দেশকন্ঠ অনলাইন : চুইংগাম কম–বেশি আমাদের সবারই অনেক পছন্দের। কেউ মুখের দুর্গন্ধ এড়াতে চুইংগাম চিবিয়ে থাকেন, আবার কারো কাছে এটি রীতিমতো অভ্যাস। তাই তারা বিরক্তি ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা চুইংগাম চিবাতে থাকেন।
চুইংগামে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘসময় ধরে এটি চিবানো হলে বহু স্বাস্থ্য সমস্যাও হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যারা প্রতিদিন চুইংগাম খেয়ে থাকেন কিংবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চিবান, তাদের করণীয় কী হতে পারে?
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, চুইংগামের উপকারিতা সম্পর্কে। বাজারে বিভিন্ন স্বাদের চুইংগাম পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিনিমুক্ত চুইংগামও এখন সহজলভ্য।
এই চিনিমুক্ত চুইংগাম দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, বিশেষ করে যদি জাইলিটল নামক উপাদান থাকে। চুইংগাম চিবালে প্রচুর লালা বের হয়, যা দাঁতের প্রাকৃতিক ‘ডিফেন্স মেকানিজম’ হিসেবে কাজ করে। লালা মুখের ক্ষতিকর অ্যাসিডকে নিষ্ক্রিয় করে, খাবারের কণা ধুয়ে নিয়ে যায় এবং এনামেলের ক্ষয়রোধ করে। এতে দাঁতের ক্যাভিটি এবং মাড়ির রোগের প্রবণতা কমে। তবে চিনি এসিড তৈরি করে। তাই এসব উপকার পেতে চিনিমুক্ত চুইংগাম খেতে হবে।
ভ্রমণের সময় ক্লান্তি এবং উদ্বেগ দূরে রাখতেও সহায়ক চুইংগাম। বিশেষ করে, বিমানের উড্ডয়ন এবং অবতরণের সময় যাত্রীদের কানের মধ্যে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়, ফলে কানে অস্বস্তি এবং যন্ত্রণা দেখা দেয়। এ সময় চুইংগাম চিবাতে থাকলে কানের বাইরে এবং ভেতরে বাতাসের চাপের তারতম্য কিছুটা কম অনুভূত হয়।
লম্বা সময় ধরে কেউ চুইংগাম চিবানো হলে কী হবে?
অতিরিক্ত চুইংগাম চিবালে, বিশেষ করে মুখের এক পাশেই চিবাতে থাকলে চোয়ালের সঙ্গে যুক্ত মাংসপেশিতে সমস্যা হতে পারে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চুইংগাম চিবালে টেম্পোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্টের সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে, যা থেকে পরবর্তীতে মাথাব্যথা, কানে ব্যথা, চোয়ালের ব্যথা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
আবার চিনিমুক্ত হলেও সুগার-ফ্রি চুইংগামে এসিডীয় ফ্লেভার মেশানো থাকতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে দাঁতক্ষয়ের কারণ হতে পারে। মনে রাখতে হবে, একবার দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে গেলে, এর পুনরুদ্ধার আর সম্ভব নয়।
তাছাড়া এনামেল স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়, ফলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এবং দাঁত ক্ষয়ের হার বেড়ে যায়।
অতিরিক্ত চুইংগাম হজমের সমস্যা তৈরির জন্যও দায়ী। চুইংগাম চিবানোর সঙ্গে আমাদের পেটে অনেক বাতাস প্রবেশ করে। এতে পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং অস্বস্তি হতে পারে। অনেকে আবার খিদে মেটাতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা চুইংগাম চিবাতে থাকেন। এটি অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর একটি অভ্যাস।
চিকিৎসকরা তাই খাওয়ার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের বেশি চুইংগাম না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এবং তা হতে হবে সুগার-ফ্রি। এই সময়সীমা মুখে পর্যাপ্ত লালা উৎপাদন এবং চোয়ালে ব্যথা সৃষ্টি না করেই দাঁত পরিষ্কার রাখবে।
তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
দেশকন্ঠ//