• মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ১৪:১০    ঢাকা সময়: ০০:১০

মূল্যস্ফীতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় হ্রাসে এই বাজেট ভূমিকা রাখবে : ড. মো: সেলিম উদ্দিন

  • মতামত       
  • ১১ জুন, ২০২৪       
  • ৭২
  •       
  • A PHP Error was encountered

    Severity: Notice

    Message: Undefined offset: 1

    Filename: public/news_details.php

    Line Number: 60

    Backtrace:

    File: /home/teamdjango/public_html/deshkontho.com/application/views/public/news_details.php
    Line: 60
    Function: _error_handler

    File: /home/teamdjango/public_html/deshkontho.com/application/controllers/Public_view.php
    Line: 72
    Function: view

    File: /home/teamdjango/public_html/deshkontho.com/index.php
    Line: 315
    Function: require_once

প্রফেসর ড. মো: সেলিম উদ্দিন,দেশকন্ঠ অনলাইন : অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে  হ্রাসের লক্ষ্য রেখে ৬.৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৭,৯৭,০০০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষিত হয়েছে। যেটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭,৬১,৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট থেকে ৩৫,২১৫ কোটি টাকা (৪.৬২ শতাংশ) বেশি এবং  ২০২৩-২৪ সংশোধিত বাজেট ৭,১৪,৪১৮ কোটি টাকা থেকে ৮২,৫৮২ কোটি টাকা (১১.৫৬ শতাংশ) বেশি। মোট প্রস্তাবিত বাজেটে পরিচালন আবর্তন ব্যয় ৪,৬৮,৯৮৩ কোটি টাকা যেটি ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে ৩২,৭৩৬ কোটি টাকা (৭.৫ শতাংশ) বৃদ্ধি করে প্রাক্কলন করা হয়েছে। অন্যদিকে মোট উন্নয়ন ব্যয় প্রাক্কলিত হয়েছে ২,৮১,৪৫৩ কোটি টাকা, যেটি ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে মাত্র ৩,৮৭১কোটি টাকা (১.৪০ শতাংশ) বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে, পরিচালন আবর্তন ব্যয় উন্নয়ন ব্যয় থেকে আনুপাতিক শতাংশে ও টাকার অংকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

মোট প্রস্তাবিত রাজস্ব আয় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট থেকে ৪১,০০০ কোটি টাকা (৮.০২ শতাংশ) এবং সংশোধিত বাজেট থেকে ৬২,৯৯৯ কোটি টাকা (১৩.১৮ শতাংশ)  বৃদ্ধি করে মোট ৫,৪১,০০০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত করা হয়েছে। মোট রাজস্ব আয়ের মধ্যে এনবিআর কর্তৃক আদায়কৃত রাজস্ব ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে ৫০,০০০ কোটি টাকা (১১.৬৩ শতাংশ)  এবং সংশোধিত বাজেট থেকে ৬৯,৯৯৯ কোটি টাকা (১৭.০৭ শতাংশ) বৃদ্ধি করে ৪,৮০,০০০ কোটি টাকায় প্রাক্কলন করা হয়েছে। অন্যদিকে এনবিআর বহির্ভূত কর ও কর ব্যতীত প্রাপ্তি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট থেকে যথাক্রমে ৫,০০০ ও ৪,০০০ কোটি টাকায় হ্রাস করে ১৫,০০০ ও ৪৬,০০০ কোটি টাকায় প্রাক্কলিত হয়েছে, যেটি কিনা সংশোধিত বাজেট থেকে ৪,০০০ ও ৩,০০০ কোটি টাকা কম। এনবিআর বহির্ভূত কর ও কর ব্যতীত প্রাপ্তিগুলো ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ও সংশোধিত বাজেট বিশ্লেষণ করলে প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাক্কলন বৃদ্ধি যুক্তিযুক্ত যেটি বাজেট ঘাটতি হ্রাসে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে মোট ঘাটতি ছিল ২,৬১,৭৮৫ কোটি টাকা যেটি ৫,৭৮৫ কোটি টাকা (২.২০ শতাংশ) হ্রাস হয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২,৫৬,০০০ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। বাজেটে ঘাটতি জিডিপি শতাংশে চলতি অর্থবছরের ৫.২ শতাংশ থেকে ৪.৬ শতাংশে প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা এই বাজেটের ইতিবাচক দিক। বাজেট ঘাটতি ২,৫৬,০০০ কোটি টাকার মধ্যে বহি: উৎস হতে ৯৫,১০০ কোটি টাকা (৩৭.১৫ শতাংশ) এবং অভ্যন্তরীণ উৎস হতে ১,৬০,৯০০ কোটি টাকা (৬২.৭৫ শতাংশ) অর্থায়ন প্রাক্কলন করা হয়েছে।

বৈদেশিক উৎস হতে অর্থায়ন বর্তমান অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বাজেট ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১,০৬,৩৯০ কোটি টাকা অর্থায়ন হওয়ার কথা থাকলেও তা সংশোধন করে প্রায় ২৬,৫৯৭ কোটি টাকা (২৫.০০ শতাংশ) কমে সংশোধিত অর্থায়ন ধরা হয়। উল্লেখ্য যে, বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়ন জোরদার না হলে অভ্যন্তরীণ উৎস তথা ব্যাংকিং সেক্টরে বেসরকারি খাতে ঋণদান সংকোচিত হবে। কেননা অভ্যন্তরীণ উৎস বিশেষ করে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বাজেট অতিরিক্ত ঋণ নিলে বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাপ্রাপ্তসহ তারল্য সংকট  এবং মুদ্রাস্ফিতিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। সুতরাং রাজস্ব আহরণ এবং  বৈদেশিক উৎস হতে প্রাক্কলিত অর্থ যথাসময়ে সংগৃহিত না হলে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হবে। এজন্য রাজস্ব আহরণে এবং ঘাটতি অর্থায়নে বিশেষ করে বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়ণে সাফল্য দেখাতে না পারলে প্রস্তাবিত বাজেট পুরোপুরি বাস্তবায়ন কঠিন হবে। তাই প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন কলা-কৌশলসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা অতীতের যে কোন সময় থেকে বেশি নিতে হবে।

মোট বাজেট ব্যয় বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে যে, সামাজিক অবকাঠামো খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ২,০৬,৫৬৯ কোটি টাকা যা বরাদ্দের ২৫.৯২ শতাংশ, ভৌত অবকাঠামো খাতে ২,১৬,১১১ কোটি টাকা (মোট ব্যয়ের ২৭.১২ শতাংশ), সাধারণ সেবা খাতে ১,৬৮,৭০১ কোটি টাকা (মোট ব্যয়ের ২১.১৭ শতাংশ), সুদ পরিশোধ ১,১৩,৫০০ কোটি টাকা বা ১৪.২৪ শতাংশ এবং সরকারি বেসরকারি অংশীদ্বারিত্ব (চচচ),  আর্থিক সহায়তা, ভর্তুকি এবং বিনিয়োগসহ মোট ৮৩,৫৪৩ কোটি টাকা যা বরাদ্দের ১০.৪৮ শতাংশ এবং উক্ত বরাদ্দগুলো যথাক্রমে সংশোধিত বাজেট ২০২৩-২৪ চলতি অর্থ বছরের যথাক্রমে ১,৬৯,০৪৪ কোটি টাকা (২৩.৬৬ শতাংশ), ২,১৮,৩০৩ কোটি (৩০.৫৬ শতাংশ), ১,৪৯,৮৭৬ কোটি (২০.৯৮ শতাংশ), ১,০৫,৩০০ কোটি (১৪.৭৪ শতাংশ) এবং ৭০,৭১২ কোটি টাকা (৯.৯০ শতাংশ) পুন: প্রাক্কলন করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, সামাজিক অবকাঠামো খাতে বরাদ্দ মোট অর্থে ও শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে যা ইতিবাচক। ভৌত অবকাঠামোতে বরাদ্দ সামান্য হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে সাধারণ সেবায় বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ব্যক্তির পর্যায়ে করদাতার করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রেখে সর্বোচ্চ কর হার ২৫% থেকে  ৩০% করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিভিন্ন ধাপে সর্বাধিক ১৬,৫০,০০০ টাকার উপর করহার ছিল ২০% যেটি বর্তমানে ১৮,৫০,০০০ টাকা করে ৩৮,৫০,০০০ টাকার করহার ২৫% এবং অবশিষ্ট টাকার উপর ৩০% করহার নির্ধারণ করা হয়েছে । ব্যক্তির কাঠামো বিশ্লেষণে দেখা যায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ব্যক্তিগণকে স্বস্থি দিয়ে উচ্চবিত্তদের কর হার বাড়িয়ে আয় বৈষম্য হ্রাস করেছে যেটি ইতিবাচক।

কোম্পানির কর হারের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনগুলোকে স্বচ্ছতার পরিপালনের শর্ত সাপেক্ষের উপর কোম্পানির কর হারে  যৌক্তিক করা হয়েছে। এক ব্যক্তি কোম্পানির ক্ষেত্রে ২.৫০ শতাংশ করারোপ হ্রাস করা হয়েছে এবং সমবায় সমিতির ক্ষেত্রে কর হার ৫.০০ শতাংশ বৃদ্ধি করে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট হারে কর পরিশোধ সাপেক্ষে বিভিন্ন পরিসম্পদ, নগদ ও নগদে রুপান্তরযোগ্য কালো টাকা সাদা করার প্রক্রিয়া স্বাধীনত্তোর সময় থেকে এ পর্যন্ত আকৃষ্ট হয়নি। সুতরাং এই বিধানের সুযোগ গ্রহণ না করে আয় বা সম্পদ অপ্রদর্শিত থাকলে কি শাস্তি হবে, তার বিধান জরুরি।

চলমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে বর্তমান অর্থনীতিকে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, অর্থনীতে কার্যকর চাহিদা সৃষ্টি  ছাড়াও বেসরকারি খাতের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড গতিশীল রাখার স্বার্থে স্থানিয় শিল্পকে সুরক্ষা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম সহনীয় রাখার স্বার্থে এই বাজেটে- ১৯ টি পণ্যের সাপ্লিমেন্টরি ডিউটি প্রত্যাহার, ১৭২ টি পণ্যের সাপ্লিমেন্টরি ডিউটি হ্রাস এবং ৯১ টি পণ্যের রেগুলেটরি ডিউটি প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে যেটি জনজীবনে স্বস্থি দিবে ও জীবন যাত্রা ব্যয় হ্রাসসহ দেশীয় শিল্প সুরক্ষা পাবে।

এছাড়াও প্রত্যক্ষ কর, পরোক্ষ কর এবং সার্বিক কর ব্যবস্থায় পরিবর্তনের ফলে জনগণ মূল্যস্ফীতি ও জীবন যাত্রার ব্যয়ে স্বস্থি আসবে। জনগণকে মূল্যস্ফীতি থেকে রক্ষা করে জনকল্যাণের নিমিত্ত বাজেটের বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনিতে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জনকল্যাণের প্রকোষ্ঠ উদাহরন হলো খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি দ্বিগুন করার প্রস্তাবনা।

কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য এবং আর্টিফিশিয়ালি ইন্টেলিজেন্স তথা আইসিটি সেক্টরগুলোতে নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার এবং সুরক্ষার জন্য বাজেটে কর সুবিধা ও কর অব্যহতিসহ বিভিন্ন প্রণোদনা প্রস্তাব করা হয়েছে। যার ফলে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান আকৃষ্ট হবে। যেমন: কাজু বাদাম প্রক্রিয়াকরণ কারখানা, ঔষধ শিল্পের সুরক্ষা, পুন:মোড়কজাতকরণ শিল্প, তাঁত শিল্প, পলিস্টার ও ফ্যক্টশীট উৎপাদনকারী শিল্প, ফেরো এলয় উৎপাদনকারী শিল্প, এলআরপিসি ওয়ার উৎপাদনকারী শিল্প, সুইচ সকেট উৎপাদনকারী শিল্প, ইলেকট্রিক মোটর উৎপাদনকারী শিল্প, স্থানীয় সেলুলার ফোন উৎপাদনকারী শিল্প, মোটর সাইকেল উৎপাদনকারী শিল্প ইত্যাদি।

লেখক- প্রফেসর ড. মো: সেলিম উদ্দিন, এফসিএ, এফসিএমএ
প্রফেসর, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন ও ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি।
এবং প্রেসিডেন্ট, দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট এ্যাকাউন্টেস অব বাংলাদেশ-আইসিএমএবি।      
দেশকন্ঠ//

  মন্তব্য করুন
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।