• মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১২:১০    ঢাকা সময়: ২২:১০

ভূমধ্যসাগরের মূল্যবান প্রবাল হুমকির মুখে

  • মতামত       
  • ২৩ জুন, ২০২৩       
  • ৮৫
  •       
  • ১০:৩২:৫০

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : ‌ইতালির দক্ষিণে নেপলস শহর কয়েক শতাব্দী ধরে মূল্যবান প্রবালের বাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত। ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির একেবারে পাদদেশে তোরে দেল গ্রেকো নামের ছোট শহর প্রবাল বাণিজ্যের বিশ্ব-রাজধানী হিসেবে পরিচিত। কোরালের গহনার চাহিদা আবার বেড়ে চলায় শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলো সন্তুষ্ট। আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ও অলংকারের ব্র্যান্ডগুলো তোরে দেল গ্রেকোয় ভিড় করছে। অবশেষে এমন এক দোকানদারের দেখা পাওয়া গেল, যিনি প্রবালের বেআইনি ব্যবসা নিয়ে কথা বলতে প্রস্তুত। মিকো কাতাল্দো বর্তমানে এক ‘গোল্ড রাশ’ উদ্দীপনা টের পাচ্ছেন, যেমনটা আগে কখনো দেখা যায়নি। ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষ এই সমস্যা সম্পর্কে আগের তুলনায় বেশি সচেতন হয়েছে বটে, কিন্তু চোরাচালানকারীদের দল ঠিকই ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করছে। মিকো বলেন, আমি খুব সাহস করে কিছু বলছি। তারা স্পেনে প্রবাল চালান করতে দেয়। তারপর সেগুলো ফ্রান্স ও ইতালি চলে যায়। তারা কোনও না কোনও উপায় ঠিকই খুঁজে পায়।
 
এবার ভূমধ্যসাগরের অন্য দিকে নজর দেওয়া যাক। তিউনিশিয়ার উত্তরে ভূমধ্যসাগর উপকূলে তাবার্কা নামের জেলেদের এক গ্রাম অবস্থিত। কয়েক শতাব্দী ধরে সেখানে মূল্যবান কোরালকে ঘিরেই কর্মকাণ্ড চলছে। তবে ইতালির মতো সেখানে ‘গোল্ড রাশ’-এর মতো উন্মাদনা চোখে পড়ছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, দশটির মধ্যে নয়টি দোকানই বন্ধ হয়ে গেছে। যথেষ্ট প্রবালের অভাবে এমন দূরাবস্থা। সালাহ বজাউয়ি নিজে অনেককাল ডুবুরি হিসেবে প্রবাল সংগ্রহ করেছেন। তবে আইনি পথেই তিনি সেই কাজ করেছেন বলে জানালেন। এখন বয়স বেড়ে গেছে। তবে তিনি নিজের নৌকা অন্য ডুবুরিদের ব্যবহার করতে দেন। তিনি মনে করেন, বেআইনি মাছ ধরা এত বেড়ে গেছে, যে আমরা বিশাল সমস্যার মুখে পড়েছি। কারণ এর ফলে আমাদের প্রবালের ভাণ্ডার ও সমুদ্রের তলদেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কোনো একটি টিলার উপর দশ কিলো প্রবাল বেড়ে উঠলে যন্ত্র দিয়ে বেআইনিভাবে মাছ ধরার কারণে তার আশেপাশের জৈব পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। তখন নয় কিলো কোরাল হারিয়ে যায়, মাত্র এক কিলো উত্তোলন করা হয়। তারপর সেই পণ্য তিউনিশিয়ার মাধ্যমে গোটা বিশ্বে চালান করা হয়। বিশেষ করে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল ও এশিয়ায় চাহিদা বেড়েই চলেছে। একবার গন্তব্যে পৌঁছে গেলে প্রবালের প্রকৃত উৎস নির্ণয় করা অত্যন্ত কঠিন। উপকূলরক্ষী বাহিনী তাবার্কার ছোট বন্দরে নিয়মিত নৌকার তল্লাসি নেয়।
 
আলজেরিয়া, তিউনিশিয়া ও স্পেনের এক যৌথ নেটওয়ার্ক তিন বছর আগে জানতে পেরেছে, যে কোটি কোটি ইউরো মূল্যের কোরাল গোটা বিশ্বে চোরাচালান করা হয়েছে। তিউনিশিয়ার উপকূলরক্ষী বাহিনীর আদাম বেন আরাফা বলেন, তারা প্রায়ই বিজার্টে ও রাজধানী তিউনিসে পণ্য জমা রাখে এবং রপ্তানির চেষ্টা করে। ইতালিই হলো ক্লাসিক রুট। সেখান থেকে প্রবাল প্রায়ই ভারত পর্যন্ত পাঠানো হয়। মূল্যবান প্রবালকে ঘিরে সব সমস্যার যে একটাই উৎস, শিল্পের কারিগর হিসেবে মুরাদের কাছে তা একেবারে স্পষ্ট। আর তা হলো মানুষ ও তার মুনাফার লোভ। তিনি বলেন, অন্য অনেক প্রজাতির মতো প্রবালও লুপ্তপ্রায় জীব। কারণ আমরা কোনো সময় দিতে প্রস্তুত নই। বেড়ে ওঠা, বিকাশের সময় আমরা দেই না। আমরা সমুদ্রের সম্পদের আর যথাযথ মর্যাদা দিচ্ছি না। আফ্রিকার উত্তরাঞ্চলের ব্যবসায়ীদের সমস্যা নিয়ে তোরে দেল গ্রেকোয় কেউ মাথা ঘামায় বলে মনে হচ্ছে না। তবে একটা উপলব্ধি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে। ব্যবসার কালো দিকের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে কোনো এক সময় প্রবাল আসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।
দেশকন্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।