• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০৪:০০    ঢাকা সময়: ১৪:০০

আপনি আগুনে মাংস নিক্ষেপ করলেও আমি ব্যথা অনুভব করি: হান কাং

সিয়াম সারোয়ার জামিল, দেশকন্ঠ অনলাইন :  হান কাং দক্ষিণ কোরিয়ার লেখিকা। সাহিত্যে এ বছরের নোবেলজয়ী। লন্ডন থেকে প্রকাশিত  ‘গার্ডিয়ান’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন লেখকজীবন শুরুর কথা। সাক্ষাৎকারে দক্ষিণ কোরিয়ায় গণহত্যা, ছাত্রবিক্ষোভ, নিপীড়ন, গণতান্ত্রিক কাঠামোতে প্রবেশসহ উঠে এসেছে আরো কিছু বিষয়। সাক্ষাৎকারটি ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য সাক্ষাৎকারটি প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী প্রকাশিত হয়নি, বরং যেভাবে ছাপা হয়েছে, অনুবাদে সেই একই ধারা অনুসরণ করা হয়েছে। অনুবাদ করেছেন সিয়াম সারোয়ার জামিল।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ নামে একটি ছোট্ট উপন্যাস বেশ শোরগোল ফেলে দেয়। এটি অনেকটা দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে থাকা এক নারীর গল্প, যিনি মাংস খেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। গল্প এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়, সেই মাংস খাওয়াকে কেন্দ্র করে বন্ধু, পরিবার-পরিজনকেও বিপদে ফেলেছেন, ঘটিয়েছেন কেলেঙ্কারি! ‘এটি যেমন আকর্ষণীয়, রোমহর্ষক, উত্তেজক, তেমনই হিংসাত্মক ঘটনায় ভরা। আছে শক্তিশালী চিত্র, চমকপ্রদ রঙ এবং কৌতূহল তৈরি করার মতো শক্ত বন্ধন।’

‘গার্ডিয়ানে’ বইটির পাঠ-সমালোচনায় এমনটাই লিখেছেন সমালোচক।  

বইটির লেখক হান কাং। কবি, ছোটগল্প লেখক এবং ঔপন্যাসিক; যাকে বছরের পর বছর ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে লুকিয়ে রাখা ‘রহস্য’ বলে মনে করা হয়। তার তিন খণ্ডের সেই উপাখ্যান অনুবাদ কথাসাহিত্যকেও সমৃদ্ধ করেছে দারুণভাবে! উপন্যাসটি সর্বজনীনভাবে সব সত্য তুলে এনেছে, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো। এটা বাড়ির কাছের মানুষের কাছে যেমন আপন ছিল, রহস্যজনক ছিল অন্যদের কাছেও।

তিনি আরেকটি উপন্যাস নিয়ে ফিরেছিলেন, যার গল্প অনেক বেশি রোমহর্ষক এবং উত্তেজক; এটি বড় আকারের আলোচনার জন্ম দেয়। দক্ষিণ কোরিয়ার শহর গোয়াংজুতে ১৯৮০ সালে ছাত্র বিক্ষোভ হয়। অভিযোগ আছে, ওই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। যে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে তার ‘হিউম্যান এক্টসের’ গল্প এগিয়ে যায়। উপন্যাসটিতে ওই সময়ের নানা গল্প অসাধারণভাবে তুলে আনেন তিনি। এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয় বিশদভাবে তুলে আনেন; দেখান মুন্সিয়ানা। নৃশংসতার ঘটনাগুলো পড়লে মনে হবে একেবারে জীবন্ত। লেখক নিজে এই ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষী, যিনি একজন মা, যিনি যুক্তরাজ্যে একটা অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল জীবনযাপন করছেন, একটি প্রশংসা করার মতো পরিচিত গড়ে উঠছে।

সাইকোথেরাপিস্ট সুসি অরবাচ ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ উপন্যাস সম্পর্কে বলেছেন, ‘যেন কষ্ট, শরীর কিংবা মানুষ হওয়ার সংগ্রামে আঘাত, নিষ্ঠুরতা বা সংকটের মুখে থেকেও নিজের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করার অনেক অদ্ভুত উপায়- সব কিছুর একটু অদ্ভুত সমন্বয়।’ মানবাধিকার আইনজীবী ফিলিপ স্যান্ডস, যার কাছে হিউম্যান অ্যাক্টস উপন্যাসটি ‘একটি প্রচণ্ড আকর্ষণীয় এবং জাদুকরী অর্জন- নৃশংসতার আয়নায় দেখা অন্যায়ের সর্বজনীন উত্তরাধিকারের একটি গীতিময় প্রতিফলন।’

হান ক্যারিশম্যাটিক নারী, যিনি ভীষণ চিন্তাশীল। যেটা তার লেখার পরতে পরতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যিনি ‘হিউম্যান এক্টস’ বইটিতে লিখেছেন- কেন তিনি গল্পটি বলতে বাধ্য হয়েছেন। ‘গোয়াংজু বিদ্রোহের সময় আমার বয়স ছিল নয় বছর’, এভাবেই শুরু করেন তিনি। গোয়াংজু, দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ দিকের একটি শহর, গণহত্যার চার মাস আগে পর্যন্ত তার বাড়ি ছিল সেখানেই। কিন্তু তার বাবার স্বপ্ন ছিল পূর্ণ সময়ের লেখক হওয়া। এজন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন শিক্ষকতার চাকরি। পরে রাজধানী সিউলে স্থানান্তরিত হন।

তিনি এত কিছু জানতেন না।  গণহত্যার ঘটনাটি প্রথম আবিষ্কার করেন যখন তার বয়স ১২ বছর; পারিবারিক বইয়ের আলমারির উপরের শেলফে লুকানো ছিল একটি ছবির অ্যালবাম। বিদেশী সাংবাদিকদের তোলা ছবিগুলো। সেটা দেয়ালের দিকে স্তূপ করে রাখা হয়েছিল। যেন হান এবং তার ভাই খুঁজে না পায়। যখন সেটি পেলেন, ছবিগুলোতে তাকালেন, বিস্ময়ে আটকে গেলেন। এত দিন যেটা সাধারণ মানুষের মাঝে ছিল, সেটা তার মাঝেও সঞ্চারিত হলো। ‘আমার সেই মুহূর্তটি মনে আছে, যখন আমার দৃষ্টি পড়লো একটি অস্বাভাবিক ছবির দিকে। ওই ছবিতে একজন যুবতীর বিকৃত মুখের ছবি ছিল, তার মুখের অবয়ব বেয়নেট দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছিল।’ হান এভাবেই বলছিলেন। ‘ছবিটা দেখার পর আমার হৃদয়ের গভীরে প্রচণ্ড আঘাত লাগলো, মনে হলো নীরবে, নিঃশব্দে হৃদয়ের কিছু জিনিস ভেঙে গেল। এমন কিছু যা তখন পর্যন্ত আমি বুঝতেও পারিনি যে আমার ভেতরে ছিল।’

শৈশবের তিন দশক পরে, তিনি স্বীকার করেছেন যে, ছবিগুলো তাকে একটি অস্তিত্বের সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল, যা তার জীবনে প্রতিধ্বনিত হবে, তার লেখায় প্রতিফলিত হয়েছে। কতটা? হান জবাব দিয়েছেন নিজেই, ‘যদি আমি ওই সময় ২০ বছর বয়সী হতাম, যখন আমি তাদের দেখতাম, হয়তো আমি সামরিক শাসনের ওপর আমার ঘৃণা কেন্দ্রীভূত করতে পারতাম, কিন্তু আমি খুব ছোট ছিলাম এবং আমি অনুভব করেছি যে, মানুষ আসলে ভীতিকর এবং আমিও তাদের একজন।’

দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে এটা একটি পর্ব যা কমই উল্লেখ করা হয়। হান অপরাধবোধে ভুগতেন। এটা এক ধরনের অমীমাংসিত অধ্যায় হয়ে গিয়েছিল তার জীবনে, যা তিনি তার পরিবারের বাকিদের সঙ্গে ভাগ করে আসছিলেন। তার ভাষায়, ‘অমিমাংসিত ধাঁধা: কীভাবে মানুষ এত হিংস্র এবং নিষ্ঠুর হতে পারে, এবং কীভাবে করতে পারে? মানুষ এই ধরনের চরম সহিংসতা প্রতিরোধে কী করতে পারে?’

এটা নিয়ে তিনি মানুষের সঙ্গে কথা না বলে, তাদের কাছ থেকে উত্তর খোঁজার পরিবর্তে তিনি বইয়ের দিকে ঝুঁকেছেন। ‘কৈশর বয়সে আমি সাধারণ প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলাম, কেন এত কষ্ট, কেন এত মৃত্যু? আমি ভেবেছিলাম, বইগুলোতে উত্তর রয়েছে। কিন্তু কৌতূহলবশত আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, সেগুলোতেও কেবল প্রশ্ন রয়েছে। বইগুলোর লেখকরাও আমাদের মতোই দুর্বল ছিল। উত্তর দেয়নি।’

বয়স বেড়ে যখন ১৪ বছর, তখন তিনি নিজেই বুঝে গেলেন, তিনি আসলে লেখক হতে চান। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন, যেখানে তিনি সমসাময়িক কোরিয়ান সাহিত্য অধ্যায়ন করেন। ততক্ষণে, গণহত্যার জন্য দায়ী স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল এবং দক্ষিণ কোরিয়া গণতন্ত্রিক কাঠামোতে প্রবেশ করেছিল। হান বলেন, ‘আমি মুক্ত প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য খুব ভাগ্যবান: এমন একটি প্রজন্ম যাকে সামাজিক সমস্যাগুলোতে ওভাবে মুখোমুখি হতে হয়নি।’

১৯৯৩ সালে সাহিত্যে আত্মপ্রকাশ করেন হান। প্রথমে কবিতা লিখেছেন এবং তারপর ছোটগল্প লিখেছেন; যা তার মধ্যে থাকা ঘটনাগুলোকে নাড়া দিচ্ছিল গভীরভাবে। পুরস্কার এবং প্রশংসাগুলোও দ্রুত পৌঁছাচ্ছিল, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে এর মধ্য দিয়ে তিনি একটি সংগ্রাম করেছিলেন। তার বয়স যখন বিশের কোঠায় তখন তিনি বৌদ্ধধর্মে একটি উত্তর খুঁজছিলেন। ত্রিশের কোঠায় গিয়ে জটিল রোগে আক্রান্ত হলেন। অসুস্থ হয়ে পড়লেন। শরীরের সংযোগগুলোতে রোগাক্রান্ত হয়ে ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন। হাতগুলো এতটাই বেদনাদায়ক ছিল যে ব্যবহার করতে পারেননি। তিন বছর ধরে তিনি কেবল তার কীবোর্ডে টোকা দিয়ে লিখতে পেরেছিলেন। তিনি বলছিলেন সে সময়ের কথা, ‘অধিকাংশ মানুষ যখন অসুস্থ হয় তখন ধর্মের দিকে ফিরে যায়; কিন্তু আমার ক্ষেত্রে এটা ছিল উল্টো। আমিও আরও লিখছিলাম।’

‘দ্য ভেজিটেরিয়ানে’ এই অভিজ্ঞতার ছায়া দেখা কঠিন নয়। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেছেন তিনি। যেখানে একজন তরুণী, ইয়েং-হাই, তার শরীর পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে চান, যেন তার পিতা, তার স্বামীর মধ্যে সহিংসতাকে মুছে ফেলার প্রয়াস থাকে। একটি বডি-পেইন্টিংও করেছিলেন, তার বোনের স্বামী, যিনি শিল্পিও বটে, তাকে দিয়ে। ‘জয়েন্টের’ ব্যথা কমে যাওয়ার পর হান বুঝতে পেরেছিলেন যে তাকে নিজের ভিতরে আরও গভীরভাবে তাকাতে হবে এবং সেই ভয়াবহতার দিকে, যা নিয়ে কেউ কথা বলতে চায় না। ‘অবশেষে আমি এই সময় আবিষ্কার করেছি যা আমি আমার শৈশবে পরোক্ষভাবে সম্মুখীন হয়েছিলাম। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, আমি এই অভিজ্ঞতায় প্রবেশ না করলে আর এগোতে পারব না।’

তিনি গণহত্যা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তাকে ২০ শতকের ইতিহাসের কিছু অন্ধকার পর্বে নিয়ে গেছে সেই গবেষণা। শুধু কোরিয়ায় নয়, বসনিয়া এবং আউশভিৎজে নিয়েও গভীরে ঢোকেন তিনি। ‘আমি আরও বেশি করে ভয় পেয়েছিলাম যে আমি মানবজাতির ওপর হয়তো আস্থা হারিয়ে ফেলবো।’

তিনি হাল ছেড়ে দেওয়ার পর্যায়ে ছিলেন অনেকটা। তবে যখন তিনি এক মিলিশিয়ার ডায়েরি আবিষ্কার করেন; যিনি প্রাদেশিক সরকারি অফিসগুলো দখল করেছিলেন; যেখানে গণহত্যা হয়েছিল, যখন সেনারা একটু পিছিয়ে গিয়েছিল। ‘ডায়েরিটা পড়ে বুঝেছিলাম, কেন আমার বিবেক বলে এমন একটি জিনিস আছে যা আমাকে প্রশ্ন করে? এবং সেটাই আমাকে উড়িয়ে দিয়েছিল। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি আমার শৈশবের ধাঁধাটি ভুলে গেছি। হিংস্রতা থেকে শুরু করলেও ডায়েরিটা আমাকে মানবিক মর্যাদার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ দিয়েছে।’

'হিউম্যান এক্টস' উপন্যাসের কেন্দ্রে থাকা ছেলেটিকে তিনি শৈশবে আবিষ্কৃত অ্যালবামের একটি ছবি থেকে তুলে নিয়েছিলেন। তিনি কল্পনা করেছিলেন যে, শিশুটি তার বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। একটি মর্গে পড়ে থাকা মৃতদেহ সরানোর কাজে সাহায্য করছিল। এরপর সে প্রতিবাদকারীদের ভিড়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। যদিও তার মা তাকে বাড়িতে আসার জন্য বারবার ডাকছিল। তিনিও একজন ‘নিখোঁজ’ যাদের ভাগ্য অজানা ছিল। যাদের ভবিষ্যৎ সহজভাবে বলা যায় না।

যে বন্ধু তাকে খুঁজতে বের হয় তারও মৃত্যু হয়। সেসব লিখতে গিয়ে হান কষ্ট পেয়েছিলেন ভীষণ। ‘এই ছেলেগুলোর জন্য লেখা আমার জন্য একটি সংগ্রাম ছিল’, হান বলছিলেন, ‘আমি এমন একজন ব্যক্তি যে কিনা, আপনি যদি আগুনে মাংসও নিক্ষেপ করেন, তাতেও ব্যথা অনুভব করি। তারা সাক্ষ্য দিতে পারেনি কারণ তারা মারা গিয়েছিল, তাই আমি তাদের কাছে আমার নিজের শরীর এবং কণ্ঠস্বর ধার দিতে চেয়েছিলাম। আমি জানি না কেন আমাকে এটি করতে হয়েছিল, তবে আমি করেছি।’ এক বছর ধরে, তিনি প্রতিদিন তার ওয়ার্করুমে যেতেন, প্রায়শই নিজেকে চালিয়ে যেতে অক্ষম খুঁজে পাওয়ার আগে প্রায় তিন বা চার লাইনের মতো লিখতে লড়াই করতেন।

হানের এই চিন্তা, পর্যবেক্ষণ যেমন ফরেনসিক, তিনি একজন আনুষ্ঠানিক উদ্ভাবকও, যার কাজ তার লেখার জ্ঞান এবং সঙ্গীত ও শিল্পের প্রতি তার আগ্রহের উপর আকর্ষণ বাড়িয়ে তোলে। অনুবাদক ডেবোরা স্মিথ দ্রুত তাকে চিনতে পেরেছিলেন। স্মিথ সম্প্রতি কোরিয়ান ভাষা শিখতে শুরু করেন যখন তিনি হানের কাজ আবিষ্কার করেন। ‘যে জিনিসটি আমাকে এতে আগ্রহী করেছিল তা হান কাংয়ের বই থেকে আপনি সত্যিই পেতে পারেন; কোরিয়াতে তারা যে উপন্যাস লিখেছেন, তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের উপন্যাসগুলোর মতো নয়। কারণ কোরিয়াতে সবাই আনুষ্ঠানিকভাবে ছোটগল্প লিখে আত্মপ্রকাশ করে৷ এটা অনেকটা এমন যে, অনেকগুলো প্রকাশিত গল্প মিলে একটা উপন্যাস। এই ‘সংযুক্ত উপন্যাস’ কোরিয়ানদের সাহিত্যে উপন্যাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’

‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ ছিল এমনই একটি সংযুক্ত উপন্যাস, যা মূলত তিনটি পৃথক উপন্যাস হিসেবে লেখা। কিন্তু ‘হিউম্যান এক্টস’ এই সাহিত্যিক ঐতিহ্যকেও প্রতিফলিত করে, যা ‘স্বতন্ত্র’ কাঠামো দ্বারা গঠিত। স্মিথের মতে, হানের লেখাটি স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান এবং আকর্ষণীয়, খণ্ডিত গুণ রয়েছে যা ক্যাপচার করার জন্য তিনি এবং স্মিথ একসঙ্গে কাজ করেছিলেন। হান এ বিষয়ে খুবই যত্নশীল ছিলেন।

‘বাক্য লেখার আমার পদ্ধতিটি আমার জীবনধারার সঙ্গে মিলে যায়। এটি খুব নিয়ন্ত্রিত,’ হান বলেন। যিনি তার কিশোর ছেলের সঙ্গে সিউলের বাইরে একটি শহরে থাকেন। স্মিথের ভাষায়, ‘হানের কাজের বড় শক্তি হলো যে, তিনি যা লেখেন, সেটা সর্বজনীন। ঐতিহাসিকভাবে, এটি কোরিয়ায় বিরল।’

যদি ‘হিউম্যান এক্টস’ হান কাংকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাখে, তবে এটি তাকে দক্ষিণ কোরিয়ার বিবেকের জন্য একটি বাহক করে তুলেছে। ‘উপন্যাসটি বের হওয়ার পর, আমি চার মাসের জন্য পোল্যান্ডে গিয়েছিলাম। যখন আমি বাড়িতে আসি তখনও এটি বেস্টসেলার তালিকায় ছিল।’  
দেশকন্ঠ//

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।