• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১৪:২০    ঢাকা সময়: ০০:২০

ঐতিহ্য ও সাফল্যে ১১১ বছরে পদার্পণ সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের

  • শিক্ষা       
  • ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩       
  • ১২৪
  •       
  • ০১:১৫:৩৮

দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন : সমাজজীবন থেকে নিরক্ষরতার অন্ধকার দূর হোক। সকলের জীবনে শিক্ষার আলো উদ্ভাসিত হোক— এই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছে সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ । সাধু ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স নামক এক সাধু প্রভু যীশুর বাণী প্রচারের জন্য যখন স্পেন থেকে ভারত এবং ভারত থেকে চীনে যাচ্ছিলেন সেই সময় পথিমধ্যে তিনি দেহ ত্যাগ করলেন। তাঁর এই ধর্ম প্রচারের মহৎ প্রচেষ্টাকে চিরস্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশে, তাঁরই নামে এই উপমহাদেশের অন্যান্য ধর্ম যাজকদের উদ্যোগে বুড়িগঙ্গার তীরে (৮৫, লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুর, ঢাকা-১১০০) ১৯১২ সালে স্থাপিত হয়েছে সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস স্কুল। দেখতে দেখতে ঐতিহ্য ও সাফল্যে ১১১ বছরে পদার্পণ করেছে সুনামধন্য স্কুলটি। 
 
 
প্রাথমিকভাবে ৪ জন শিক্ষিকা ও ৬০ জন ছাত্রীসহ দৃঢ় মনোবল নিয়ে এই বিদ্যাপিঠের যাত্রা করেছিল। ১৯৭২ সালে বিদ্যালয়ে জায়গার সংকুলান তথা অধিকাংশ ছাত্রীর মাতৃভাষা বাংলা হওয়ায় বিদ্যালয়কে দুইটি ভাগে বিভক্ত করে ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলটি মোহাম্মদপুরে সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল নামে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। অপরদিকে, বাংলা শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে আদি স্কুল লক্ষ্মীবাজার সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস স্কুল নামে পরিচালিত হতে থাকে। জুনিয়র স্কুল অর্থাৎ ১ম-৮ম শ্রেণি পর্যন্ত স্বীকৃতি লাভ করে ১৯৭৭ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা ০১-০১-১৯৭৯ সালে অত্র বিদ্যালয়কে ৯ম শ্রেণি খোলার স্থায়ী অনুমতি দেয়। তখন থেকেই সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস হাইস্কুল নামে পরিচিতি লাভ করে। চাহিদা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রেক্ষিতে এবং শিক্ষার্থীদের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর মনোভাব নিয়ে ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি কলেজ শাখায় উন্নীত হয়। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডির সভাপতি পদে আছেন শ্রদ্ধেয় ফাদার ডনেল স্টিফেন ক্রুশ সিএসসি, অধ্যক্ষ পদে আছেন শ্রদ্ধেয় সিস্টার নীলু মৃ, আরএনডিএম এবং উপাধ্যক্ষ পদে আছেন শ্রদ্ধেয় সিস্টার গ্রেসি গমেজ, আরএনডিএম।
 
 
শতবর্ষব্যাপি প্রতিষ্ঠানটি আলোর দ্যুতি ছড়িয়ে আসছে লক্ষ প্রাণে। সেই আলোয় উদ্ভাসিত তরুণ প্রাণ খুঁজে পেয়েছে তাদের জীবনে পথের দিশা। তাইতো এই প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী দেশ মাতৃকার সুমহান সেবায় নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে এক একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। বয়ে এনেছে দেশ ও জাতির জন্য অনেক দুর্লভ সম্মান। দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তারা দেশের সুনাম ও ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। দেশের সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনায় তারা নিজেদের উৎসর্গ করে আসছে। সমুন্নত রেখেছে লাল সবুজের পতাকার মান ও গৌরব।
 
শিক্ষার্থীদের জীবন আলোকিত করতে, শিক্ষার্থীদের সম্মুখপানে অগ্রসর হতে সহায়তায় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষসহ সকল শিক্ষক, অফিস স্টাফ ও সহায়তাকারী দাদা দিদিগণ নিরলস কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। স্কুল শাখায় ৬০ জন শিক্ষক প্রায় ৩০০০ শিক্ষার্থীকে এবং কলেজ শাখায় ১৫ জন শিক্ষক প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীকে সেবা বা শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। খ্যাতি, মর্যাদা ও জনপ্রিয়তার মধ্যদিয়ে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ২০২৩ সালে এসে ১১১ বছরে পদার্পণ করেছে। 
 
প্রতিষ্ঠানের কতিপয় বৈশিষ্ট্য
 প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত ইউনিফরম রয়েছে। 
 স্কুল পর্যায়ে শুধ প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি নেওয়া হয়। তবে বিভিন্ন ক্লাসে আসন খালি হওয়া সাপেক্ষে জানুয়ারি মাসে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি নেওয়া হয়। একাদশ শ্রেণিতে নির্দিষ্ট আসনে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে ভর্তি নেওয়া হয়। একাদশ শ্রেণিতে বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি নেওয়া হয়। 
 শিক্ষার্থীদের নিয়মিত এ্যাসেম্বলিতে অংশগ্রহণ করতে হয়। 
 বিদ্যালয়ে স্কুল ও কলেজ সেকশনে বাংলা মাধ্যমে পাঠদান করা হয়। 
 প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪টি সেকশনে পাঠদান করা হয়। 
 প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি গুরুত্বসহকারে মূল্যায়ন করা হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ে বেতন পরিশোধ করার জন্য অভিভাবকদের বলা হয়।  
 ছাত্রীদের যোগ্য, দক্ষ, অভিজ্ঞ ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে গঠনমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন কার্যক্রম। জেভেরিয়ান ডিবেটিং ক্লাব, জেভেরিয়ান বিজ্ঞান ক্লাব, জেভেরিয়ান ইংরেজি ক্লাব, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, ম্যাগাজিন প্রকাশ, বিজ্ঞান মেলা, দেয়ালিকা প্রদর্শন, হস্তশিল্প প্রদর্শন, ক্লাসপার্টি, পিঠা  উৎসব, রচনা, হাতের লেখা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। 
 প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দিবস উদযাপন করে। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, জাতীয় শোক দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, আন্তর্জাতিক নারী দিবস, বিশ্ব শিশু দিবস ও বিশ্ব শিক্ষকদিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন উল্লেখযোগ্য।
 ৭:৩০টা থেকে ১:০০টা পর্যন্ত স্কুল সেকশনে পাঠদান করা হয়। ১২:৩০টা থেকে ৪:৩৫টা পর্যন্ত কলেজ সেকশনে পাঠদান করা হয়। উল্লেখ্য, ঋতু অনুযায়ী কলেজ সেকশনের পাঠদানের সময় পরিবর্তন করা হয়। 
 ছুটির পর অভিভাবকদের না আসা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে নিরাপদে রাখা হয়। 
 প্রতি সাময়িক/সেমিস্টার পরীক্ষার মাঝে শ্রেণি পরীক্ষা নেওয়া হয়। শ্রেণির কাজ ছাড়াও ক্লাসে নিয়মিত বাড়ির কাজ ও অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়। 
 স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে সাময়িক/বার্ষিক/সেমিস্টার পরীক্ষা শেষে মূল্যায়নপূর্বক পরীক্ষার খাতা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের দেখানো হয়। প্রতি সাময়িক/সেমিস্টার পরীক্ষার পর রিপোর্ট কার্ড প্রদান করা হয়। অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। 
 স্কুল ও কলেজ সেকশনে নিয়মিত ব্যবহারিক ক্লাস নেওয়া হয়। 
 স্কুল ও কলেজ সেকশনে মাল্টিমিডিয়ায় ক্লাস নেওয়া হয়। 
 বিদ্যালয়ে এসে কোন শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে প্রয়োজনে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর  অভিভাবককে ফোন করা হয়। 
 বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার জন্য লাইব্রেরির ব্যবস্থা রয়েছে। 
 নিয়মিত শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা রয়েছে। 
 নবীন বরণ, ক্লাস পার্টি, পুনর্মিলন, শিক্ষা সমাপনী উৎসব, বিদায় অনুষ্ঠান ও সংবর্ধনা প্রদানসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের আয়োজন করে এ প্রতিষ্ঠান। 
 দুর্বল ছাত্রীদের জন্য বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। 
 পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে যথাযথ নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে অত্যন্ত স্বচ্ছতারসাথে সুযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। 
 প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট (www.sfxgsc.edu.bd) রয়েছে। 
 প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও শেখ রাসেল কর্নার রয়েছ। 
 প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় ম্যানেজিং কমিটি রয়েছে। 
 প্রতিষ্ঠানে একটি ক্যান্টিন রয়েছে। 
 কোন শিক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে ও প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করলে টিসি দেওয়া হয়। 
প্রতিবছর প্রায় শতভাগ পাশসহ সন্তোষজনক ফলাফলের দৃষ্টান্ত রাখে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসএসসি পাসের পর ছাত্রীরা দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। এইচএসসি পাসের পর প্রতিবছর কিছু শিক্ষার্থী মেডিক্যাল  ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। কালক্রমে প্রতিষ্ঠানের সুনাম, মর্যাদা ও খ্যাতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সীমিত সংখ্যক আসনে ভর্তিতে বছরের প্রথমে শুরু হয় ভর্তিযুদ্ধ। 
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।