• মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১২:০৯    ঢাকা সময়: ২২:০৯

ইমরান খানের বিরুদ্ধে ‘জামিন অযোগ্য’ গ্রেফতারি পরোয়ানা

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমানে প্রধান বিরোধী নেতা ইমরান খানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন দেশটির একটি আদালত। মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদের এফ-৮ করাচি আদালত এই পরোয়ানা জারি করেন।  আলোচিত ‘তোশাখানা মামলা’য় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে। এফ-৮ করাচি আদালতটি ইসলামাবাদের জুডিশিয়াল কমপ্লেক্সে অবস্থিত। ইসলামাবাদের অধিকাংশ সেশন আদালতের অবস্থান এই কমপ্লেক্সে। জুডিশিয়াল কমপ্লেক্সের তিনটি আদালতে চলছে ইমরানের বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রধান চারটি মামলার বিচার কার্যক্রম। কমপ্লেক্সের ব্যাংকিং আদালতে চলছে নিষিদ্ধ তহবিল গ্রহণ বিষয়ক মামলার বিচার, অ্যান্টি টেরোরিজম আদালতে চলছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা বিষয়ক মামলার বিচার এবং এফ-৮ করাচি সেশন আদালতে চলছে তোশাখানা ও হত্যাচেষ্টার মামলার বিচারিক কার্যক্রম। তিন আদালতে চলমান চারটি মামলাতেই নিজের আইনজীবীদের মাধ্যমে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান; এবং জামিন আবেদনগুলোর ওপর শুনানির নির্ধারিত দিন ছিল মঙ্গলবার।
 
পাকিস্তানের দৈনিক ডনের প্রতিবেদন অনুসারে, মঙ্গলবার ব্যাংকিং ও অ্যান্টি টেরোরিজম আদালতের জামিন আবেদনের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ইমরান খান। সে দু’টি মামলায় তার জামিন মঞ্জুরও করেছেন আদালত। তারপর আইনজীবীদের পরামর্শে আরেকটি মামালার শুনানিতে উপস্থিত থাকার জন্য জুডিশিয়াল কমপ্লেক্স ছেড়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে উদ্দেশে রওনা হন পিটিআই চেয়ারম্যান। ফলে এফ-৮ করাচি সেশন জজ আদালতে তোশাখানা মামলার আগাম জামিন আবেদন শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না তিনি। মামলার শুনানির সময় বিচারক জাফর ইকবাল পিটিআই চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারণ জানতে চান। জবাবে ইমরানের আইনজীবী আলী বুখারি বলেন, অন্য দু’টি আদালতের জামিন শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন পিটিআই চেয়ারম্যান, সেখান থেকে হাইকোর্টে গেছেন। এ কারণে আজ আর আদালতে আসা তার পক্ষে সম্ভব না ও হতে পারে। আদালতকে মামলার বিচার কার্যক্রম ৫ দিনের জন্য মুলতবি রাখার আর্জিও জানান আলী বুখারি। কিন্তু তার এই আর্জির বিরোধিতা করে মামলার বাদিপক্ষ নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘গুরুতর কোনো কারণ ব্যতীত তিনি যদি শুনানির সময় অনুপস্থিত থাকেন, সেক্ষেত্রে তা আদালতের বিবেচনাধীনে আসা উচিত হবে না।’
 
বাদিপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, ইমরান খান চাইলেই জুডিশিয়াল কমপ্লেক্সের তিন আদালতের শুনানি শেষ করে হাইকোর্টের উদ্দেশে রওনা হতে পারতেন। এই পর্যায়ে বাদিপক্ষের আইনজীবীকে সমর্থন করে বিচারক বলেন, ‘তার এখানে আসা উচিত ছিল; কারণ মামলাটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্ষকাতর।’ তারপরই গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় স্বাক্ষর করে এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম ৭ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি রাখেন বিচারক। গত শতকের সত্তরের দশকে পাকিস্তানের সরকারি একটি বিভাগ হিসেবে তোশাখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বিভাগটি প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্যান্য বিশিষ্ট জনদের দেওয়া উপহার জমা রাখে। তোশাখানার নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা বা সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের পাওয়া সব উপহার অবশ্যই এই বিভাগে জমা দিতে হবে। যারা এসব উপহার পেয়েছেন তারা পরে এগুলো কিনে নিতে পারবেন। কিনে নেওয়ার পর এসব উপহার বিক্রির বিষয়টি অবৈধ না হলেও অনেকেই এটিকে অনৈতিক বা নীতিগতভাবে ভুল বলে মনে করেন।
 
ইমরানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের করা হয় তাতে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় থাকাকালে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন জিনিসের ৫৮টি বাক্স উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন। গত অগাস্টে পাকিস্তানে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের সবচেয়ে বড় শরিক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ- নওয়াজের (পিএমএলএন) সদস্য মোহসিন নওয়াজ রানঝা ইমরানের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় তোষাখানা থেকে বিদেশি বিশিষ্টজনদের দেওয়া উপহার কিনলেও নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে সেগুলোর উল্লেখ করেননি। এ সম্পর্কে গত ২২ আগস্ট পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ ‍নির্বাচনক কমিশনকে দেওয়া এক চিঠিতে ইমরান খানকে ‘অসৎ’ ঘোষণা করে তাকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করার আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিজের ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় তোশাখানা থেকে নামমাত্র মূল্যে এসব উপহার নিয়েছেন এবং এসব উপহারের অধিকাংশই তিনি বিক্রি করেছেন। উপহারের মধ্যে কিছু দামি হাতঘড়িও রয়েছে। এসব উপহারের আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ২০ লাখ রুপি। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ইমরান খান এসব উপহার গ্রহণ করেছিলেন বলে আবেদনপত্রে উল্লেখ করেন স্পিকার।
দেশকন্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।