দেশকন্ঠ অনলাইন : টানা বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে এ পর্যন্ত ৭ জন। নেত্রকোণা ও ময়মনসিংহের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পানিতে তলিয়ে গেছে বসতবাড়ী, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, মাছের খামার। এছাড়া অতিবৃষ্টিতে গাইবান্ধা, রাজবাড়ী ও সিরাজগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
শেরপুরের ঢলের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের পর এবার নকলা ও শেরপুর সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে নতুন করে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে।
বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় ২ লাখ মানুষ। ঢলের সাথে বৃষ্টি থাকায় বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
ভোগাই নদীর পানি নাকুগাঁও পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এসব এলাকার বসত ঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় এলাকাবাসী পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটছেন আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয়ের খোঁজে।
পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে ভাটি এলাকায়। বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে এ পর্যন্ত ৭ জন। এছাড়াও সুপেয় পানি, স্যালাইন ও শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে বন্যা কবলিত এলাকাসমূহে।
উজানের বাড়ীঘর থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে ওঠেছে। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বিধ্বস্ত হয়েছে শত শত ঘরবাড়ী, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, ডুবে গেছে ফসলি জমি। গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
সেনাবাহিনী, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ত্রাণ কার্যক্রম চালালেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
নেত্রকোনায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দুর্গাপুর ও ময়মনসিংহের ধোবাউড়া এলাকার নেতাই নদীর পাড় ভেঙে কংস, সুমেশ্বরী নদীর পানি বেড়েই চলেছে। পূর্বধলার জারিয়া পয়েন্টের নাটেরকোনায় বেরীবাঁধ ভেঙে পানি ডুকছে লোকালয়ে।
দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ও কাকৈরগড়া ইউনিয়ন এবং কলমাকান্দা, সদর ও পুর্বধলা উপজেলার বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে উঠতি রোপা আমনের ফসলি জমি। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
বন্যার্তদের সহযোগিতায় ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ১১৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। দুর্গত ১ হাজার পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, তেল শিশু খাদ্য ও গো খাদ্যের জন্য নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে, ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী উপজেলা হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির অপরিবর্তিত অবস্থায়। এর সাথে ফুলপুর উপজেলার আরও ৩টি ইউনিয়নে বন্যা দেখা গেছে। এখন পর্যন্ত শতাধিক গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পানিতে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, ফসলি জমি, মাছের খামার তলিয়ে গেছে।
কয়েকদিনের টানা বর্ষনে গাইবান্ধার বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে।
দেশকন্ঠ//