দেশকন্ঠ অনলাইন : জেলায় কাঁচাবাজারগুলোতে শীতকালীন সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। গত ১৫ দিন ধরে বাজারে সবজি ভরপুর। ক্রেতারা সবজি কিনে স্বস্তি পেলেও কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছে। মূলত উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজারে পর্যাপ্ত সবজি আসায় দাম একেবারে কমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও মূলার দাম।
বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে এই তিনটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে ৫-৬ টাকা কেজিতে। সবজির দাম না পেয়ে কৃষকরা দিশেহারা। ফলে অনেক কৃষক ফুলকপি, মূলা জমি থেকে তুলছে না। উৎপাদন খরচ ওঠা তো দূরের কথা মাঠ থেকে বাজার পর্যন্ত আনা সবজির খরচ উঠছে না।
আজ বুধবার সকালে শহরের বাজারে বড় বাজার গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর সবজি আমদানি হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখরিত সবজি বাজার। ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে এসেছে নতুন আলু ও পেঁয়াজ। আলু ২০-২৫, পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ফুলকপি ৫-৮, বাঁধাকপি ৫-৮, মূলা ৪-৬, সিম ১০-১৫, কাঁচা মরিচ ৩০-৪০, পেঁয়াজের কালি ৫-৬, খিরা-শশা ২০-২৫, বেগুন ২০-৩০, টমেটো ২০-৩০, গাজর ২৫-৩৫, পালন শাক ১ আটি ৫-৬, ছোলার শাক ৩০-৩৫ ও মিষ্টি কুমড়া ১৫-২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বড় বাজার ও কাঁচা বাজার আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলম হোসেন বলেন, গত ১৫ দিন ধরে সবজি আমদানি বেশি হচ্ছে। এ কারণে সব ধরনের সবজি দাম কমেছে। বাজারে আনা খরচ না উঠায় অনেক কৃষক সবজি তুলে মাঠে ফেলে রাখছে। এই রকম হলে আর কিছু দিন পর আবার সবজির দাম বেড়ে যাবে।
সদর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের কৃষক আল আমিন জানান, দেড় বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেছি। জমি লিজ, সার, সেচ দিয়ে এখন পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। বাঁধাকপির ফলন খুব ভালো হয়েছে। এখন বিক্রি করলে উৎপাদন খরচ উঠবে না। তাই কিছু দিন পর বাজারজাত করবো। এর আগে ২ বিঘা জমিতে ফুলকপি আবাদ করেছিলাম। ভালো ফলন না হওয়ায় লোকসান হয়েছে। একই গ্রামের কৃষক শফিকুল বলেন, আমি ২ বিঘা পেঁপে চাষ করেছি। সব সবজির দাম কমে যাওয়ায় পেঁপের দামও কমেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, জেলার ৪ উপজেলায় বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৭৩৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও মূলা চাষ হয়েছে ৪ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবজির ফলন ভালো হয়েছে। সেজন্য সবজির দাম কমেছে। এই অঞ্চলে সবজি সংরক্ষণের জন্য হিমাগার না থাকায় কৃষকরা এই সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দেশকন্ঠ/এআর