• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০৭:১৫    ঢাকা সময়: ১৭:১৫

টাঙ্গাইলে গারো সম্প্রদায়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা পেলো আচিক ভাষার বই

  • শিক্ষা       
  • ০৫ জানুয়ারি, ২০২৩       
  • ৯৩
  •       
  • ০০:০৫:৩৭

দেশকন্ঠ  প্রতিবেদক : দেশের বৃহত্তর টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ে গারো সম্প্রদায়ের বসবাস। লাল মাটির মধুপুর গড়ের গারো সম্প্রদায়ের তাদের আচিক ভাষা (গারো ভাষা) হারিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময়ে সরকার ক্ষুদে গারো সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের নিজস্ব ভাষা বই দিয়েছে। সারাদেশের মতো বই উৎসবে মধুপুরে অন্যান্য বই বিতরণের পাশাপাশি প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০ বই বিতরণ করা হয়েছে। নিজস্ব ভাষার বই পেয়ে ছাত্র শিক্ষক ও গারো সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে তাদের দাবি গারো শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে গারো ভাষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার। মধুপুরের অরণখোলা, বেরিবাইদ, কুড়াগাছা, শোলাকুড়ি, ফুলবাগচালা ও আউশনারা ইউনিয়নে গারো সম্প্রদায়ের বসবাস। গড় এলাকার বিভিন্ন গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি রয়েছে মিশনারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরকার নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠির শিশুদের জন্য অন্যান্য পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি তাদের নিজস্ব ভাষার বই দিয়ে ভাষা চর্চা ও ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত বিতরণ করেছে। বাংলা, গণিত ও ইংরেজি তিনটি বই বিতরণ করেছে বলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে। নিজস্ব ভাষার বই পড়ানোর জন্য শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও সরকারি মনিটরিং এবং ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করনের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় গারো সম্প্রদায়ের।

গায়রা গ্রামের অভিভাবক সুস্ময় নকরেক জানান, তার মেয়ে নাম্বিয়া দালবত একটি কিন্ডার গার্টেনে পড়ে। ওই স্কুলে গারো ভাষার বই পড়ানোর মতো কোন শিক্ষক নেই। ফলে তাদের ভাষার বই পড়ানো হয় না বলে তিনি জানান। শিশুরা এ ভাষায় বই পড়তে পারলে তাদের ভাষা সংরক্ষণের পাশাপাশি চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ভুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মার্জিনা চিসিম জানান, গারো সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য তাদের ভাষায় পাঠ্যপুস্তক দেয়ায় তিনি ও তার সম্প্রদায় খুশি। সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে এই শিক্ষিকা বলেন, অনেক স্কুলেই গারো শিক্ষার্থী রয়েছে কিন্তু অনেক স্কুলেই গারো ভাষার বই পড়ানোর মত শিক্ষক নেই। এজন্য তিনি যে সব স্কুলে গারো শিক্ষার্থী রয়েছে ওই সব স্কুলে গারো সম্প্রদায়ের শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রশিক্ষণের দাবি জানন। তাদের ভাষায় বই পাওয়ার ফলে গারো শিশুরা তাদের নিজস্ব ভাষার পাশাপাশি অন্যান্য ভাষায়ও পড়াশুনার সুযোগ পাবে।

আচিক মিচিক সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সুলেখা ¤্রং নিজস্ব ভাষার বই পেয়ে খুশি। এর ফলে গারো সম্প্রদায়ের শিশুরা যে সময়ে তাদের ভাষা হারিয়ে যাচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে এই বই পেয়ে শিশুরা নিজস্ব ভাষায় পড়তে পারবে। এ চর্চার মধ্য দিয়ে শিশুরা তাদের ভাষা ধরে রাখতে পারবে। ফলে আচিক ভাষা বা গারো ভাষা সংরক্ষণ হবে বলে তিনি মনে করেন। গারো ভাষার বই পড়ানোর জন্য তিনি গারো শিক্ষক দরকার উল্লেখ করে বলেন, এতে সহজে পড়াতে ও বুঝাতে পারবেন। স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নেতা ইউজিন নকরেক জানান, গারো ভাষার বই পাওয়ার ফলে শিশুরা তাদের ভাষা চর্চা ও শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এজন্য কর্তৃপক্ষের মনিটরিং ও ক্লাসের এই বই পড়ানো প্রতি জোড় দিতে হবে। রোমান হরফে লেখা বই উচ্চারণ অনেকটা কঠিন। এজন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ সেমিনার ও কর্মশালার ব্যবস্থা হলে ভাল হবে। এ বিষয়ে মধুপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, বই উৎসবে অন্যান্য বইয়ের পাশাপাশি মধুপুরের নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠির গারো সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিকের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০০ ও প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত প্রতি ক্লাসে ৪০০ করে বই বরাদ্ধ পেয়ে বিতরণ করা হয়েছে।
দেশকন্ঠ/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।