্তির আগে যতটা গর্জে উঠেছিল, তার চেয়েও যেন অনেক বেশি বরষেছে।

‘তুফান’-নিয়ে কাছের দূরের অনেকের নানা মন্তব্য শুনছি অনেকদিন থেকেই। এ সিনেমার অন্যতম আকর্ষণ মেগাস্টার শাকিব খানকে নিয়ে এক শ্রেণির বোদ্ধারা আছেন যারা এখনও পর্যন্ত তার নামে একটা নাক সিটকানো মনোভাব পুষে রেখেছেন। সত্যি এবার তাদের থোতা মুখ ভোঁতা হবার জো হয়েছে।

ভারতের দক্ষিণি সিনেমার নামে যে দর্শকরা ভিরমি খায় তারা এবার বুক ফুলিয়ে বলতেই পারে যে আমাদের শাকিব খান কোন অংশে কম! আর তাই, নাচে, গানে, অ্যাকশনে ভরপুর সিনেমা ‘তুফান’-এর রিভিউ লিখতে আমার আত্মবিশ্বাস ও অহংকারে এতটুকুও ঘাটতি বোধ হচ্ছে না।

২ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের ‘তুফান’-এ বলিউড ও দক্ষিণি সিনেমার নির্যাস থাকলেও ‘নকল’ অভিযোগের সঙ্গে আমি একমত নই। মূলত রায়হান রাফী সমাজের বাস্তব ও চলমান বা ঘটমান প্রেক্ষাপটকে মাথায় নিয়ে ‘তুফানের’ মতো এমন একটি মালা গেঁথেছেন, যা দর্শকহৃদয়ে সুঘ্রাণ ছড়াতে বাধ্য থাকবে বছরের পর বছর।

এদিকে ২৫ বছরের ক্যারিয়ারে ‘তুফান’ দিয়ে শাকিব যে নতুন রূপে দর্শকের সামনে হাজির হলেন তাতে মুগ্ধ হতেই হয়। শাকিব খানের সুদর্শন লুকটাকে রাফী যেন আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছেন। এতে তার থেকে ভক্তরা তো বটেই, কট্টর নিন্দুকেরাও চোখ ফেরাতে পারবে না। ‘তুফান’ চরিত্রে অনেক দৃশ্যে তার সংলাপবিহীন ‘অ্যাটিটিউড’ দেখে যে কেউ বলতে বাধ্য হবেন ‘ওএমজি’!

জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে সিনেমার নাচের সেট থেকে বের করার দৃশ্যে শান্তর এক্সপ্রেশন, অডিশনের দৃশ্য, ধোবিঘাটে অ্যাকশন দৃশ্য, মসজিদে গিয়ে পাড়ার পাবর্তী বৌদির জন্য রক্ত জোগাড়ের ঘোষণা, মহল্লার সবাইকে নিয়ে শান্তর ‘শেষ খেলা’ সিনেমা দেখার পর বাড়ি ফিরে ক্ষোভ প্রকাশ, তুফানের এন্ট্রি, কিশোর তুফানের গল্প, সংবিধান নিয়ে তুফানের মনোলোগ, শাহনেওয়াজের মাথা কেটে হত্যা, বাশিরের সঙ্গে কুস্তির দৃশ্য, সিআইডি আকরামের এন্ট্রি, আগুনের মাঝখানে বাথটাবে তুফানের আউটবার্স্ট, অ্যান্ড ক্রেডিটের পরের দৃশ্য, প্রতিটি মুহূর্তই ছিল ‘ফুল অন এন্টারটেইনমেন্ট’।

এছাড়া তুফানের অসাধারণ গানগুলো যেন এর মাধুর্যকে আরো বাড়িয়েছে শতভাগ। প্রীতম হাসানের ‘লাগে উরাধুরা’ ঝড়ে উড়তে উড়তে যখন ‘দুষ্টু কোকিল’ এসে ডাকাডাকি শুরু করল তখন যেন দুনিয়া আরো টালমাতাল।

শাকিব খানের পাশে ওপার বাংলার নায়িকা মিমি চক্রবর্তীকে ভীষণ ভালো লেগেছে। সত্যি বলতে, ‘বোঝে না সে বোঝে না’র সেই মিমি যেন আরেকবার মনে আসন গাড়লেন নতুন করে। ‘সূচনা’ চরিত্রে মিমির মোহনীয় এক্সপ্রেশন, কথা বলার ভঙ্গি, আত্মবিশ্বাস, সর্বোপরি স্ক্রিন প্রেজেন্স ছিল ম্যাজিক্যাল।

অন্যদিকে চঞ্চল চৌধুরী তো নিজেই লিজেন্ড। যখন যে চরিত্রই ধারণ করেন আবিষ্ট করেন নিজ গুণে। শাকিব খান-চঞ্চলকে একসঙ্গে যে ক’টি দৃশ্যে দেখা গেছে তাতে রীতিমতো পয়সা উসুল। পাশাপাশি ৮ বছর পর বড়পর্দায় নাবিলার ফেরা ছিল ফেরার মতোই। নাবিলাকে দেখতে বেশ স্নিগ্ধ লেগেছে, তবে নাবিলার চরিত্রটি চিত্রনাট্যে আরেকটু স্পেস পেতে পারত। তাছাড়া ‘জুলি’ চরিত্রের কস্টিউমের সঙ্গে তার সংলাপগুলো কিছুটা আরোপিত মনে হয়েছে। জুলির ওপর শান্তর প্রেমানুভূতি একটু কমই ছিল।

গাজী রাকায়েতকে ‘তুফান’ সিনেমায় কাস্ট করাটা ছিল পরিচালক রাফীর অন্যতম মাস্টারস্ট্রোক। মিশা সওদাগরকেও রায়হান রাফীর সিনেমায় দেখতে পারাটা ছিল বিশেষ পাওনা। ফজলুর রহমান বাবু, অতিথি চরিত্রে সালাহউদ্দিন লাভলু, শহীদুজ্জামান সেলিম, সুমন আনোয়ার, শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব বিশ্বাসযোগ্য ছিলেন। সব মিলিয়ে পরিচালক রায়হান রাফী ‘তুফান’ নির্মাণে মনোযোগ ও আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি রাখেননি একথা বললে সত্যিই ভুল হবে না।
দেশকন্ঠ//

  মন্তব্য করুন
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।