দেশকণ্ঠ অনলাইন : টেস্ট ও প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ঘোষনা দিয়েছিলেন দিন কয়েক আগে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবেই বিদায় বলে দিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল ও তামিম ইকবাল। জাতীয় দলের সাবেক এই দুই অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে বিদায়ী সম্মাননা জানিয়েছেন। জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ ২০১৯ সালে ইডেন গার্ডেন্সে ভারতের বিপক্ষে গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্ট খেলেছিলেন এই বাহাতি ব্যাটার। সেই ম্যাচের পর আর কোনো ফরম্যাটেই বাংলাদেশের জার্সিতে দেখা যায়নি টাইগার এই ওপেনারকে। লম্বা সময় জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই ওপেনার এবার টেস্ট ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন। শনিবার মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজের শেষ প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলতে নামেন ইমরুল। তবে ১৬ রানে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। এরপর দুপুরে লাঞ্চ বিরতিতে সম্মাননা দেওয়া হয় তাকে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল, সাবেক ক্রিকেটার মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
দলের পক্ষ হতেও ইমরুলকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন নুরুল হাসান সোহান-মোহাম্মদ মিঠুনরা। পরে দলীয় ফটোসেশনেও দেখা যায় তাদের। এর আগে গত বুধবার দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় লাল বলের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন ইমরুল। তিনি বলেন, ’১৬ তারিখ আমি আমার ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট এবং টেস্ট ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি করতে যাচ্ছি। এটা আমার লাইফের গত ১৭ বছরের সবচেয়ে কঠিন এবং আবেগের মুহূতর্। টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন ইমরুল কায়েস। লাল বলে সবশেষ ম্যাচ খেলেছেন পাঁচ বছর আগে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজ থেকে একটি পোস্ট করে আনুষ্ঠানিক বিদায়ের ঘোষণা দেন এই বাঁহাতি ওপেনার। ফেসবুকে দেড় মিনিটের একটি ভিডিও পোস্ট করেন ইমরুল। সেই ভিডিওর ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘বিদায় টেস্ট ক্রিকেট। আপনাদের ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞ। আমার টেস্ট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি। ধন্যবাদ, আমার সব ভক্তদের, সব সময় তাদের ভালোবাসা এবং সমর্থন দেওয়ার জন্য! বাংলাদেশের হয়ে ৩৯ টেস্টে ৭৬ ইনিংসে ১৭৯৭ রান করেছেন ইমরুল, গড় ২৪.২৮।
তিনটি সেঞ্চুরির সঙ্গে রয়েছে ৪টি ফিফটি। সবশেষ ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইডেন গার্ডেনে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। চলতি জাতীয় ক্রিকেট লিগে ব্যাট হাতে মোটামুটি ভালোই খেলছেন ইমরুল। খুলনা বিভাগের হয়ে তাঁর পাঁচ ইনিংস, ৮৬ *, ৭১, ৪৬, ১৩ ও ০। শনিবার পঞ্চম রাউন্ড শুরু হয়েছে জাতীয় লিগের। ঢাকার বিপক্ষে নিজেদের পঞ্চম রাউন্ড খেলবে খুলনা। সেদিন আনুষ্ঠানিকভাবে টেস্ট ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে বিদায় বলার দিনক্ষন চুড়ান্ত ছিল। ভিডিও বার্তায় ইমরুল বলেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। আমি ইমরুল কায়েস। আমি বাংলাদেশের সকল ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রেখে একটা বিষয় জানাতে চাচ্ছি, খুব শিগগিরই আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের কঠিন সিদ্ধান্তের দিকে যাচ্ছি। আগামী ১৬ নভেম্বর আমার টেস্ট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করতে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেরও ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করতে যাচ্ছি। এটি আমার জীবনের ১৭ বছরের সবচেয়ে কঠিন ও আবেগের একটি মুহূর্ত।’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩৭ ম্যাচে ২৪৬ ইনিংসে ৭৯৩০ রান ইমরুলের, গড় ৩৪.১৮। ২০টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ২৭টি ফিফটি। জাতীয় দলে ফেরা অপেক্ষা ফুরালো না পাঁচ বছরেও, লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন ইমরুল কায়েস। ওডিআই ক্রিকেট থেকে ইমরুল বাদ পড়েছিলেন ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পরপরই। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা ম্যাচটাই অঘোষিত শেষ ম্যাচ হয়ে গেছে। লাল-সবুজের জার্সিতে তিন ফরম্যাটে ১৩১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ৩৭ বছর বয়সী এই ব্যাটার। তবে তাকে যথার্থ মূল্যায়ন করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
দেশকণ্ঠ/আসো