• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০৫:৪১    ঢাকা সময়: ১৫:৪১

বাইডেন-মোদী বৈঠক : গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা

বিশেষ প্রতিবেদন : যুক্তরাষ্ট্র সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে যে বৈঠক হয়েছে সেখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই সফরে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, মহাকাশ গবেষণা, সেমিকন্ডাক্টর এবং খনিজ সম্পদ নিয়ে বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর করা হয়। সূত্র বিবিসি।
 
দুই নেতার বৈঠকের পর এক যৌথ ঘোষণায় এসব বিষয় জানানো হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে দুই ঘণ্টা একান্ত বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণা প্রকাশ করা হয়। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে বৈঠকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
 
মি. বাইডেন বলেন, আমেরিকা এবং ভারতের ‘ডিএনএ'র’ মধ্যে গণতন্ত্র রয়েছে। তিনি ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রশংসা করেছেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর সরকারের আমলে ভিন্ন মতাবলম্বী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর দমন-পীড়নের বিষয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো যেসব অভিযোগ তুলেছে সেটি নিয়ে মি. বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়। “ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রর সম্পর্ক যে জায়গায় অবস্থান করছে, চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়টি সে রকম নয়। এর মৌলিক কারণ হচ্ছে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারষ্পরিক শ্রদ্ধা হচ্ছে দুই দেশই গণতান্ত্রিক,” বলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
 
রাষ্ট্রীয় ডিনারের অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, “দুটো মহান জাতি, দুটো মহান বন্ধু এবং দুটো বড় শক্তি, চিয়ার্স।” জবাবে নরেন্দ্র মোদী বলেন, “ আপনি মৃদুভাষী, কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে আপনি বেশ দৃঢ়।” যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। মি. মোদী তার নয় বছরের শাসনামলে কখনোই এ ধরণের সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেননি। সংবাদ সম্মেলনে একজন ভারতীয় এবং একজন আমেরিকান সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন। এই দুটো প্রশ্নই আগে থেকে নির্ধারিত ছিল। তিনি অনুবাদকের মাধ্যমে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
 
সিএনএন জানিয়েছে, যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেবার বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা হয়েছে। কারণ, ধরণের সংবাদ সম্মেলন করার বিষয়ে ভারতের দিক থেকে তেমন একটা আগ্রহ ছিল না। যৌথ সংবাদ সম্মেলন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের অবস্থান এবং ব্যাপক আলোচনার পরে ভারতও শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছে, জানিয়েছে সিএনএন। সংবাদ সম্মেলনে ভারতের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, মি. মোদী ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি খারিজ করে দেন।
 
যৌথ বিবৃতিতে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন-ভিত্তিক নীতির মধ্য দিয়ে আরও শক্তিশালী, বৈচিত্র্যময় মার্কিন-ভারত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়। জাতিসংঘের রীতিনীতি, আন্তর্জাতিক আইন ও সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে বর্তমান যে বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে সেটাকে সম্মান জানানোর প্রতি জোর দিয়েছে দুই পক্ষই। মিয়ানমার ও উত্তর কোরিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে জঙ্গি হামলার ক্ষেত্র হিসেবে যেন ব্যবহার না করা হয় সে বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয় - যুদ্ধের কারণে বিশ্ব যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে তা থেকে উত্তরণের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
 
অবনতি ঘটতে থাকা মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দুই নেতা। দেশটিতে নির্বিচারে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দিয়ে গঠনমূলক আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এগিয়ে নেয়ার আহবান জানানো হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। আল-কায়েদা, আইসিস, লস্কর-এ-তাইয়েবার মতো জাতিসংঘের তালিকাভুক্ত জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। এছাড়া আফগানিস্তানকে শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং স্থিতিশীল করার ব্যাপারে সমর্থন জানিয়েছেন জো বাইডেন ও নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন ধরণের সামরিক ও প্রযুক্তি-ভিত্তিক সম্পর্ক বাড়ানোর পাশাপাশি সামরিক জোট কোয়াডকে আরও কার্যকরী করে গড়ে তোলার ব্যাপারে একমত হয়েছে দুই পক্ষই।
 
প্রতিরক্ষা বিষয়ক দুই দেশের অংশীদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবারের বৈঠকে। সামরিক পর্যায়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা পরমাণু বিদ্যা সংযোজনের পাশাপাশি ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে আমেরিকার সহযোগিতার বিষয়টিও উঠে এসেছে।
এডিট/আসো
 
 
 
 
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।