২৪ঘণ্টা অনলাইন : বাংলাদেশে কমেছে ইলিশের সংখ্যা! সে দেশের মৎস্য দফতরের হিসাব অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া গিয়েছে, তা গত সাত বছরের হিসাবে সবচেয়ে কম। বাংলাদেশি একটি সংবাদমাধ্যম তার প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইলিশ কমার নেপথ্যে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা, অতিরিক্ত মাছ ধরা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নাব্যতা সংক্রান্ত সমস্যার মতো বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে।
প্রতিবেদন অনুসারে, বরিশালের বিভাগীয় মৎস্য দফতরের তথ্য ২০২৩-২৪ সালে ৫.২৯ লক্ষ টন ইলিশ পাওয়া গিয়েছে। যা আগের অর্থবর্ষের তুলনায় প্রায় ৪২ হাজার টন কম। তথ্য বলছে, ২০১৮-১৯ সাল থেকে ২০২২-২৩ সাল পর্যন্ত ইলিশের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশে। তবে ২০২৩-২৪ সালে এক ধাক্কায় অনেকটা কমেছে ইলিশের পরিমাণ। ২০১৮-১৯ সালে ৫.৩২ লক্ষ টন ইলিশ মিলেছিল সে দেশে। তার পর থেকে প্রতি বছরই ইলিশের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯-২০ সালে ৫.৫০ লক্ষ টন, ২০২০-২১ সালে ৫.৬৫ লক্ষ টন, ২০২১-২২ সালে ৫.৬৬ লক্ষ টন এবং ২০২২-২৩ সালে ৫.৭১ লক্ষ টন ইলিশ মিলেছিল।
বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে ইলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পেতে হঠাৎ কেন কমে গেল? এই বিষয়ে চাঁদপুরে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণাকেন্দ্রের আধিকারিক মোহাম্মদ আবু কওসর দিদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘দ্য ডেলি স্টার’। তাঁর মতে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে গত বছর অনেক মৎস্যজীবী সমুদ্রে বা নদীতে যেতে পারেননি। ফলে সামগ্রিক ভাবেই মাছ ধরার পরিমাণ কমেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সুন্দরবন অঞ্চল-সহ কিছু জায়গায় নাব্যতার সমস্যা রয়েছে। সেটিও অন্যতম কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। দিদার বলেন, “ইলিশ সাধারণত পাঁচ মিটারের বেশি গভীর জল পছন্দ করে। কিন্তু সমুদ্র থেকে যে পথে ইলিশ প্রবেশ করে, সেই নদীপথগুলির কিছু জায়গায় গভীরতা দুই বা তিন মিটারে নেমে এসেছে।”
আবার ইলিশ যখন নদীপথে প্রবেশ করে, তখন অতিরিক্ত মাছ ধরার ফলেও পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। বরিশাল মৎস্য অফিসের উপ-পরিচালক নরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের মতে, যেহেতু মূল নদীপথ দিয়ে ইলিশের সংখ্যা কমছে, সেই কারণেই সামগ্রিক উৎপাদনের উপর প্রভাব পড়েছে।