দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : একসময়ের আলোচিত-সমালোচিত মডেল ও অভিনেত্রী সানাই মাহবুব শোবিজকে বিদায় জানিয়ে আবু সালেহ মুসা নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসারী হয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন সময় স্বামীর সঙ্গে ছবি পোস্ট করতে দেখা যায় সানাইকে। মাঝেমধ্যে দুজনে লাইভে এসেও নেটিজেনদের সঙ্গে সময় ভাগ করে নিতেন। তবে গত কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দাম্পত্য সমস্যা ও বিচ্ছেদের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তিনি। এবার ফেসবুকের মাধ্যমে কাজে ফেরার ঘোষণা দিলেন সানাই। মঙ্গলবার (২৩ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে সানাই কাজে ফেরার কথা জানান। ভেরিফায়েড পেজে সানাই লিখেন, ‘আমি অবশ্যই কাজে ফিরব তবে সেটা কোনো ধুন্দুমার নাচ গান কিংবা অশ্লীলতায় না। পর্দা মেইনটেইন করে যদি উপস্থাপনা কিংবা নিউজ প্রেজেন্ট করা যায় তাহলে আমি অবশ্যই কাজ করতে আগ্রহী। টিভি চ্যানেল থেকে আমাকে পেতে হলে ইনবক্সে যোগাযোগ করুন এই পেইজে।’
এরপর সানাই তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে রাত ১টার দিকে আরেকটি স্টোরি দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমি কাজে ফিরতে চাই, কারণ এখন কাজ ছাড়া আমার জীবনে আর কিছুই নেই, কেউ নেই। যাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করেছি সে বুঝেনি আমাকে। তার পরিবার বোঝেনি আমাকে। কিন্তু কোনো আইটেম সং কিংবা অশ্লীল ফটোশুট দিয়ে না, পর্দা বজায় রেখে যদি নিউজ প্রেজেন্টার কিংবা উপস্থাপনা করা যায় তাহলে অবশ্যই করবো.. আমার সঙ্গে যারা কাজের ব্যাপারে যোগাযোগ করতে চান তাদের জন্য আগামীকাল একটা নম্বর দিব। যারা সেই নম্বরে অযথা ফোন দিয়ে আজেবাজে কথাবার্তা বলবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আমি আস্তে করে নম্বরটা বন্ধ করে দিব। কারণ আমার আরও নম্বর আছে.. সো অযথা বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকবেন বলে আশা করি।’ এদিকে গত কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দাম্পত্য সমস্যা ও বিচ্ছেদের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন সানাই। গত শনিবার (২০ মে) রাতে সানাই তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘যে স্বামী বুঝেনি তার স্ত্রী তার কাছে কতটুকু দামি, যে স্বামী বুঝেনি তার ওপর তার বিবাহিত স্ত্রীর অধিকার কতটুকু, যে স্বামী বুঝেনি সংসার কী? যে স্বামী বুঝেনি ইসলাম স্বামীর ওপর স্ত্রীর অধিকার কতখানি দিয়েছে, যে স্বামী স্ত্রীর অধিকার আদায় কী জিনিস, সেটা সম্পর্কে অবগত না, যে স্বামী, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের চেয়ে অন্য কিছুকে প্রাধান্য দেয়, তার হাতটা আস্তে করে ছেড়ে দেওয়াই উত্তম।’
সানাই আরও লেখেন, ‘ইসলাম যে নারীকে সর্বোচ্চ উঁচু আসনে আসীন করেছে, সেই নারীর সম্মান তো এত কম হওয়ার কথা না। নারী তুমি ভীষণ ইম্পর্ট্যান্ট তোমার নিজের কাছে, নিজেকে এত কম দামি মনে করো না। ছেড়ে দেওয়াই উত্তম সেই পুরুষের হাত, যে বুঝেনি নারীর কদর। আলহামদুলিল্লাহ। জীবন সব সময় সুন্দর।’ এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সানাইয়ের স্বামী আবু সালেহ মুসা বলেন, আমরা একসঙ্গে আছি, কথাবার্তা বলতেছি। চেষ্টা করছি সম্পর্কের উন্নতি করার জন্য। সংসারে শান্তি ও অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে সানাই আবার কাজে ফিরতে চায়। আমি তার কিছু চাহিদা যেহেতু মেটাতে পারছি না, সে চাকরি করলে সেটা পূরণ করতে পারবে। আমার সঙ্গে তার এ বিষয়ে যেটা কথা হলো, সে হিজাব পড়ে নিউজ পেজেন্ট করবে বা ইসলামিক অনুষ্ঠান করবে। সে কাজে ফিরবে কিন্তু পর্দার সঙ্গে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৭ মে পারিবারিক আয়োজনে কাউকে না জানিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে চেয়েছিল সানাইয়ের পরিবার। পরে ঠিকই জানাজানি হয়ে যায়। সানাইয়ের পৈতৃক নিবাস নীলফামারীতে। তার স্বামী মুসার বাড়িও একই জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের দক্ষিণ দুরাকুঠি এলাকায়। যদিও এর আগে ২০১৯ সালে সানাইয়ের একটি বিয়ের খবর শোনা যায়। সাবেক এক মন্ত্রীর সঙ্গে তার বাগদান হয়েছিল। সানাই নিজেও খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করেছিলেন। তবে ওই বিয়ে সম্পর্কে পরবর্তীতে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। মডেল হিসেবে শোবিজে কাজ শুরু করেছিলেন সানাই মাহবুব। পাশাপাশি উপস্থাপনাও করেছেন। এরপর ২০১৬ সালে ‘ভালোবাসা ২৪×৭’ নামে একটি সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে পা রাখেন তিনি। পরবর্তীতে আরও কয়েকটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হলেও তার কোনো সিনেমাই মুক্তি পায়নি। পেশাগত জীবনের চেয়ে ব্যক্তিগত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার চর্চার কেন্দ্রে ছিলেন সানাই। শরীরে সার্জারি করিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন এই মডেল। তবে সেসব বিতর্ক ভুলে এখন নতুনভাবে জীবন পার করতে চান তিনি।
দেশকন্ঠ/অআ