দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন : শর্ত ছাড়াই দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের (আরএনপিপি) অধিগ্রহণকৃত জমির ফসলের ক্ষতিপূরণ পেয়ে খুশি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা। ১৯ মার্চ বিকেলে উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে ক্ষতিগ্রস্থ ১৬ জন কৃষকের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়।
এসময় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও সাবেক ইউপি মেম্বার মাহাবুল ইসলাম বলেন, বিনা শর্তে এবং ঘুষ ছাড়াই ক্ষতিপূরণের ৯২ হাজার টাকা পেয়ে আমি খুশি। চররূপপুরে আরেক কৃষক আপাল বিশ্বাস পেয়েছেন ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর নিরাশায় ভুগছিলাম। আজ চেক পেয়ে খুব ভালো লাগছে। চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস। পাকশী ইউপির চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু বিশ্বাসসহ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও সাংবাদিকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু বিশ্বাস বলেন, বিভিন্ন অপপ্রচার শর্তেও আমার এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা কোন শর্ত ছাড়াই তালিকায় উল্লেখিত ক্ষতিপূরণের সম্পূর্ণ টাকা পেয়ে খুব খুশি।
ইউএনও পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, ২০১৭ সালে চরাঞ্চলের ৯৯০ একর খাস জমি প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়। এসব খাস জমিতে স্থানীয় কৃষকেরা ফসলের চাষাবাদ করতেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে ফসলের ক্ষতিপূরণ প্রদানের লক্ষ্যে অস্থায়ীভাবে ৮০০ একরে চাষাবাদকারী ৬২৫ জন এবং ১৯০ একরে ১৫০ জনসহ মোট ৭৭৫ জনের তালিকা প্রস্তুত হয়। পরমাণু শক্তি কমিশন ২০১৭ সালে ক্ষতিপূরণের জন্য ২৭ কোটি ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ টাকা বরাদ্দ করেন। এ প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৫ জুলাই ৬৪ জনকে ১ কোটি ৭৫ হাজার ৫৫০ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে কৃষকরা নতুনভাবে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়লে এবং নতুন করে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান বন্ধ হয়ে যায়। পাবনা যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতের মোকদ্দমার আদেশে, হাইকোর্টের রীট পিটিশনের রায় এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক ৩১৪ জনকে সর্বমোট ২০ কোটি ২৪ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫৫ টাকা এবং ২৮ জন কৃষককে ৮৪ লক্ষ টাকা ফসলের ক্ষতিপূরণের অনুদান প্রদান হলো। সোনালী ব্যাংক ঈশ^রদী শাখায় স্ব-স্ব ব্যাংক এ্যাকাউন্টের অনুকূলে চেক প্রদান করা হয়েছে বলে ইউএনও জানিয়েছেন। ক্ষতিপূরণের শতকরা ৩ ভাগ উৎস কর হিসেবে সরকারি কোষাগারে ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে জমা প্রদান করা হচ্ছে।
সূত্র : ইত্তেফাক
দেশকণ্ঠ/রাসু