• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১২:৩৯    ঢাকা সময়: ২২:৩৯

সায়মন বিচের বালুর চরে আটকা পড়ল মৃত তিমি

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : ‌কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ভাসতে থাকা বিশালাকার মৃত তিমি প্রায় ১০ ঘণ্টা পর বালুচরে আটকা পড়েছে। মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সায়মন বিচে এই মৃত তিমিটি আটকে পড়ে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি সৈকতের কাছে সমুদ্রের পানিতে বিশালাকৃতির একটি মৃত তিমি ভাসতে দেখা যায়। দুপুরে রশি বেঁধে তিমিটি উপকূলে তুলে আনার চেষ্টা করেন সৈকতের স্বেচ্ছাসেবীরা। বিকেল ৪টার দিকে ভাটা শুরু হলে তিমিটি গভীর সাগরের দিকে ভেসে যেতে থাকে। পরে কলাতলী সায়মন বীচে এসে আটকে পড়ে তিমিটি। রাত ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটক সেলের ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ। 
 
তিনি জানান, প্রায় ১০ ঘণ্টা সাগর ভাসার পর এটি সমুদ্রতীরের বালুচরে আটকা পড়েছে। অর্ধগলিত তিমিটি মনে হয় ২০-২৫ দিন আগে মৃত্যু হয়েছে। এটিকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ তিমির শরীরের জাল মোড়ানোসহ বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। এটি এখন প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সকালের মধ্যে গর্ত করে পুতে ফেলতে হবে। কারণ কলাতলী পর্যটকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর ১২টার দিকে ১০-১২ জন স্বেচ্ছাসেবী দ্রুতগতির কয়েকটি নৌযান (স্পিডবোট) নিয়ে মৃত তিমির কাছে যান। এরপর তারা রশি দিয়ে তিমিটি নৌযানের সঙ্গে বেঁধে কূলে টেনে আনার চেষ্টা করেন। বিশালাকৃতির কারণে তিমিটি ঘটনাস্থল থেকে নাড়ানো সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থল থাকা কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় একজন জেলে হিমছড়ি সৈকত থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার গভীর সাগরে বিশালাকৃতির মৃত তিমি মাছটি ভাসতে দেখেন। এরপর জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিভিন্ন চেষ্টা চালিয়েও তিমিটিকে কূলে আনা যায়নি। তবে রাত ১০টার দিকে এটি বালুচরে আটকা পড়ে। 
 
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেন, তিমিটি এখনো অগভীর জলে রয়েছে। ড্রোন ইমেজের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ভেসে আসা মৃত তিমিটি ব্রাইডস জাতের। এর বৈজ্ঞানিক নাম বেলিনিওপেট্রা ইডিনি।  তিনি বলেন, ইতোপূর্বে ২০২১ সালের ৯ ও ১০ এপ্রিল দুটি তিমি হিমছড়ির ঠিক একই পয়েন্টে ভেসে এসেছিল। যে দুটি তিমি গত বছর ভেসে এসেছিল সেগুলোও বেলিনিওপেট্রা ইডিনি প্রজাতির তিমি ছিল বলে আমরা ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছিলাম। বেলাল হায়দার বলেন, ভেসে আসা তিমির শরীরে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। শরীরে জালের বিশাল রশি পেঁচিয়ে আছে। মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মাছ ধরার বিশাল জালে আটকা পড়ে ও গুরুতর আঘাত পেয়ে কিংবা অন্য কোনো কারণে তিমিটি মারা গেছে। তিমি সাধারণত মৎস্য শিকারিদের জালে আটকা পড়ে, জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে কিংবা সমুদ্রে শব্দ দূষণের কারণে পরস্পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দিকভ্রান্ত হয়ে উপকূলের অগভীর জলে এসে আটকা পড়ে মারা যায়। কখনো সঙ্গীর মৃত্যু হলেও এদেরকে সৈকতের অগভীর জলে আত্মাহুতি দিতেও দেখা যায়।
 
তিনি বলেন, এ প্রজাতির তিমির দাঁত নেই। মুখের মধ্যে চিরুনির মতো একটি অংশ দিয়ে খাবার প্রক্রিয়াজাত করে। তিমির বিচরণের জন্য গভীর ও ঈষৎ উষ্ণ পানির প্রয়োজন। তাই ভারত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরকে তিমির বিচরণের সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান হিসেবে মনে করা হয়। এরা কখনো একাকী, কখনো যুগলবন্দী কিংবা দলবদ্ধ হয়ে বাস করে। এর আগে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে মেরিন ড্রাইভের দরিয়ানগর ও হিমছড়ি সৈকতে বিশাল আকৃতির দুটি মৃত তিমি ভেসে এসেছিল।
দেশকন্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।