দেশকণ্ঠ প্রতিবেদক : কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, পাহাড়ে অর্থকরী ফসল চাষ দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, 'পাহাড়ে একসময় শুধু জুম চাষ হতো। এখন সমতলের মতো অনেক ফসল চাষ করা যাচ্ছে। পাহাড়ের বৃহৎ এলাকা জুড়ে কফি, কাজুবাদাম, গোলমরিচ, পেঁপে, আনারস, আম, ড্রাগন, মাল্টাসহ ৮-১০টি অর্থকরী ফসলের চাষ অনেক সম্ভাবনাময়। বিশেষ করে দেশে ও আন্তর্জাতিক বাজারে কাজুবাদাম ও কফির বিশাল চাহিদা রয়েছে, দামও অনেক বেশি। সেজন্য, এসব ফসলের চাষাবাদ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বাড়াতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এসব ফসলের চাষ আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে পারলে পাহাড়ের অর্থনৈতিক চেহারা পাল্টে যাবে।'-বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় কাজুবাদাম ও কফি বাগান পরিদর্শন এবং চাষিদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে ও বিশাল ভূমিকা রাখবে। পাহাড়ী এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানের দর্শনীয় উন্নয়ন হবে। একইসাথে, দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে। কফি ও কাজুবাদামের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি এবং প্রক্রিয়াজাতকরণে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এসব ফসলের চাষ জনপ্রিয় করতে কৃষক ও উদ্যোক্তাদেরকে আমরা বিনামূল্যে উন্নত জাতের চারা, প্রযুক্তি ও পরামর্শসেবা প্রদান করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত কফি ও কাজুবাদামের ১২ লাখ চারা বিনামূল্যে কৃষকদেরকে দেয়া হয়েছে; আর এ বছর আরও ২০ লাখ চারা দেয়া হবে।
কৃষকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিবান্ধব ও কৃষক দরদী। তিনি কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে যাচ্ছেন। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে ও কৃষকের কল্যাণে গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী সারের দাম এক টাকাও বাড়ান নি, বরং কয়েক দফায় দাম কমিয়েছেন। তিনি বলেন, সারসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের ফলে দেশে ধানসহ সকল ফসলের উৎপাদন বেড়েছে। এর ফলে বিশ্ব মন্দা, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বর্তমানে দেশে খাদ্যের কোনরকম সংকট নেই। উল্লেখ্য, পাহাড়ে কাজুবাদাম ও কফির চাষের সম্প্রসারণের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ২১১ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
প্রকল্পের পরিচালক শহীদুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় কাজুবাদাম চাষ হতো ১৮০০ হেক্টর জমিতে, এখন হচ্ছে ৩৫০০ হেক্টর জমিতে, আর ২০২০ সালে কফি চাষ হতো ১২৫ হেক্টর জমিতে, এখন হচ্ছে ১৩৫০ হেক্টর জমিতে। পরিদর্শনকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, দীপংকর তালুকদার এমপি, বাসন্তী চাকমা এমপি, কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বান্দরবানের উপপরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
দেশকণ্ঠ/রাসু