• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০৯:৫৯    ঢাকা সময়: ১৯:৫৯

ফের ডিম দিয়েছে খানজাহান আলী দীঘির কুমির

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : ‌বাগেরহাট হযরত খানজাহান আলী (রহ.) -এর মাজার সংলগ্ন দীঘিতে থাকা মিঠাপানির মা কুমিরটি ডিম দিয়েছে। এবার কুমিরটি প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি ডিম দিয়েছে। তবে এই ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর আগে অনেকবার এই মা কুমির ডিম দিলেও, ডিম থেকে কোনো বাচ্চা ফোটেনি। যার কারণে কুমিরের ডিম দেওয়া নিয়ে ফকিরদের মাঝে তেমন কোন আগ্রহ নেই। কুমির বিশেষজ্ঞরা বলছেন পুরুষ কুমিরটির বয়স বেশি হওয়ায় প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। খানজাহান আলী (রহ.) -মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী বলেন, ধারণা করছি প্রায় এক মাস আগে কুমিরটি দীঘির পূর্ব পাড়ের বিনা ফকিরের বাড়ির পাশে ডিম পেড়েছে। কয়েকদিন আগে আমাদের চোখে পড়েছে। এই নিয়ে অনেকবার এই মা কুমিরটি দিঘীতে ডিম পেড়েছে। কিন্তু কখনও বাচ্চা হয়নি। এভাবে বাচ্চা না হলে কুমিরের বংশ বৃদ্ধি হবে না। মাজারের দীঘি থেকে মিঠা পানির কুমির হারিয়ে যাবে। যার ফলে মাজারের ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হবে না।
 
সুলতানী শাসন আমলে খ্রিস্টীয় ১৪ শতকের প্রথম দিকে হযরত খান জাহান আলী (রহ.) বাগেরহাটে ‘খলিফতাবাদ’ নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় তিনি ৩শ ৬০টি দীঘি খনন করেন। এর মধ্যে সব থেকে বড় ‘ঠাকুর দীঘি’। স্থানীয়দের ধারণা এই দিঘীর আয়তন ৩৬০ একর। যে দীঘির পাড়ে তার সমাধি রয়েছে। এই দীঘিতে তিনি দুটো মিঠাপানির প্রজাতির কুমির এনেছিলেন। যাদের নামছিল ‘কালাপাহাড়’ ও ‘ধলাপাহাড়’। খানজাহান (রহ) এর মৃত্যুর পর মাজারের খাদেম ও ভক্তরা ওই কুমির দুটিকে নিয়মিত খাবার দিতেন। দীর্ঘদিন পর্যন্ত ওই কুমির যুগলের বংশ ধরেরা এখানে বসবাস করে আসছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময় এই দীঘির কুমির মারা যাওয়ার পরে মাত্র দুটি কুমির ছিল। এরই মাঝে মাজারের দীঘিতে মিঠাপানির কুমিরের বংশবিস্তারের জন্য ২০০৫ সালে ভারতের মাদ্রাজ থেকে ছয়টি কুমির এনে এখানে ছাড়া হয়। মাদ্রাজি কুমির হিংস্র প্রকৃতির ছিল। তাদের মারামারির কারণে হযরত খানজাহান (রহ) এর আমলের একটি কুমির ‘কালা পাহাড়’ অসুস্থ্য হয়ে পরে। ২০০৬ সালে কুমিরটি মারা যায়। সর্বশেষ ২০১৫ সালে অবশিষ্ট একটি কুমির ধলা পাহাড়‘র মৃত্যু হয়।এর মধ্য দিয়ে খানজাহান আলী (রহ) এর আমলের কুমির যুগের সমাপ্তি ঘটে। এই সময়ে মাদ্রাজ থেকে আনা ৬টি কুমিরের চারটি কুমির মারা যায়। বর্তমানে মাজার দীঘিতে দুটি কুমির রয়েছে।
 
বার বার ডিম দিলেও বাচ্চা না ফোটার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করেছে বাগেরহাট জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ ও করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের কর্মকর্তাগণ। তাদের দাবি বয়সের কারণে প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় মাজারের কুমিরের ডিমে বাচ্চা ফুটছে না। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, বয়সের কারনে প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় দীঘিতে থাকা মিঠাপানির কুমির দুটি বারবার ডিম দিলেও কোন বাচ্চা হচ্ছে। এছাড়া এখানে থাকা কুমিরদের খাবারের বিষয়ে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। মাজারে আসা ভক্ত ও দর্শনার্থীরা খাবার হিসেবে যে যার মত চর্বিযুক্ত মাংস প্রদান করেন। যার ফলে ‍কুমির দুটোর পেটে অতিরিক্ত চর্বি জমে গেছে। বাচ্চা না ফোটার এটাও অনেক বড় কারণ। তবে নতুন করে অল্প বয়সী দুটি নারী-পুরুষ কুমির দীঘিতে ছাড়তে পাড়লে বাচ্চা ফোটানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
দেশকন্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।