দেশকণ্ঠ প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে হলদে চাদরে মোড়া। যতদূর চোখ যায় সূর্যের দিকে মুখ করে হাসছে সূর্যমুখী। আর এমন মনোরম দৃশ্য দেখতে দর্শনার্থীরা প্রতিদিনই ভিড় করছে। ফুলে ভরে গেছে খামারের জমি। সেখানেই সেলফি তোলার ঝড়।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার তুমলিয়া গ্রামের সরকারী শ্রমিক কলেজ সংলগ্ন টঙ্গি-নরসিংদী সড়কের পাশের জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। মনোরম সুন্দর পরিবেশ, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা ও রাস্তার নিকটবর্তী হওয়ায় এমন দৃশ্য দেখাকে হাতছাড়া করেতে চাইছেন না প্রকৃৃতি প্রেমীরা। সেই সঙ্গে সেলফি, গ্রুপ ছবি তো আছেই।
সরেজমিনে দেখা যায় সবুজ মাঠের এই হলুদ রং ছবিতে এনে দিচ্ছে নতুন মাত্রা। আর সেই দৃষ্টি কাড়া ফুলের মধ্যে স্বজন নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছবি তুলতে ভিড় করছে সব বয়সের নারী পুরুষ। সরেজমিনে দেখা, প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাধুর্যে ঘেরা সূর্যমুখীর হলুদ আভায় ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। রূপের মাধুর্য বাড়াতে বর্ণিল হয়ে উঠেছে রঙের বর্ণচ্ছটায়। সূর্যমুখী ফুলের হলুদ রং ও তার ঘ্রাণ এনে দেয় আলাদা এক মাদকতা। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সেই নজরকাড়া দৃশ্য দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছেন স্থানীয়রা। প্রকৃতির স্পর্শ পেতে প্রতিনিয়ত এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের আগমনে মুখরিত কালীগঞ্জের সূর্যমুখী ফুলের বাগান।
উপজেলা বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্বামী-সস্তান নিয়ে ছবি তুলতে আসা গৃহবধূ শান্তা গমেজ বলেন, ফেসবুকে ফুলের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে ছবি তুলতে এসেছি। কারণ কালীগঞ্জে এমন পরিবেশ আর কোথাও নেই। বন্ধুবান্ধব নিয়ে ছবি তৃলতে আসা স্কুল শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, মাঠজুড়ে এমন সূর্যমুখী ফুল কখনো দেখিনি। স্মৃতিতে ধরে রাখতে এখানে ছবি তুলতে এসেছি আমরা।
খামারের কেয়ারটেকার উৎসব ক্রুস জানান, ফুল ফোটার পর ফেসবুকে ভাইরাল হলে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। কাউকে আটকানো যাচ্ছে না। খামারের মূল গেট বন্ধ রেখেও মানুষজন আটকানো সম্ভব হচ্ছে না। খামার মালিক তুমলিয়া গ্রামের সুকুমার পালমা জানান, তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার অধীনে খামারে প্রতি বছরই সূর্যমুখীর চাষ করা হয়। এবার ৫০ শতাংশের অধিক জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। পুরো মাঠজুড়ে ফুলে ভরে যাওয়াতে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সব শ্রেণির মানুষ ছবি তোলার জন্য ভিড় করছেন। কেউ যেন ফুল না ছেড়ে সে জন্য সেখানে লোকবল নিয়োগ করা হয়েছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রতিবেদককে জানান, কালীগঞ্জে এক একর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। কৃষকদের সরকারী ভাবে সার,বীজ,ড্রাম সরবরাহ করা হয়েছে এবং পরিচর্যার জন্য খামারীদের খামার প্রতি ৩ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হবে।
দেশকণ্ঠ/আসো