• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০১:২৩    ঢাকা সময়: ১১:২৩

ইমরুল কায়েসের দুঃখগাথা

দেশকণ্ঠ অনলাইন : অনেকটা হঠাৎ করেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন ইমরুল কায়েস। দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই ব্যাটার পর্যাপ্ত সুযোগ পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে রাসেল ডোমিঙ্গো ও চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, দুজনের চক্ষুশুল ছিলেন। দীর্ঘদিন জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতারও মূল্যায়ন পাননি। খেলার মতো অবস্থায় থাকলেও আর লাল বলে ক্রিকেট খেলবেন না খুলনার এ ক্রিকেটার। বাংলাদেশ থেকে হাথুরুসিংহের অধ্যায় শেষ এক মাস আগেই। ‘বিতর্কিত’ এই কোচের দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বরখাস্ত করেছিল হাথুরুকে। তাঁর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ছুটি কাটানো, নাসুম আহমেদকে চড় মারসহ আরও কিছু অভিযোগ তুলেছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। এক মাস পর কেন আবার সেই হাথুরুর প্রসঙ্গ? আলোচনাটা হাথুরুর কারণে এসেছে লাল বলের ক্রিকেটে ইমরুলের বিদায়ী ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে। ২০২৩ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে হাথুরু প্রধান কোচ হিসেবে এলেও তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ মেলেনি।
 
কারণ, ইমরুল তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেই ২০১৯ সাল থেকে। কিন্তু ২০১৪ সালে প্রথম মেয়াদে হাথুরু আসার পর ইমরুল যতটুকু সময় পেয়েছিলেন, গুরুর থেকে অর্জিত সেই শিক্ষা এখনো মনে রেখেছেন ইমরুল। মিরপুর শেরেবাংলায় ঢাকা-খুলনা ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ইমরুল বলেন, ‘চন্ডিকা হাথুরুসিংহে অবশ্যই অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ কোচ ছিলেন। টেকনিক্যাল কোচ হিসেবে আমার কাছে তিনি অনেক ভালো কোচ ছিলেন। কিন্তু আবারও বলছি তাঁর আচরণে অনেক সমস্যা ছিল। অনেকের সঙ্গে মতের মিল হতো না। আমি তাঁর কাছে অনেক কিছু শিখেছি ব্যাটার হিসেবে।’ কোন কোচ ইমরুলকে বুঝতে পারেননি ঠিকমতো? এই প্রশ্নের উত্তরে কারও নাম উল্লেখ করেননি ইমরুল। বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘বোঝে না এরকম না আসলে, এটা বলা ভুল হবে। আমি কোচদের থেকে একটু দূরেই থাকতাম। এজন্যই থাকতাম যে বেশি কথা বলতাম না কোচদের সঙ্গে। কোচনির্ভর বেশি হতে চাইতাম না। সব সময় ভালো খেলার পরিকল্পনাই আমার ছিল। যদি কোচের থেকে ইতিবাচক কিছু নেওয়ার থাকে, তাহলে নেব। এটুকুই। এর বাইরে আর কিছু চিন্তা করতাম না।’
 
হাথুরু প্রথম মেয়াদে আসার পরই ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। যা এখন পর্যন্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা পারফরম্যান্স। তবে সেই বিশ্বকাপে অফফর্মে থাকায় ইমরুলকে নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছিল। ৯ বছর আগের পুরোনো স্মৃতি মনে করতে গিয়ে হাথুরুর কথা সোমবার উল্লেখ করে ইমরুল বলেন, ’আমার মনে আছে ২০১৫ বিশ্বকাপে যখন খেলে এলাম, ভালো খেলিনি তখন। আসার পর আমাকে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছিল, আমি দলে কেন থাকব। খুব চাপে ছিলাম আমি। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে খেলার আগের (পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৫ খুলনা টেস্ট) দিনই কিছু কথা বলেছিলেন। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করেছিলাম।’ লাল বলের ক্রিকেটে রবিবারই ইমরুল শেষ ইনিংস খেলে ফেলেছেন। খুলনার হয়ে দুই ইনিংসে ১৬ ও ১ রান করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে শেষই হয়ে গেল প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্যারিয়ার।
 
তিন দিনে শেষ হওয়া জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) ম্যাচে ঢাকা ৯ উইকেটে হারায় খুলনাকে। ম্যাচ শেষে ইমরুলকে কাঁধে তুলে ‘ল্যাপ অব অনার’ দিয়েছেন সতীর্থরা। বিসিবি বোর্ড পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম ফুলের তোড়া তুলে দেন ইমরুলের হাতে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা ইমরুল কায়েস দিয়েছিলেন কদিন আগেই। মিরপুরে শেষ হলো তাঁর ১৭ বছরের লাল বলের ক্রিকেট অধ্যায়। বাংলাদেশের বাঁহাতি ক্রিকেটারের মতে, সময় থাকতে অবসর নেওয়া উচিত। ২০২৪-২৫ মৌসুমের জাতীয় লিগে ইমরুল খেলেছেন খুলনার হয়ে। ঢাকার কাছে ৯ উইকেট হেরে যায় তাঁর দল খুলনা। লাল বলের ক্রিকেটে শেষ ম্যাচ খেলার পরে সংবাদ সম্মেলনে এলেও ইমরুল ছিলেন ভাবলেশহীন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সাবলীলভাবে। বিদায় বেলায় বিসিবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশের বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘এমন সুযোগের জন্য বিসিবিকে প্রথমে ধন্যবাদ দিচ্ছি। যখন আমি বিসিবিকে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানাই, ব্যাপারটি তারা ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। অনেকেই বলেছেন, ভাই, আরও ২ বছর খেলতে পারতেন ইমরুল’।
 
ইমরুল বিদায় নিয়েছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে। তবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এখনো খেলে যেতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘আমার ফিটনেস বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, তাতে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির জন্য নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারব এবং খেলতে পারব আরও কয়েক বছর। চার দিনের ম্যাচ খেলতে যে পরিমাণ শক্তি ও মনোবল থাকতে হয়, এখন আর নেই। আমার মনে হয়েছে, যদি নিজেকে তরুণদের সঙ্গে তুলনা করি এবং তাদের মতো ছন্দে না থাকতে পারি, তাহলে লজ্জা লাগে। কিন্তু সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে খেলা শেষ একদিনেই। এখানে পূর্ণ শক্তি দেওয়া সম্ভব।’ ২০০৮ থেকে শুরু করে ২০১৯ পর্যন্ত ৩৯ টেস্ট, ৭৮ ওয়ানডে ও ১৪ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। বাংলাদেশের জার্সিতে ১৩১ ম্যাচে মাশরাফি বিন মর্তুজা, ইমরুল কায়েস, সাকিব আল হাসানের অধীনে খেলতে হয়েছে ইমরুলকে। অবসরে কোচিং নিয়ে চিন্তা করছেন তিনি।
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।