দেশকন্ঠ অনলাইন : ভারতের মণিপুর রাজ্য অশান্ত। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) পাঠাচ্ছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার (১৮ নভেম্বর) নিজের মন্ত্রণালয় শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন অমিত শাহ।
মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর, সেখানেই এই অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতি কোম্পানির সদস্য সংখ্যা প্রায় ১০০। সেই মোতাবেক ওই রাজ্যে আরও পাঁচ হাজার জওয়ান পাঠাচ্ছে অমিত শাহের মন্ত্রণালয়। এমনিতেই ওখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ এবং সেনার সঙ্গে মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
ছয় জনের দেহ উদ্ধারের পর থেকে মেইতেইদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত মণিপুর। রবিবার মহারাষ্ট্রে প্রচারের কর্মসূচি বাতিল করে দিল্লি ফিরে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। সূত্রের খবর, দিল্লি পৌঁছে বৈঠক করেছিলেন তিনি। এর পর সোমবার আবার নিজের মন্ত্রণালয় কর্তাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন তিনি। মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে মণিপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার পরেই সেখানে আরও ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্যের পরিস্থিতি দেখতে একটি দল পাঠাতে পারে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও।
এর আগে সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে মণিপুরের তিনটি মামলার তদন্তভার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র হাতে তুলে দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কোন তিনটি মামলা এনআইএ-কে দেওয়া হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। শুধু জানা গিয়েছে, হিংসা, প্রাণহানি সংক্রান্ত এই তিন মামলার তদন্ত করছিল মণিপুর পুলিশ। তাদের কাছ থেকে নিয়ে তদন্তভার তুলে দেওয়া হল এনআইএ-র হাতে। মনে করা হচ্ছে, তদন্তে গতি আনতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০২৩ সালের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের সংঘাতের কারণে উত্তপ্ত মণিপুর। সেই হিংসার প্রথম পর্বে জিরিবাম জেলায় সংঘাতের আঁচ পড়েনি। সম্প্রতি সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী এবং কুকি জঙ্গিদের গুলি বিনিময় হয়। সে সময় একই মেইতেই পরিবারের তিন নারী এবং তিন শিশুকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে কুকি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে। বাহিনীর গুলিতে ১০ জন কুকি জঙ্গির প্রাণ গিয়েছে। কুকি সম্প্রদায়ের দাবি, নিহতরা ‘গ্রামের পাহারাদার’। ওই ঘটনার পর থেকে অপহৃতদের খোঁজ মেলেনি। জিরি নদীতে ছয় জনের মরদেহ মিলেছে।
মেইতেইদের দাবি, ওই দেহ অপহৃতদের। যদিও এই নিয়ে পুলিশ বা প্রশাসন কিছু নিশ্চিত করেনি। এই দেহ মেলার পর থেকে উত্তপ্ত জিরিবাম জেলা। আঁচ এসে পড়েছে ইম্ফল উপত্যকায়। মন্ত্রী এবং বিধায়কদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে। ইম্ফল পূর্বে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পৈতৃক বাড়িতে হামলার চেষ্টা হয়। বিক্ষোভকারীদের রুখতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে বাহিনী। এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে পাঠানো হচ্ছে আরও বাহিনী।
দেশকন্ঠ/এআর