দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : পরীক্ষামূলকভাবে ভিয়েতনামি বারোমাসি ও আঠাবিহীন কাঁঠালের চারা রোপণ করে সফলতা পেয়েছে গোপালগঞ্জের হর্টিকালচার সেন্টার। মাত্র দুই বছরের মাথায় গাছে ধরেছ প্রচুর ফল। আঠাবিহীন হওয়ায় এ কাঁঠাল ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে আশপাশের কয়েকটি এলাকার ফল চাষি ও বৃক্ষপ্রেমীদের মাঝে। বাণিজ্যিকভাবে এই জাতের কাঁঠাল বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেকেই। কৃষি বিভাগ বলছে, বারোমাসি ও আঠাবিহীন এই কাঁঠাল চাষ করে সারাবছর এই ফলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানিতে অবস্থিত হর্টিকালচার সেন্টারে তিন বছর আগে ভিয়েতনাম থেকে মাত্র ১০টি বারোমাসি ও আঠাবিহীন জাতের কাঁঠালের চারা এনে রোপণ করা হয়। মাত্র দুই বছরের মাথায় প্রতিটি গাছে ফল ধরতে শুরু করে। প্রাথমিক পর্যায়ে ভালো ফলন হওয়ায় কৃষি বিভাগ থেকে কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে নেওয়া হচ্ছে উদ্যোগ। সরবরাহ করা হচ্ছে চারা। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এ জাতের কাঁঠাল বারোমাসি ও আঠাবিহীন হওয়ায় সাড়া ফেলেছে আশপাশের কয়েকটি এলাকার ফল চাষিদের মাঝে। এখন বাণিজ্যিকভাবে এ জাতের ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে।
হর্টিকালচার সেন্টার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাণিজ্যিকভাবে এ জাতের কাঁঠাল চাষ হলে বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব। তাইতো কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ থেকে নেওয়া হচ্ছে উদ্যোগ। ইতোমধ্যে এ কাঁঠাল থেকে বীজ সংগ্রহ করে তা বিপণন করে চারা গজানোর পর সেই চারা সরবরাহ করা হয়েছে কয়েকজন বৃক্ষপ্রেমীর কাছে। আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য এ জাতের কাঁঠালের চারা সরবরাহ করা হবে বাগান মালিকদের কাছে। এই কাঁঠালের চারা নিতে আসা রাইসুল বলেন, আমি জীবনেও আঠা ছাড়া কাঁঠাল দেখিনি। এই হর্টিকালচার সেন্টারে প্রথম দেখলাম। আঠা ছাড়া কাঁঠাল দেখে অনেক অবাক হয়েছি। এখান থেকে চারা নিতে এসেছি। চারা নিয়ে আমার বাড়ির পাশে লাগাব। পাশের এলাকা থেকে চারা নিতে আসা জহিরুদ্দিন বলেন, আমি আগে কখনোই এই ধরনের আঠা ছাড়া কাঁঠাল দেখিনি। কয়েকজনের কাছে শুনে এসে প্রথম এই হর্টিকালচারে দেখছি। শুনেছি বারো মাসই গাছে কাঁঠাল দেখা যায়। এছাড়াও পুষ্টিগুণে ভরা ও সুস্বাদু। এ কারণেই আমি এই জাতের একটি কাঁঠাল বাগান করতে আগ্রহী। তাই এই হর্টিকালচার সেন্টারে চারা নিতে এসেছি।
হর্টিকালচার সেন্টারের এক কর্মকর্তা বলেন, তিন বছর আগে ভিয়েতনাম থেকে ১০টি চারা এনে এখানে রোপণ করা হয়। দুই বছরের মাথায় ফল ধরতে শুরু করে। এ কাঁঠাল পাকার পর আমরা সকলেই খেয়েছি। এ কাঁঠালে কোনো আঠা নেই। এর কোষগুলো তেমন রসালো নয় এবং সাদা রংয়ের হয়। খেতে খুবই সুস্বাদু। অনেকই এখান থেকে চারা সংগ্রহ করছে বাড়ি আঙিনায় শখ করে রোপণ করার জন্য। আবার অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে বাগান করার জন্যও এখান থেকে চারা সংগ্রহ করছে। হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যান তত্ত্ববিদ এএইচএম রকিবুল হাসান বলেন, বাজারে সবসময় যেকোনো ফলের দাম ভালো পাওয়া যায়। কাঁঠালের মৌসুমেও আমরা অনেক দামে কাঁঠাল কিনে থাকি। কোনো উদ্যোক্তা যদি বাণিজ্যিকভাবে এ কাঁঠালের বাগান করে তাহলে তিনি নিঃসন্দেহে লাভবান হবেন। এছাড়াও এখানে আমরা পরীক্ষামূলক চাষ করেছি এখান থেকে চারা উৎপাদন করে যাতে ফল চাষিদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারি সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
দেশকন্ঠ/অআ