দেশকণ্ঠ অনলাইন : সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে পুরাতন বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণ করে নিতে বান্দরবানে শুরু হয়েছে তঞ্চঙ্গ্যাদের তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বিষু উৎসব। বিষু উৎসবে ফুলবিষু, মূলবিষু ও নয়া বছর মোট তিন দিন পালন করে থাকে তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী। এছাড়াও ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে চাকমাদের বিজু উৎসব।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি স্টেশনের সাঙ্গু নদীর তীরে ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সেজে পাহাড়ি তরুণ তরুণীরা সবার মঙ্গল কামনায় কলাপাতায় করে ভক্তি শ্রদ্ধাভরে গঙ্গাদেবীর পূজা করেন।পরে দেবীর উদ্দেশে ফুল ভাসিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানী ভুলে নতুন বছরের শুভ কামনা করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সূর্য উদয়ের আগেই সাঙ্গু নদীর তীরে ফুল ভাসাতে শতাধিক তঞ্চঙ্গ্যা ও চাকমা শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ভিড় জমায়। কেউ কেউ নদীর চরে বসে দলবদ্ধ হয়ে কলাপাতার উপরে নানা রঙের ফুল সাজাচ্ছেন। এর পর দলবদ্ধ হয়ে গঙ্গদেবীর উদ্দেশ্যে পূজা শেষে নদীর পানিতে সেই ফুল ভাসিয়ে দিচ্ছেন এবং কড়জোড়ে নমস্কার করছেন। এদিকে গঙ্গাদেবীর পূজার শেষে সকাল থেকে ঘরে ঘরে ২০ থেকে ৩০ ধরনের সবজি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পাজন। নতুন পোশাক পরিধান করে একে অপরের বাসায় পাজন খেতে যাচ্ছেন প্রত্যেকেই।
ফুলভাসাতে আসা রনিজ চাকমা, কিরন জ্যোতি চাকমাসহ অনেকে বলেন, পুরোনো সব গ্লানি মুছে দিতে গঙ্গা মায়ের উদেশ্যে আমরা ফুল ভাসিয়ে উৎসবটি পালন করে থাকি।আগামীকাল থেকে যে যার গ্রামে পালন করবে মূল বিঝু। সাঙ্গু নদীর তীর ফুল ভাসাতে আসা ইন্দ্রানী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, খুব ভালো লাগছে। সাঙ্গুর তীরে অনেক দিন পরে আসলাম। এটা আমাদের আনন্দের উৎসব। আমাদের বিশ্বাস পুরাতন বছরটাকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে গ্রহণ করি। নতুন বছরটা যেন সুখে শান্তিতে কাটাতে পারি।
নদীর তীরে পূজা করতে আসা পলাশ তঞ্চঙ্গ্যা জানান, নদীর তীরে ফুল দিয়ে গঙ্গাদেবীকে পূজা করি। আর নতুন বছরটা যাতে সুখে শান্তিতে বাস করতে পারি সেই প্রার্থনায় করি।
দেশকণ্ঠ